Sunday, July 05, 2015 01:09:46 AM
চাঁদপুর টাইমস ডেস্ক:
মেয়েটির বয়স মাত্র ৬। ছোট ছোট খেলনা হাড়ি-কড়াই, পুতুল দিয়ে ঘরকন্যা খেলে। পুরুষ পুতুলটির সঙ্গে মেয়ে পুতুলটির বিয়ে দেয়। বালু দিয়ে বিরিয়ানি রান্না করে কল্পিত গ্রামের মানুষকে খাওয়ায়। বাস্তব জীবনে সংসার কী জিনিস তা বোঝার মতো বুদ্ধি তার হয়নি এখনও। অথচ, বাল্যবিবাহ আর কুসংস্কারের জাঁতাকলে পড়ে এই শিশুটির গলায় উঠলো বিয়ের মাল্য, হাতে পড়লো ভারি চাবির গোছা। আর বাবার বয়সী একজন মানুষের গলায় পরিয়ে দিতে হলো বিয়ের মালা। আশ্চর্যের বিষয়, ৬ বছরের এই মেয়েটির বরের বয়স ৩৫ বছর।
অবিশ্বাস্য ঘটনাটি ভারতের রাজস্থানের। ২৩ জুন চিতোরগড়ের গাংরা গ্রামের এক মন্দিরে গোপনে রতন লাল জাঠের (৩৫) সঙ্গে বিয়ে দেওয়া হয় শিশুটিকে।
রতন লাল গাংরা গ্রাম কাউন্সিলের নির্বাচিত একজন সদস্য। এক বিবাহিত নারীর সঙ্গে রতন লালের সম্পর্ক ছিল। তাই বিয়েতে ‘নাটা প্রথা’ (একজন পুরুষ বিবাহিত কোনো নারীর সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে পারবেন যতদিন তিনি তার ভরনপোষণ দেন) সম্পন্ন করা হয়।
অবিবাহিত রতন লাল গোপনে সব রীতি-নীতি মেনে বিবাহের পিঁড়িতে বসেন। তিনিও কনের পরিবারের কাছ থেকে বিরাট অংকের যৌতুক নিয়েছেন বলে খবরে বলা হয়েছে। যদিও শিশুটির পরিবার যৌতুকের অর্থের পরিমাণ প্রকাশ করেনি।
তবে শেষ রক্ষা হয়নি। পুলিশ ঠিকই খবর পেয়ে আটক করে রতনলালকে। সেই সঙ্গে নড়েচড়ে বসেছে স্থানীয় প্রশাসন। সদর মহকুমা শাসকের নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ ব্যাপারে দ্রুত প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কমিটিকে।
গাংরার পুলিশ পরিদর্শক জ্ঞানেন্দ্র সিং বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও সংবাদমাধ্যমে বিয়ের ছবি ছড়িয়ে পড়লে ঘটনা তদন্তে একটি দল পাঠানো হয়। পরে সত্যতা নিশ্চিত হলে রতন লালকে ‘বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ আইন-২০০৬’ এর অধীনে আটক করা হয়।
তিনি আরো জানান, বয়স বেড়ে যাওয়ায় পাত্রী খুঁজে পাচ্ছিলেন না রতন লাল। তাই নিজের সম্প্রদায়ের মধ্যেই ওই মেয়েটিকে বিয়ে করেছেন বলে জেরার মুখে তিনি স্বীকার করেন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে জানানো হয়, রাজস্থানের এই সম্প্রদায়ের মধ্যে এ ধরনের বিয়ের রেওয়াজ আছে। তাই প্রতিবেশিরাও বিয়ে বন্ধের চেষ্টা করেনি।
রাজস্থানের পুলিশ জানায়, বিয়েতে দালালি করেন ৫১ বছরের জামুনি ভাই। এ জন্য তিনি প্রায় তিন হাজার টাকা ঘুষ নেন। তাকে খুঁজছে পুলিশ। শুধু এ বিয়েই নয়, গাংরায় এমন আরো বাল্যবিয়ের ঘটকালিও তিনি করেছেন। তথ্যসূত্র : মিরর।
চাঁদপুর টাইমস : ডেস্ক/ডিএইচ/২০১৫।
চাঁদপুর টাইমস’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur