Home / চাঁদপুর / ১৭ সেপ্টেম্বর শিক্ষা দিবস ও অতীত প্রেক্ষাপট
Abdul-Ghoni

১৭ সেপ্টেম্বর শিক্ষা দিবস ও অতীত প্রেক্ষাপট

১৭ সেপ্টেম্বর মহান শিক্ষা দিবস। তৎকালীন ২২ ছাত্র আন্দোলনের ইতিহাস সৃষ্টির গোড়াপত্তনের ১৯৬২ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর একটি অনন্য দিন। এ দিনের আত্মদানে গৌরবোজ্জ্বল দিনটি বাংলাদেশের ছাত্রসমাজ ‘শিক্ষা দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছে। শিক্ষার দাবিতে এমন রক্তক্ষয়ী এবং আন্দোলন এ দেশে আর কখনও হয়নি।

প্রতিক্রিয়াশীল পাকিস্তানের সাম্প্রদায়িক ভাবাদর্শে প্রণীত শিক্ষানীতি বাস্তবায়নের শুরু করা থেকেই ছাত্রদের শক্তিশালী প্রতিরোধের মুখে পড়ে। ছাত্র সংগঠনগুলো এ শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে রাজপথে নামে। আন্দোলনের অংশ হিসেবে তৎকালীন ‘ ১৭ সেপ্টেম্বর দেশব্যাপি হরতাল ’ আহ্বান করা হয়। ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের ডাকে দেশব্যাপি সর্বাত্মক হরতাল পালিত হয়। সে দিন পুলিশের গুলিতে নিহত হন ৩ জন। এরা হলেন -মোস্তফা, ওয়াজিউল্লাহ ও বাবুল।

জানা গেছে -১৯৫৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর আইউব খাঁন শিক্ষা সংস্কারের নামে আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয়ে তার এককালের শিক্ষক এবং পশ্চিম পাকিস্তানের শিক্ষা সচিব এসএম শরিফকে চেয়ারম্যান করে একটি শিক্ষা কমিশন গঠন করেন। এ কমিশন ১৯৫৯ সালের ২৬ আগস্ট তার অন্তর্র্বতীকালীন রিপোর্ট পেশ করেন। দীর্ঘদিন পর ১৯৬২ সালে চূড়ান্ত রিপোর্ট ছাপিয়ে গ্রন্থাকারে প্রকাশ করা হয়।সম্পূর্ণ গণবিরোধী এবং প্রতিক্রিয়াশীল চরিত্রের এ রিপোর্ট কেবল শিক্ষা সংকোচনের দলিলই ছিল না ।

এ কমিশনটি ১৯৫৯ সালের আগস্ট মাসে ২৪ অধ্যায়ে বিভক্ত বিশাল একটি শিক্ষা রিপোর্ট প্রণয়ন করে। এ রিপোর্টের অনেক সুপারিশ বাংলা ভাষা এবং বাঙালি জাতিসত্তার মর্মমূলে আঘাত হেনেছিল বলেই ছাত্রদের প্রতিবাদের ঝড় উঠতে থাকে। ঔ রিপোর্টের অধিকাংশ সুপারিশ গ্রহণ করে সামরিক সরকার তা বাস্তবায়ন শুরু করলে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের ছাত্রসমাজ বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। যার ফলেই সৃষ্টি হয় একের পর এক ইতিহাস।

১৯৬২ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর পল্টন ময়দানের ছাত্রসমাবেশ থেকে শিক্ষানীতি বাতিল ও হত্যার বিচারসহ ছাত্রসমাজের উত্থাপিত দাবি মানার জন্য ‘চরমপত্র ঘোষণা ’ করা হয়। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে তৎকালীন সামরিক সরকার শিক্ষানীতি বাস্তবায়ন স্থগিত করে।

