বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার রায় ঘোষণার ১০ বছর পেরিয়ে গেলেও বিদেশে পলাতক খুনিদের দেশে ফিরিয়ে এনে রায় কার্যকর করা সম্ভব হয়নি। পলাতক ছয় খুনির মধ্যে নূর চৌধুরী কানাডায় এবং চৌধুরী এ এম রাশেদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছে। বাকি ৪ জন কোন দেশে অবস্থান করছেন তা পুরোপুরি নিশ্চিত হতে পারেনি সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
পুলিশ সদর দফতরের ইন্টারপোলের ধারণা,এ ৪ জন চীন, যুক্তরাজ্য, কেনিয়া, লিবিয়া, থাইল্যান্ড, ফ্রান্স, ইতালি, পোল্যান্ড, সুইজারল্যান্ডে অবস্থান করছে।
২০০৯ সালের ১৯ নভেম্বর সারা বিশ্বের আলোচিত হত্যা মামলার চূড়ান্ত রায় ঘোষণা হয়। মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত ১২ আসামির মধ্যে কারাগারে থাকা ৫ খুনির ফাঁসির আদেশ কার্যকর। তারা হলো- অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল সৈয়দ ফারুক রহমান,অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল সুলতান শাহরিয়ার রশিদ খান,অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল মহিউদ্দিন আহমদ,অবসরপ্রাপ্ত মেজর এ কে বজলুল হুদা ও অবসরপ্রাপ্ত মেজর এ কে এম মহিউদ্দিন।
বাকি সাতজনের মধ্যে আজিজ পাশা জিম্বাবুয়েতে রাজনৈতিক আশ্রয়ে থাকা অবস্থায় ২০০১ সালের ২ জুন মারা যায় বলে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়। জীবিত ৬ জনের মধ্যে চৌধুরী এ এম রাশেদ বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ১৯৭৬ সালে জেদ্দায় কূটনীতিক পদে যোগ দেন।
১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার তাকে দেশে ফেরত আসার নির্দেশ দিলে,যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় নেয় চৌধুরী এ এম রাশেদ। আরেক খুনী নূর চৌধুরী ১৯৭৬ সালে ব্রাসিলিয়ায় কূটনৈতিক জীবন শুরু করে।
আওয়ামী লীগ সরকার তাকেও ফেরত আসার নির্দেশ দিলে,নূর চৌধুরী আশ্রয় নেয় কানাডায়। তাকে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়ার কথা জানা যায় মাঝেমধ্যেই। শরিফুল হক ডালিমকে ১৯৭৬ সালে কূটনীতিক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয় বেইজিংয়ে। ১৯৮৮ সালে পদায়ন করা হয় কেনিয়ার রাষ্ট্রদূত হিসেবে। রিসালদার মোসলেহউদ্দিন রয়েছে জার্মানিতে। তাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে জার্মান সরকারের সঙ্গে কূটনৈতিক যোগাযোগ চলছে।
খন্দকার আব্দুর রশীদকে পাকিস্তানে দেখা গেছে,এমন তথ্যের ভিত্তিতে পাকিস্তান সরকারকে একটি নোট ভারবাল দেয় বাংলাদেশ। তবে,দেশটির পক্ষ থেকে কোন ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যায়নি। আবদুল মাজেদের অবস্থান সম্পর্কে এখনো কোন তথ্য নেই সরকারের কাছে।
যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা সরকারের আপত্তি না থাকলেও সেখানে পলাতক খুনিদের ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে আইনগত জটিলতাই এখন বড় বাধা। তবে সরকারের নানা উদ্যোগে এক্ষেত্রে যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছে বলে সরকারের পক্ষ থেকে জানিয়ে। সরকারের উদ্যোগ অব্যাহত থাকলে বর্তমান সরকারের মেয়াদকালেই যুক্তরাষ্ট্র থেকে রাশেদ চৌধুরীকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব বলে জানান কূটনৈতিকরা।
বঙ্গবন্ধুর পলাতক খুনীদের দেশে ফেরত আনার চেষ্টা চললেও বিভিন্ন দেশের আইনি বাধ্যবাধকতার কারণে বিলম্বিত হচ্ছে। তবে জাতির জনকের পলাতক খুনীদের ফিরিয়ে এনে দণ্ড কার্যকরের দাবি দেশবাসীর।
বার্তা কক্ষ
১৫ আগস্ট ২০১৯
এজি