চাঁদপুর সদর উপজেলার ১২নং চান্দ্রা ইউনিয়নে বিতর্কৃত বক্তা ড.মুহাম্মদ এনায়েতুল্লা আব্বাসী সিদ্দিকী জৈনপুরীকে দিয়ে মাহফিল করার প্রস্তুতি নেওয়ায় সদর মডেল থানায় এলাকাবাসীর পক্ষে মঙ্গলবার(২৩ এপ্রিল) একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
বুধবার(২৪ এপ্রিল) অভিযোগের ভিত্তিতে উভয় পক্ষকে মডেল থানায় ডেকে এনে বিষয়টির সমাধান করা হলেও বৃহস্পতিবার এলাকায় সংঘর্ষের আশংকা রয়েছে।
ইসলাম ও ছারছীনার দরবার শরীফ এবং পীর সাহেবের বিরুদ্ধে আপত্তিকর বক্তব্য দেওয়ার আশংকায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রসঙ্গে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, চাঁদপুর সদর উপজেলার ১২নং চান্দ্রা ইউনিয়নে মদনা গ্রামের নেছারাবাগ সিদ্দিকিয়া দারুসুন্নাত মদীনা মার্কেট মাদরাসা ময়দানে বৃহস্পতিবার(২৫ এপ্রিল) মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।
উক্ত মাহফিলে ড. মুহাম্মদ এনায়েতুল্লা আব্বাসী সিদ্দিকী জৈনপুরী হুজুর, বারবার ছারছীনা ও চরমোনাই হুজুরের নামে কাফের আখ্যায়িত করে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন স্থানে বক্তব্য দিয়েছেন এবং ইউটিইউবে যাহার প্রমান বৃদ্ধমান। এলাকার ধর্মপ্রাণ সাধারণ মানুষের মাঝে দ্বন্ধের ক্ষোভ বিরাজ করছে এবং উক্ত মাহফিলের কারনে দু’পক্ষের সঙ্গে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশংকা রয়েছে।
এলাকাবাসীর পক্ষে মো. স্বপন পাটওয়ারী, আ. আজিজ সুরুজ পাটওয়ারী, আ. আউয়াল, বিল্লাল পাটওয়ারী, শাহ আলম জমাদার জানায়, আমরা কোন বিতর্কৃত বক্তা এ ইউনিয়নে দেখতে চাই না। ড. মুহাম্মদ এনায়েতুল্লা আব্বাসী সিদ্দিকী জৈনপুরী হুজুর ইউনিয়নে আসলে সাধারন মানুষ তা মেনে নেবে না।
ইউপি চেয়ারম্যান খান জাহান আলী কালু জানায়, মাহফিল নিয়ে এলাকায় দু’পক্ষের উত্তেজনা সৃষ্টি হওয়ায় আমি আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য পুলিশ প্রশাসনকে বিষয়টি অবহিত করি।
বৃহস্পতিবার নেছারাবাগ সিদ্দিকীয়া দারুসসুন্নাত মাদরাসা ময়দানে গদ্দিনাশীন পীর আব্বাসী মঞ্জিল জৈনপুরী দরবার শরীফের আল্লামা মুফতী ড. মুহাম্মদ এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী ওয়া সিদ্দিকী জৈনপুরী হুজুর আজিমশশান ইছালে ছাওয়াব মাহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হওয়ার কথা ছিল।
এ বিষয়ে নেছারাবাগ সিদ্দিকীয়া দারুসসুন্নাত কমপ্লেক্স এর প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক হযরত মাও. মুহাম্মদ সামছুল আলম ছালেহী জানায়, আমরা ২০০১ সাল থেকে মাহফিল করছি। আমাদের মাহফিল দু’দিন ব্যাপি ছিলো। কিন্তু তা আমরা একদিন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
বৃহস্পতিবার মাহফিলের প্রধান অতিথি ড. মুহাম্মদ এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী ওয়া সিদ্দিকী জৈনপুরী হুজুর কে কিছু লোক বাজে ধরনের মন্তব্য করছে এবং মাহফিলের প্রচার করার মাইক আটকে রেখেছে। আবার মাহফিলের পোষ্টার, ব্যানার ও লিফলেট ছিড়ে ফেলেছে। প্রধান অতিথিকে বাদ দিয়ে মাহফিল করার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। তবে আমরা কাল এলাকায় প্রধান অতিথিকে বাদ দিয়ে মাহফিল করব। এখানে যেন কোন ধরনের অপ্রতিকর ঘটনা না ঘটে, সেই জন্য আমরা প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করি।
মাহফিলের মাইকিংকারী মুহাম্মদ সাকিবুল হাসান জানায়, সিএনজি দিয়ে মাইকিং করার সময় রবিন ও কাউসার নামের দুই জন গাড়ীতে থাকা ২টা মাইক, ২টা মাইক্রো ফোন, একটি ব্যাটারী ও মেশিন নিয়ে যায় এবং আমাকে গাড়ী থেকে নামিয়ে দেয়।
এ বিষয়ে চাঁদপুর মডেল থানার ওসি (তদন্ত) মো. হারুনুর রশিদ জানায়, অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ নাসিম স্যারের নির্দেশে উভয় পক্ষকে থানায় ডেকে আনা হয়। পরে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে এবং মাহফিলের অনুমতির জন্য বলা হয়।
সিনিয়র স্টাফ করেসপন্ডেট
২৪ এপ্রিল ২০১৯