ইতিহাস থেকে জানা গেছে -১৯৬২ সালটি ছিল আন্দোলনমুখর এক অগ্নিগর্ভ বছর। ১৯৬১ সালের ডিসেম্বর মাসেই আওয়ামী লীগ নেতা শেখ মুজিবুর রহমান পরবর্তীতে (বঙ্গবন্ধু ও জাতির পিতা ) ও ইত্তেফাক পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া এবং কমিউনিস্ট পার্টির নেতা মণি সিংহ ও খোকা রায়-এর মধ্যে সমঝোতার ভিত্তিতে ছাত্রলীগ ও ছাত্র ইউনিয়নের মধ্যে আইউব খাঁনের সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত হয়।

কথা ছিল ১৯৬২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবসেই আন্দোলনের সূচনা হবে। ১৯৬২ সালের ৩০ জানুয়ারি পাকিস্তানের এককালের প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের এ সময়ের কর্ণধার হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীকে করাচিতে গ্রেফতার করে পাকিস্থান পুলিশ। সোহরাওয়ার্দীর গ্রেফতারের পরিপ্রেক্ষিতে ২১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আর অপেক্ষা না করেই সোহরাওয়ার্দীর মুক্তি ও সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে ছাত্রসমাজ আন্দোলনের সূচনা করে। আন্দোলনের মূল সংগঠক ছিল ছাত্রলীগ ও ছাত্র ইউনিয়ন।

ফেব্রুয়ারিতে শুরু হয়ে তীব্র দমননীতির মধ্যেও এ আন্দোলন মার্চ মাস পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। মাঝে দমন-পীড়নের জন্য কিছুটা স্তিমিত হলেও এপ্রিল থেকে পাকিস্তানের শাসনতন্ত্র ইস্যুতে আবার ছাত্রসমাজ মাঠে নেমে পড়ে।

১৯৫২-র ভাষা আন্দোলনের পথ ধরে ১৯৬২-র শিক্ষা আন্দোলন, ১৯৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, যা অনিবার্য পরিণতি রূপে ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ, তেমনিভাবে বর্তমান প্রজন্মের ছাত্রসমাজ সর্বগ্রাসী শিক্ষা সঙ্কট উত্তরণে রচনা করছে ছাত্র গণআন্দোলন। যা বেগবান করছে সমাজ বিপ্লবের লড়াই।

১৯৬২’র শরীফ শিক্ষা কমিশন বিরোধী আন্দোলন ,পরবর্তী সময়ে ১৯৬৬’র হামিদুর রহমান শিক্ষা কমিশন বিরোধী ও ছয় দফার আন্দোলন , ১৯৬৯-এর নুর খান শিক্ষা কমিশন ও গণঅভ্যুত্থান এবং ১৯৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস রচনায় গভীর অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে এ শিক্ষানীতির প্রতিবাদ ও আন্দোলনগুলো। সেদিন বাংলার ছাত্রসমাজই পালন করেছিল নতুন ইতিহাস নির্মাণে অগ্রণী ভূমিকা। যার ধারাবাহিকতাও পর পর আরো ক’টি শিক্ষানীতি ভেস্তে যায়।

এ সব আন্দোলনের ফলে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট তথাকথিত ‘ফিল্ড মার্শাল’ আইউব খান পিছু হটতে বাধ্য হন। ১৯৬২ সালের ৮ জুন পাকিস্তানে ৪৪ মাস স্থায়ী সামরিক আইন প্রত্যাহারও করা হয়। বিরোধী দলগুলোর বিরোধিতা সত্ত্বেও একটি সংবিধান জারি, পরোক্ষ ভোটে জাতীয় পরিষদ ও প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনের মাধ্যমে আইউব খানের বেসামরিক শাসন সুদৃঢ় হয়ে।

