Home / সারাদেশ / আতঙ্কের জনপদ : ১১ মাসে ৫৩ খুন
Dead-Khun-Death
প্রতীকী ছবি

আতঙ্কের জনপদ : ১১ মাসে ৫৩ খুন

চলতি বছরের ১১ মাসে সামাজিক বিরোধ, বিএসএফ’র গুলি ও কথিত বন্দুকযুদ্ধসহ বিভিন্ন ভাবে ৫৩ জন খুন হয়েছেন। প্রায় অর্ধেক নিহত হয়েছে কথিত বন্দুকযুদ্ধে। এর মধ্যে শিশু ও মহিলার ৬ টি লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

ঝিনাইদহ পুুলিশের তথ্য মতে কিছু লাশ উদ্ধারের পর আত্মহত্যার আলামত মিলেছে।

অন্যদিকে ঝিনাইদহের ৭ ব্যক্তির লাশ মিলেছে অন্য জেলায়। পুলিশ পরিচয়ে এদের উঠিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় বলে তাদের পরিবারের অভিযোগ। কোটচাঁদপুর উপজেলায় ১১ মাসে কোন হত্যাকান্ডের তথ্য না থাকলেও গত ৪ এপ্রিল সোলাইমান হোসেন নামে এক পুলিশ কনস্টেবল থানায় ডিউটি করা অবস্থায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন। তার মৃত্যুটি আজো রহস্য জনক রয়ে গেছে।

পুলিশ সুপারের অফিস ও বিভিন্ন সূত্রে এ সব খুনের তথ্য মিলেছে। প্রদত্ত তথ্য মোতাবেক ঝিনাইদহের ৬ উপজেলার মধ্যে ঝিনাইদহ সদরে ১১ মাসে ১৯ জন খুন হয়েছে। এছাড়া শৈলকুপায় ১২ জন, মহেশপুরে ৮ জন, কালীগঞ্জে ৬ জন ও হরিণাকুন্ড উপজেলায় ৮ জন নিহত হয়েছেন। শৈলকুপার কবিরপুর গ্রামে একসাথে তিন শিশু সাফিন, আমিন ও মাহিনকে নির্মম ভাবে পুড়িয়ে হত্যা করে তার চাচা। বছর শুরুর প্রথমে ঝিনাইদহ জেলায় এটি একটি আলোচিত হত্যাকান্ড।

এরপর দেশ বিদেশে আলোচিত হয় সদর উপজেলার কালুহাটী গ্রামের বেলেখালে খৃষ্টান হোমিও চিকিৎসক সমির খাজা, কালীগঞ্জে শিয়া মতবাদের হোমিও চিকিৎসক আব্দুর রাজ্জাক, সদর উপজেলার করোতিপাড়া গ্রামে মন্দিরের পুরোহিত আনন্দ গোপাল ও উত্তর কাস্টসাগরা গ্রামে সেবায়েত শ্যামানন্দ দাসকে হত্যার ঘটনা। এ সব হত্যার দায় স্বীকার করে মধ্যপ্রাচ্য ভিত্তিক জঙ্গী সংগঠন কথিত আইএস বিবৃতি দেয়।

ঝিনাইদহ পুলিশ, র‌্যাব ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা দক্ষতার সাথে এ সব হত্যার মোটিভ ও ক্লু উদ্ধার করতে সমর্থ হয়। গ্রেফতার হয় আসামিরা। পুলিশ আইএস এর দায় শুরু থেকেই প্রত্যাখান করে আসে। দেশ বিদেশে আলোচিত এ সব হত্যাকান্ডে পুলিশ প্রশাসনকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলে। সেবায়েত ও পুরোহিত হত্যার রহস্য উদ্ধারে ঝিনাইদহ পুলিশ অভিযান শুরু করে ব্যাপক সফলতা অর্জন করে।

এদিকে ভারতীয় দুতাবাসের কর্মকর্তাসহ রাজনৈতিক ও বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ মন্দিরের পুরোহিত ও সেবায়েত হত্যার নিন্দা জানিয়ে ঝিনাইদহ সফর করেন।

সরকারের একাধিক মন্ত্রী ও পুলিশের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা ঝিনাইদহে জঙ্গী বিরোধী সমাবেশ করেন। অল্প দিনের মধ্যে খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি এসএম মনিরুজ্জামান ও সাবেক পুলিশ সুপার আলতাফ হোসেন এ সব আলোচিত হত্যার সাখে জামায়াত শিবিরের সদস্যদের সম্পৃক্ততার কথা জানান।

সে সময় আলোচিত সব হত্যার ক্লু উদ্ধার ও আসামিদের গ্রেফতার করে পুলিশ দ্রুত সময়ে ঘাতকদের মোটিভ জানতে পারে।

ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজহাবার আলী শেখ জানান, ‘ঝিনাইদহ জেলা এখন শান্ত। সামাজিক বিরোধের জের ধরে ২/১টি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া জেলায় শান্তিশৃংখলার পরিবেশ বজায় রয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতিও ভাল। পুলিশ নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে। এতে দাগী আসামি ছাড়াও ওয়ারেন্টভূক্ত আসামিরা গ্রেফতার হচ্ছে।’

ঝিনাইদহ করেসপন্ডেন্ট : আপডেট, বাংলাদেশ সময় ১:০০ এএম, ২ ডিসেম্বর ২০১৬, শুক্রবার
ডিএইচ

Leave a Reply