কুমিল্লার তিতাস উপজেলায় এক যুবককে গণপিটুনি দিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে তিতাস উপজেলার দড়িকান্দি গ্রামে। নিহত যুবকের নাম শাহরিয়ার (৩৩)। সে ওই গ্রামের মৃত এসডু মিয়ার ছেলে।
শাহরিয়ার হত্যায় এলাকায় পপরষ্পর বিরোধী বক্তব্য পাওয়া গেছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার একটি সূত্র বলছে, ২৩ অক্টোবর বুধবার সে ওইগ্রামেরই সুমন মিয়া নামের এক ব্যক্তির গরুর খামারে গরু চুরি করতে যায়। তখন এলাকাবাসী তাকে হাতে নাতে ধরে গণপিটুনি দেয়। এক পর্যায়ে শাহরিয়ার এর অবস্থা বেগতিক দেখে এলাকাবাসী পুলিশে খবর দেয়।
সুত্রটি জানায়, এলাকায় বখাটে হিসেবে পরিচিত। চুরি, ছিনতাই, মাদক সেবন, ইভটিজিং ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপে এলাকাবাসী ছিল অতিষ্ঠ ছিলো। দীর্ঘদিনের পুঞ্জীভূত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ তার এই গণপিটুনিতে মৃত্যু।
অন্যদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেকটি সুত্র জানায়, দুপুর বেলায় খামার থেকে গরু চুরির বিষয়টি সাজানো। মূলত পূর্ব শত্রুতার জেরেই তাকে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
সুত্রটি জানায়, বুধবার দুপুরে গরু চুরির অভিযোগ এনে তাকে প্রথম দফায় গণপিটুনি দেয়া হয়। সে পালিয়ে আত্মরক্ষা করলেও গ্রামের দক্ষিণ পাড়ার এক বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নিলে সেখানেও চোর চোর বলে আরেক দফায় পিটিয়ে আহত করে গাছের সাথে বেঁধে রাখা হয়। মাগরিবের পরে আরেক দফায় পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়।
এসময় সে পানি পান করতে চাইলে পানি দেয়া হয়। পানি পানের পরপরই সে মারা যায় বলে সুত্রটি জানায়। পরে খবর পেয়ে রাত সাড়ে নয়টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে থেকে নিহতের মরদেহ থানায় নিয়ে যায়। এসময় নাদিম মাস্টার নামে একজনকে আটক করে পুলিশ।
সুত্র জানায়, নিহত শাহরিয়ার ওই গ্রামের মৃত এসডু মিয়ার ছেলে ও উপজেলা আনসার বিডিপি’র খন্ডকালিন সদস্য ছিলো।
এই ঘটনায় নিহতের বড় ভাই গোলাম মোস্তফা বাদী হয়ে ২৯ জনের নাম উল্লেখ করে এবং আরো অজ্ঞাত ১০/১২ জনকে আসামী করে তিতাস থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নিহতের দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন এবং ঘটনায় জড়িত দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলো, উপজেলা জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদক ও দড়িকান্দি গ্রামের মৃত আবদুল লতিফ মেম্বারের ছেলে মো. আদিলুজ্জামান মাস্টার (৪৬) ভিটিকান্দি গ্রামের মোজাম্মেল হোসেনের ছেলে শামিম হোসেন (২৬)।
এব্যাপারে তিতাস থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ মোহাম্মদ আহসানুল ইসলাম জানান, আমরা ঘটনাস্থল থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করেছি। ঘটনায় দুইজনকে গ্রেফতার করেছি। এলাকায় উত্তেজনা থাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এমন নেক্কারজনক ঘটনায় জড়িত কাউকে ছাড় দেয়া হবেনা।
জাহাঙ্গীর আলম ইমরুল, কুমিল্লা প্রতিনিধিঃঃ ২৪ অক্টোবর ১৯