এ পটভূমিতে ১৯৬২ সালের আগস্ট মাস থেকে ছাত্রসমাজ আবার ‘শরীফ শিক্ষা কমিশন’-এর বিরুদ্ধে স্বতঃস্ফূর্তভাবে আন্দোলন শুরু করে। আন্দোলনের সূচনা হয়েছিল ঢাকা কলেজে থেকে। কোনো নীতি প্রণয়নে ও তা বাস্তবায়নে প্রতিফলন থাকে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের তথা সরকারের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক দর্শনের ওপর। অতীতের সব সরকারই মুক্তবাজার অর্থনীতির দর্শনকে ধারণ করে ধনিকশ্রেণির স্বার্থরক্ষাকে প্রাধান্য দিয়ে নীতি প্রণয়ন করে।

বিজয়ের ভেতর দিয়ে বাষট্টির গৌরবোজ্জ্বল ছাত্র আন্দোলনের সফল পরিসমাপ্তি ঘটে। ১৯৬৩ সাল থেকে ছাত্রসমাজ ১৭ সেপ্টেম্বর দিনটিকে প্রতিবছর ‘শিক্ষা দিবস’ হিসেবে পালনের ঘোষণা দেয়। স্বাধীনতার আগে অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে ‘শিক্ষা দিবস ’ পালিত হতো। স্বাধীনতার পর দিনটি ধীরে ধীরে বিস্মৃতির অতলে হারিয়ে যাচ্ছে।

আন্দোলনরত ছাত্রদের মধ্যে প্রথমে ‘ডিগ্রি স্টুডেন্টস ফোরাম’ নামে এবং পরে ‘ইস্ট পাকিস্তান স্টুডেন্টস ফোরাম’ নামে দলমতের ঊর্ধ্বে সাধারণ ছাত্রদের ঐক্যবদ্ধ প্লাটফরম গড়ে ওঠে। প্রথমে কলেজ-ছাত্রদের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও ১৫ আগস্ট থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিখ্যাত আমতলায় ছাত্র সমাবেশের ভেতর দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রসমাজও এ আন্দোলনে সম্পৃক্ত হতে শুরু করে।

ছাত্র ইউনিয়ন ও ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ আন্দোলনের বিস্তৃতি এবং তীব্রতা উপলব্ধি করে শিক্ষার দাবিতেই এ আন্দোলনকে আরও সুসংগঠিত এবং কেন্দ্রিয় নেতৃত্বের অধীনে আনার জন্য ঐকমত্যে পৌঁছান। এবার তাদের উদ্যোগে গড়ে ওঠে ‘সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ’। ছাত্রসমাজ বিচ্ছিন্ন বিক্ষিপ্তভাবে ৩ বছরের ডিগ্রি কোর্স বাতিল বা ইংরেজির বোঝা কমানোর মতো দাবি রেখেই মূল দাবি হিসেবে শিক্ষা কমিশন রিপোর্ট বাতিলের দাবিটিকে সামনে এনেছিল।

১০ সেপ্টেম্বর সচিবালয়ের সামনে অবস্থানের ঘোষণা দেয়া হয়। সরকার ১৪৪ ধারা জারি করে। ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ ১০ সেপ্টেম্বরের কর্মসূচি বাতিলর করে। তবে তার পরিবর্তে ১৭ সেপ্টেম্বর দেশব্যাপি হরতাল আহ্বান করে।

১০ সেপ্টেম্বর সরকার হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীকে কারাগার থেকে মুক্তি দেয়। সরকারের প্রত্যাশা ছিল সোহরাওয়ার্দী মুক্ত হলে আন্দোলন স্তিমিত হয়ে পড়বে। কিন্তু এ আশা-দুরাশায় পরিণত হয় । ১৭ সেপ্টেম্বর সারাদেশে অভূতপূর্ব হরতাল ও ছাত্র ধর্মঘট পালিত হয়। রাজপথে নেমে আসে রাজধানী ঢাকার লক্ষ লক্ষ মানুষ।

সরকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য পুলিশকে সহায়তা করার জন্য ইপিআর ও সেনাবাহিনী নামায়। ২৪ সেপ্টেম্বর ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ পাকিস্তানের ইতিহাসে সর্বপ্রথম পল্টন ময়দানে জনসভা আহ্বান করে। ঐ জনসভা থেকে সরকারের প্রতি ‘চরমপত্র’ দেয়া হয়। ছাত্র-জনতার বিশাল জঙ্গি মিছিল হাইকোর্ট পার হয়ে আবদুল গণি রোডে প্রবেশ করতেই মিছিলের ওপর নির্বিচার গুলিবর্ষণ করা হয়।

পুলিশের গুলিতে তাৎক্ষণিকভাবে নিহত হন বাবুল এবং মোস্তফা। ওয়াজিউল্লাহ গুরুতর আহত হয় এবং সে ১৮ সেপ্টেম্বর হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে। ১৭ সেপ্টেম্বর কার্যত ছাত্রসমাজের অভ্যুত্থানে পরিণত হয়। ঐ দিনের বিক্ষোভ মিছিলে শেষ পর্যন্ত বিভিন্ন স্তরের সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণই প্রধান হয়ে ওঠে।

১৭ সেপ্টেম্বরের হত্যাকা-ের বিরুদ্ধে প্রচন্ড দমন-পীড়ন ও প্রতিকূলতার মধ্যেও ছাত্রসমাজ আন্দোলন অব্যাহত রাখে। একপর্যায়ে সরকার নমনীয় হতে বাধ্য হয়। ছাত্রসমাজ ও আন্দোলনকারী জনগণের পক্ষে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর গোলাম ফারুকের সাথে আলোচনায় বসেন।

ইতোমধ্যে শহীদ সোহরাওয়ার্দীর সাথে গভর্নর গোলাম ফারুকের কয়েক দফা বৈঠক হয়। ছাত্রসমাজের এ ‘চরমপত্র’ দেয়ার তিন দিন পর, সরকার শরীফ কমিশন রিপোর্ট স্থগিত ঘোষণা করে। ডিগ্রি কোর্সের ছাত্রদের, যাদের দ’ু বছর অতিক্রান্ত হয়েছিল এবং তৃতীয় বর্ষে উঠেছিল তাদের বিনা পরীক্ষায় সবাইকে পাস ঘোষণা করা হয়। গ্রেফতারকৃত ছাত্রদের মুক্তি দেয়া হয়।

শিক্ষা দেশের নাগরিকদেও একটি মৌলিক অধিকার। গণমুখী ও সার্বজনীন শিক্ষা ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা রাষ্ট্রের একটি সাংবিধানিক দায়িত্ব। স্বাধীনতার পর থেকে দাফে দাফে এর উন্নতি হলেও কাংখিত লক্ষ্যে এখনো আমরা পৌঁছতে পারি নি।

বৃটিশদের জোয়াল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে ভাববার সুযোগ দুর্ভাগা জাতির তেমন হয়নি। ফলে বাঙালি জাতি পদে পদে পিছিয়ে পড়েছে। জাতীয় উন্নয়নের মূল চাবিকাঠি হলো শিক্ষ্।া শিক্ষার ক্রমবর্ধমান উন্নয়ন ব্যতীত জাতীয় উন্নয়ন যে সম্ভব নয় তা বুঝলেও পদক্ষেপ নেয়ার মত অবস্থা সৃষ্টি না হওযার আজ আমরা এতটা পিছিয়ে গেছি।

আমাদের সংবিধানের ১৭ নং অনুচ্ছেদে গণমুখী, বিজ্ঞানভিত্তিক ও সার্বজনীন ধারার শিক্ষাব্যবস্থা প্রবর্তনের বাধ্যবাধকতা থাকলেও অতীত সরকারের আমলে তা হয়েছে উপেক্ষিত। মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীন রাষ্ট্রের অঙ্গীকার ছিল গণমুখী,সার্বজনীন, বিজ্ঞানভিত্তিক, অসাম্প্রদায়িক ও বৈষম্যহীন শিক্ষাব্যবস্থা বাস্তবায়ন।

