চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের শেষের বৃষ্টিতে সিলেটের চা-বাগানগুলো আরো সজিব হয়ে উঠেছে। বৃষ্টি বৃহত্তর সিলেটের ১২৪টি চা-বাগানের জন্য শুভেচ্ছা। এ সময়ের বৃষ্টি চা-বাগানের জন্য বড় আশীর্বাদ মন্তব্য করে বাংলাদেশ টি এসোসিয়েশনের নর্থ সিলেট ভ্যালীর চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ টি এসোসিয়েশন সিলেট ব্রাঞ্চের ভাইস-প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘এটি নভেম্বর-ডিসেম্বরের শেষ উৎপাদনে সহায়ক হবে।’
সূত্র মতে, বৃহত্তর সিলেটের ৬টি ভ্যালির ১২৪টি বাগানের মধ্যে ১০৮টি বাগান থেকে প্রাপ্ত রিপোর্ট অনুযায়ী জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৩ কোটি ৮৩ লাখ ২ হাজার ৬শ’২৯ কেজি চা-উৎপাদন হয়েছে। আগের বছর ১২৪টি চা বাগানের উৎ্পাদন ছিল ৩ কোটি ৭৬ লাখ ৩ হাজার ৭৮৮ কেজি। বর্তমান সময়ে ৬ লাখ ৯৮ হাজার ৮৪১ কেজি বেশি উৎ্পাদন হয়েছে।
২০১৫ সালের আগে দেশে চা উৎ্পাদন হতো ৫৭-৬৫ মিলিয়ন কেজি। ২০১৫ সালে চা মৌসুমে ৬৭ দশমিক ৩২ মিলিয়ন কেজি চা উৎ্পাদন হলেও ২০১৬ সালে দেশে চা উৎ্পাদনে সর্বকালের রেকর্ড ছাড়িয়ে ৮৫ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদন হয়। এটি দেশের চা-শিল্পের ১৬২ বছরের রেকর্ড।
চা-অত্যন্ত সংবেদনশীল কৃষি পণ্য। এর জন্য আবহওয়া খুব গুরুত্বপূর্ণ। এবার তাপমাত্রা ও প্রয়োজনীয় বৃষ্টিপাত হয়েছে। তাই সিলেট অঞ্চলের আবহাওয়া চা-উত্পাদনের অনুকূলেই আছে । চলতি চা-উত্পাদন মৌসুমে খাদিম চা-বাগানে সেপ্টম্বর পর্যন্ত ৩ লাখ ৯৯ হাজার ৮৮৭ কেজি চা উৎ্পাদন হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ১৬ ভাগ বেশি চা-উৎপাদন হয়েছে তাদের বাগানে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, এবারও সারা দেশে ৮৫ মিলিয়ন কেজির কাছাকাছি চা-উৎ্পাদন হতে পারে।
এদিকে চা-উৎ্পাদন সংশ্লিষ্টরা চা-এর বাজার দরে বেশ খুশী। প্রতি কেজি ২৮০-৩০০ টাকা বিক্রয় মূল্য বাগানের জন্য অনেকটা সহায়ক বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। সরকার চা-আমদানিকে নিরুত্সাহী করায় বাগান সংশ্লিষ্টরা খুবই খুশি। এতে দেশি চায়ের ভালো দাম পাওয়া যাচ্ছে। তারা বলেন, তারা সারা দেশে চা-এর চাহিদা মিটানোর চেষ্টা করছেন। এতে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে।
চলতি বছর এপ্রিল-মে মাসে আশানুরূপ বৃষ্টির অভাবে চা-বাগানগুলোতে রেডস্পাইডার ও মশাসহ নানা পোকামাকড়ের আক্রমণ দেখা দিয়েছিল। পরবর্তীতে যথাযথ পদক্ষেপ ও বৃষ্টিপাতের ফলে পরিবেশ অনুকূলে চলে আসে।
সারা দেশের ১৬২টি চা-বাগানের মধ্যে সিলেটে চা-বাগানের সংখ্যা ১৩৮টি। এর মধ্যে অনেকগুলো রুগ্ন হয়ে পড়ে আছে। সিলেটের বেশিরভাগ চা-বাগান মৌলভীবাজার ও শ্রীমঙ্গলে। কিছু বাগান সিলেট ও হবিগঞ্জে রয়েছে। মালনীছড়া, খাদিম, কুলাউড়ার সাতছড়ি, সিলেটের খান টি-স্টেটসহ বিভিন্ন বাগান পরিদর্শনে দেখা যায় পাহাড়, টিলা ও টিলার ঢালুতে সবুজের সমারোহ।
বার্তা কক্ষ
১৯ নভেম্বর ,২০১
