শাহরাস্তি

শাহরাস্তিতে স্মার্ট এনআইডি বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন

চাঁদপুরের শাহরাস্তিতে স্মার্ট এনআইডি বিতরণ কার্যক্রম ১৭ ফেব্রুয়ারি সোমবার উপজেলা নির্বাচন অফিসের আয়োজনে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে উদ্বোধন করা হয়েছে।

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোঃ হেলাল উদ্দিন খানের সভাপতিত্বে ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোঃ ওবায়েদুর রহমানের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের যুগ্ম সচিব মো. আব্দুল বাতেন।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ কামরুজ্জামান মিন্টু, উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান কামরুন্নাহার কাজল, মেহের ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ মিজানুর রহমান, সূচীপাড়া ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ হুমায়ুন কবির ভূইঁয়া, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ আহসান উল্যাহ চৌধুরী, শাহ্রাস্থি থানার উপ-পরিদর্শক এসআই মোঃ আব্দুল আউয়াল, পৌরসভার প্যানেল মেয়র মোঃ বাহার উদ্দিন বাহার।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ মোস্তফা কামাল মজুমদার, জোবায়েদ কবির বাহাদুর, মোঃ আব্দুর রশিদ, মোঃ মনির হোসেন, আবু ইউসুফ পাটোয়ারী, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোঃ আব্দুর রব, সাধারণ সম্পাদক মোঃ জাহাঙ্গির আলম সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান, সাংবাদিক, জনপ্রতিনিধি ও এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

বক্তারা বলেন, প্রায় ৮০০ কোটি টাকা ব্যয়ে দেশের ৯ কোটি ভোটারকে স্মার্ট কার্ড দেওয়ার এই প্রকল্প গ্রহণ করা হয় ২০১১ সালে। এবারের স্মার্ট কার্ডে ব্যক্তির নাম (বাংলা ও ইংরেজি), পিতা/মাতার নাম, জন্মতারিখ ও জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন নম্বর দৃশ্যমান থাকবে। কার্ডের পেছনে থাকবে ব্যক্তির ভোটার এলাকার ঠিকানা, রক্তের গ্রুপ ও জন্মস্থান। তবে সব মিলিয়ে স্মার্ট কার্ডের মধ্যে থাকা চিপ বা তথ্যভান্ডারে ৩২ ধরনের তথ্য থাকবে, যা মেশিনে পাঠযোগ্য হবে।

এবারের স্মার্ট কার্ডের সঙ্গে কাগজের তৈরি ল্যামিনেট করা বিদ্যমান কার্ডের বেশ কিছু পার্থক্য রয়েছে। প্লাস্টিকের (পলিমার দিয়ে) তৈরি কার্ডটি মজবুত ও দীর্ঘস্থায়ী হবে। কার্ডের মেয়াদ হবে ১০ বছর। নারীদের ক্ষেত্রে বিদ্যমান কার্ডে স্বামীর নাম দৃশ্যমান ছিল। পিতার নাম ছিল না। অপরদিকে পুরুষের কার্ডে স্ত্রীর নাম উল্লেখ ছিল না। একে বৈষম্যমূলক বলে বলা হচ্ছিল। এবার নারীদের স্মার্ট কার্ডে স্বামীর নাম দৃশ্যমান থাকবে না। সেখানে পিতার নাম থাকবে।

কার্ডের তথ্যভান্ডারে ব্যক্তির পেশা, স্থায়ী ঠিকানা, বর্তমান ঠিকানা, বয়স, বৈবাহিক অবস্থা, জন্মনিবন্ধন নম্বর, লিঙ্গ, শিক্ষাগত যোগ্যতা, দৃশ্যমান শনাক্তকরণ চিহ্ন, ধর্ম, ড্রাইভিং লাইসেন্স নম্বর, পাসপোর্ট নম্বর, আয়কর সনদ নম্বর, টেলিফোন ও মোবাইল নম্বর, মা-বাবা ও স্বামী বা স্ত্রীর পরিচয়পত্র নম্বর, মা-বাবা বা স্বামী-স্ত্রীর মৃত্যুসংক্রান্ত তথ্য, অসমর্থ বা প্রতিবন্ধীর তথ্য ইত্যাদি স্থান পেয়েছে।

এ ছাড়া স্মার্ট কার্ডের ডিজাইনে বাংলাদেশের জাতীয় ফুল শাপলা, জাতীয় পাখি দোয়েল, জাতীয় স্মৃতিসৌধ ও চা-পাতা, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালীন ও বর্তমান জাতীয় পতাকা, জাতীয় সংগীত ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। স্মার্ট কার্ডে তিন স্তরে মোট ২৫টি নিরাপত্তা-বৈশিষ্ট্য সংযোজিত রয়েছে।

প্রথম স্তরের বৈশিষ্ট্যগুলো খালি চোখে দৃশ্যমান হবে। দ্বিতীয় স্তরের নিরাপত্তা-বৈশিষ্ট্যগুলো দেখার জন্য যন্ত্রের প্রয়োজন হবে। তৃতীয় স্তরের নিরাপত্তা-বৈশিষ্ট্য দেখতে ল্যাবরেটরিতে ফরেনসিক টেস্টের প্রয়োজন হবে। নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে চুক্তির মাধ্যমে কোনো প্রতিষ্ঠান ব্যক্তির পরিচয়পত্রের তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে পারবে। ২২ ধরনের সেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্র কাজে লাগবে। আয়করদাতা শনাক্তকরণ নম্বর পাওয়া, শেয়ার আবেদন ও বিও হিসাব খোলা, ড্রাইভিং লাইসেন্স করা ও নবায়ন, ট্রেড লাইসেন্স করা, পাসপোর্ট করা ও নবায়ন, যানবাহন রেজিস্ট্রেশন, চাকরির আবেদন, বিমা স্কিমে অংশগ্রহণ, স্থাবর সম্পত্তি ক্রয়-বিক্রয়, বিয়ে ও তালাক রেজিস্ট্রেশন, ব্যাংক হিসাব খোলা, নির্বাচনে ভোটার শনাক্তকরণ, ব্যাংকঋণ, গ্যাস-পানি-বিদ্যুতের সংযোগ, সরকারি বিভিন্ন ভাতা উত্তোলন, টেলিফোন ও মোবাইলের সংযোগ, সরকারি ভর্তুকি, সাহায্য ও সহায়তা, ই-টিকেটিং, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি, আসামি ও অপরাধী শনাক্তকরণ, বিজনেস আইডেনটিফিকেশন নম্বর পাওয়া ও সিকিউরড ওয়েব লগে ইন করার ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর লাগবে।

১৮ই ফেব্রুয়ারি পর্যায় ক্রমে পৌরসভা ও বিভিন্ন ইউনিয়নে স্মার্ট জাতীয় পরিচয় পত্র বিতরণ কার্যক্রম শুরু হবে।

প্রতিবেদক : জামাল হোসেন, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০

Share