স্বাধীনতার ৪৮ বছর পর এবং ’৬২’র ঔ শিক্ষা আন্দোলনের ৫৭ বছর মাথায় এদেশের ছাত্রসমাজকে শিক্ষার অধিকার আদায়ে মানসিকভাবে হলেও বিভিন্ন ইস্যুতে নিরবচ্ছিন্ন লড়াই চালিয়ে যেতে হয়েছে।

স্বাধীন বাংলাদেশে জাতির বঙ্গবন্ধুর সরকার ১৯৭২ সালে কুদরত-ই-খুদা শিক্ষা কমিশন বাস্তবায়নের ঘোষণা দিলেও তা সম্ভব হয় নি। রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কাজী জাফর শিক্ষা কমিশন ও রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের আমলে ঘোষিত মজিদ খান শিক্ষা কমিশন ১৯৮২ সালে ছাত্রদের পুনরায় আন্দোলনের তোপের মুখে তা আর বাস্তবায়ন হয় নি। ’৭৫-র পরবর্তী প্রতিটি সরকার ‘টাকা যার শিক্ষা তার’ এ নীতির বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে পালন করে গেছে অগ্রণী ভূমিকা।

বর্তমান সরকার ২০০৯ সালে বঙ্গবন্ধুর সরকারের ১৯৭২ সালের কুদরত -ই-খুদা শিক্ষা কমিশন পুনরায় বাস্তবায়নের ঘোষণা দেন। এর বিভিন্ন বৈশিষ্ঠের মধ্যে রয়েছে-ব্যক্তি ও জাতীয় জীবনে নৈতিক, মানবিক, সাংস্কৃতিক, বিজ্ঞানভিত্তিক ও সামাজিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠাকল্পে শিক্ষার্থীদের মননে,কর্মে ও ব্যবহারিক জীবনে উদ্দীপনা সৃষ্টি করা।

কুদরত-ই-খুদা শিক্ষা কমিশন জাতীয় জীবনে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় শিক্ষার্থীদের অনুপ্রাণিত করে তোলা ও তাদের চিন্তা-চেতনায় দেশাত্ববোধ,জাতীয়তাবোধ এবং তাদের চরিত্রে সুনাগরিকের গুণাবলির যেমন: ন্যায়বোধ, অসাম্প্রদায়িক-চেতনাবোধ,কর্তব্যবোধ,মানবাধিকার সচেতনতা,মুক্তবুদ্ধির চর্চা, শৃঙ্খলা,সৎ জীবনযাপনের মানসিকতা,সৌহার্দ্য,অধ্যবসায় ইত্যাদি বিকাশ ঘটানো এমন লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সামনে এনে

জাতীয় ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির ধারা বিকশিত করে প্রজন্ম পরম্পরায় সঞ্চালনের ব্যবস্থা করা, শিক্ষাকে শিক্ষার্থীর চিন্তা-চেতনা ও সৃজনশীলতার উজ্জীবন এবং তার জীবনঘনিষ্ঠ জ্ঞান বিকাশে সহায়তা করা। জ্ঞানভিত্তিক তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে তথ্যপ্রযুক্তি এবং সংশিস্নষ্ট অন্যান্য শিক্ষাকে যথাযথ গুরুত্ব প্রদান করা ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তনসহ প্রাকৃতিক ও সামাজিক পরিবেশ-সচেতনতায় দক্ষ জনশক্তি সৃষ্টি করার লক্ষ্যে দেশের আদিবাসীসহ সকল ক্ষুদ্রজাতিসত্তার সংস্কৃতি ও ভাষার বিকাশ ঘটানো । বর্তমান সরকার ভিশন ২০২১ বাস্তবায়নে একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ গঠনে এদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা এগিয়ে নিচ্ছে। (তথ্যসূত্র : অনলাইন পোর্টাল )

সম্পাদনায় : আবদুল গনি ,সহ – সম্পাদক, চাঁদপুর টাইমস । ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