একটি মাত্র হুইল চেয়ারের আকুতি শিরোনামে শারিরীক প্রতিবন্ধী ভিক্ষা বৃত্তি করে খাওয়া অসহায় শামসুল গাজীকে নিয়ে গত ২০ সেপ্টেম্বর চাঁদপুর টাইমসে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
আর ওই প্রতিবেদনটি মালেশিয়া প্রবাসী মোঃ কামাল হোসেনের নজরে আসলে তিনি তার ছেলে কামরুল হাসানকে বিষয়টি অবগত করেন। এ বিষয়ে তিনি চাঁদপুর টাইমসের ওই প্রতিবেদনে কমেন্ট করে হুইল চেয়ারের মূল্যও জানতে চান। রিপ্লাইতে চাঁদপুর টাইমসও তাকে হুইল চেয়ারের সম্ভাব্য মূল্য জানায়।
পরে প্রবাসী কামাল হোসেন তার ছেলের মাধ্যমে ২৩ সেপ্টেম্বর সোমবার সন্ধ্যায় চাঁদপুর রেলওয়ে কোট স্টেশনে গিয়ে এ প্রতিবেদকের উপস্থিতিতে অসহায় শারিরীক প্রতিবন্ধী শামসুল গাজীর হাতে হুইল চেয়ারটি তুলে দেন। এই সামন্য একটি হুইল চেয়ার যেনো শাসুলের কাছে অসামান্য হয়ে উঠে। চেয়ারটি পেয়ে খুশিতে তার চোখে জল এসে যায়। অসহায় প্রতিবন্ধী শামসুল শুকরিয়া আদায় করে দু,হাত তুলে প্রান ভরে আল্লাহর কাছে দোয়া করেন।
প্রসঙ্গত, প্রতিদিনই চাঁদপুর শহরের রেলওয়ে কোট স্টেশনের প্লাটফর্মে শুয়ে বসে ভিক্ষা বৃত্তি করতে দেখা যায় শারিরীক প্রতিবন্ধী শামসুলকে । জীবনের প্রয়োজনে চলাফেরা করার জন্য তার একটি হুইল চেয়ারের জন্য বিভিন্ন দ্বার প্রান্তে ঘুরে, শারিরীক প্রতিবন্ধী হয়েও তার কপালে একটি হুইল চেয়ার জোটেনি।
শামসুল গাজী চাঁদপুর পৌর সভার ৩ নং ওয়ার্ডস্থ জাফরাবাদ গ্রামের মৃত সাদেক গাজীর ছেলে। তিন ভাইয়ের মধ্যে সে সবার ছোট। বড় দু,ভাই দিন মজুর হিসেবে কাজ করে কোন রকম সংসারের গ্লানি টানছেন। আর সামসুল গাজী প্রায় ১৫/২০ বছর ধরে ভিক্ষাবৃত্তি করে যা পান তা দিয়েই কোন রকম দিন পার করছেন।
সে জানায়, তার বয়স যখন ৩/৪ বছর তখন থেকেই সে টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত হয়ে দুটি পা পঙ্গু হয়ে যায়। পা দুটি অকেজো হয়ে যাওয়ায় সুন্দর ভাবে জীবন যাপন করার জন্য সে স্বাভাবিক ভাবে হাট চলা করতে পারেনি।
নিয়তীর নিষ্ঠুর খেলায় ভাগ্যকে মেনে নিয়ে দু, হাতে সেন্ডেল ঢুকিয়ে তার ওপরই ভর করে হাটতে হতো তাকে । আর পায়ের কাজ হাতে সেরেই প্রতিদিন জীবনের তাগিদে ভিক্ষা বৃত্তি করার জন্য বাহিরে বের হতেন ।
তার অসহায় জীবন যাপন নিয়ে চাঁদপুর টাইমসে সংবাদ প্রকাশের পর প্রবাসী কামাল হোসেন তাকে হুইল চেয়ারটি উপহার দেন।
প্রতিবেদক : কবির হোসেন মিজি, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