মুসলমানদের পবিত্র উৎসব ঈদ। ঈদ মানে খুশি বা আনন্দ। প্রতিবছর আমাদের জন্যে দু’বার আসে দু’টো ঈদ। এর একটির নাম ঈদুল ফিতর ও অপরটির নাম ঈদুল আযহা। ধনী ও গরীব সকলের জন্যেই এ ঈদ আনন্দ নিয়ে আসে।
দীর্ঘ এক মাসের সংযম সাধনার রোজা পালনের পর সারা বিশ্বের মুসলমানরা ঈদ আনন্দে পরিবারের সকলের সাথে একত্রিত হন। ঈদুল ফিতরে সবচেয়ে বড় ইবাদত জামাতের সাথে দু’রাকাত ঈদের নামাজ এবং আর্থিক ইবাদত ফিতরা আদায় করা।
ঈদের আনন্দে নিম্নবিত্তদের শরিক করার জন্যে ফিতরা আদায় করা হয়। ঈদের নামাজ পড়ার আগে প্রত্যেক সামর্থ্যবান মুসলমান তার পরিবারের সব সদস্যের পক্ষে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ গরিবদের প্রদান করার নামই ফিতরা। এভাবে ধর্মীয় ইবাদতের সাথে ইহলৌকিক কাজের চমৎকার সমন্বয় সাধিত হয়েছে।একটি সমাজ বা রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক জীবনে এর ভূমিকা অপরিসীম।
সকালে ঈদের নামাজ আদায় করে মুসলিমরা। এরপর শুরু হয় ঈদের কোলাকুলি এবং হাত মেলানো ও মিষ্টিমুখ। ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা নতুন কাপড় পরে প্রজাপতির মতো এদিক-সেদিক ছোটাছুটি করার দৃশ্য চোখে পড়ার মত।
নতুন কাপড় পরিধান করা,উপহার বিনিময়,মজাদার খাবার পরিবেশন ইত্যাদি এর আনুষঙ্গিক উপাদান মুসলমানদের ঈদ উৎসবের মধ্যে ইবাদত,দান,খয়রাত, সামাজিকতা, আনন্দ-উৎসব ইত্যাদির অপূর্ব সমন্বয় ঘটেছে। বর্তমানে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে সমাজের সর্বস্তরের মানুষের এমনিতেই নাভিশ্বাস অবস্থ। বিশেষ করে গরীব অসহায়দের জন্যে খুবই কষ্টের বিষয় হয়ে দাঁড়ায় ।
মহানবী (সা.) বলেছেন,‘যে ব্যক্তি নিজে পেট পুরে খায়,অথচ তার প্রতিবেশি কেউ ক্ষুধায় কাতর থাকে সে তো আমার উম্মতের দলভুক্ত নয়।’ হাদিসটির অর্থ দাঁড়াচ্ছে একজন স্বচ্ছল ব্যক্তিকে তার প্রতিবেশির প্রয়োজন পূরণে এগিয়ে আসতে হবে। প্রতিবেশি সে মুসলিম বা অন্য ধর্মাবলম্বী যেই হোক না কেন। বলা হয়েছে প্রতিবেশির কথা। তার দুর্দশায়-দুর্দিনে পাশে দাঁড়ানোর কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন প্রিয় নবী (সা.)।
তাই ঈদকে কেন্দ্র করে সমাজের বিত্তশালী ও সামাজিক স্বেচ্ছাসেবামূলক সংস্থাগুলো নিজ নিজ এলাকার অসহায় গরিব-দুঃখীদের মধ্যে অর্থ, খাদ্য ও পোশাক বিতরণ করে গরীব ও অসহায়দের সাথে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারেন।
ঈদে এমনটি করা হলে ইবাদতের পাশাপশি সমগ্র সৃষ্টির প্রতি দয়ামায়া, অকৃত্রিম ভালোবাসা,সৌহার্দ্য,সম্প্রীতি ও সহানুভূতি বজায় রাখা সম্ভব। সমাজের সবাইকে হাশি-খুশিতে রাখাই তো বিত্তবান ও সমাজপতিদের নৈতিক দায়িত্ব ।
সর্বপরি ঈদ আমাদের সবারই জন্যেই নিয়ে আসুক অনাবিল আনন্দ-এ প্রত্যাশাই করছি ।
সম্পাদকীয়
১ জুন ২০১৯