চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ পৌরসভার একটি মসজিদের ওয়াকফকৃত সম্পত্তি ট্রাস্টে নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন মাও. আবু সুফিয়ান আল কাদেরী। এ ঘটনায় স্থানীয় এলাকাবাসী প্রতিবাদ করায় একাধিক মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি হতে হচ্ছে। ধীরে ধীরে ক্ষোভে ফুঁসে উঠছেন এলাকাবাসী।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, ১৯৬৯ সালে ফয়জুন্নেসা বিবি ৬ শতাংশ ও এলাকাবাসীর দানকৃত ৮ শতাংশ সম্পত্তিসহ মোট ১৪ শতাংশ সম্পত্তি বদরপুর জামে মসজিদের নামে ওয়াকফ করে দিয়েছেন। তৎকালীন সময়ে ওই মসজিদের মোতয়াল্লী ছিলেন মৃত ওয়াজ উদ্দিনের ছেলে কামিজ উদ্দিন। মাওলানা আবু সুফিয়ান আল কাদেরী সুকৌশলে এতিমখানা ও মাদ্রাসাসহ এখন ওই সম্পত্তি আবু সুফিয়ান ট্রাস্টের অর্ন্তভূক্ত করার চেষ্টা করছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মসজিদের ওয়াকফকৃত ও রেকর্ডকৃত ভূমি এলাকার মুসল্লিগণের মাধ্যমে পরিচালিত হয়ে আসছে। আবু সুফিয়ান ট্রাস্টের জন্য ওই ভূমি পেতে অবৈধ পন্থা অবলম্বন করে চাঁদপুর দেওয়ানী ও ফৌজধারী আদালতে এলাকাবাসীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। এলকাবাসী মসজিদের ওয়াকফ সম্পত্তি রক্ষা করতে বাংলাদেশ ওয়াকফ প্রশাসকের নিকট আবেদন করেন। পরে হাজীগঞ্জ সহকারী কমিশনার ভূমি কর্মকর্তা বিষয়টি পৌর তহসিলদার মো. শাহজাহান খানকে সরেজমিন তদন্ত প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ প্রদান করেন।
ওই তদন্ত প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ওয়াকফকৃত সম্পত্তি মাওলানা আবু সুফিয়ানের ট্রাস্টে অর্ন্তভূক্ত করতে সুকৌশলী প্রতিবেদন দিয়েছেন। প্রতিবেদনের তদন্ত কপি এলাকাবাসী হাতে পেয়ে ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করেন।
স্থানীয় বাসিন্দা শাহিনুর রহমান শাহীন বলেন, মাওলানা আবু সুফিয়ান এ পর্যন্ত এলাকার ৫৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছেন। একের পর এক মামলা দিয়ে তিনি ট্রাস্ট গঠনের চেষ্টা করছেন। অথচ ওইসব সম্পত্তি বদরপুর গ্রামবাসীর।
তিনি আরো বলেন, মসজিদের প্রথম মোতওয়াল্লী কামিজ উদ্দিনের কোন ওয়ারিশ ছিল না। তার মৃত্যুর পর এলাকাবাসী ধারাবাহিক কমিটি করে মসজিদটি পরিচালনা করে আসছেন। ওয়াকফকৃত ফয়জুন্নেসার ৬ শতাংশ সম্পত্তির দলিলকে তহসিলদার অমুলক দলিল বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করায় আমরা হতাশ। আদালত কর্তৃক যা দন্ডনীয় অপরাধ।
জানতে চাইলে পৌর তহসিলদার মো. শাহজাহান খান জানান, আমি সরেজমিনে গিয়ে তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছি। এখানে আমি কোন অনিয়ম বা পক্ষদ্বয় বিবেচনা করিনি।
মাওলানা আবু সুফিয়ান মুঠোফোনে বলেন, আমাকে মসজিদের মোতাওয়াল্লী স্বীকার করে পুনরায় আমার নামে দলিল দিয়েছে কিছু বিবাদী। পরবর্তিতে আমি আমমোক্তার দলিল ফেরত এনে মসজিদের ওই সম্পত্তি ট্রাস্টের অর্ন্তভূক্ত করেছি। সম্পত্তির বিষয়ে চাঁদপুর দেওয়ানি ও ফৌজধারী আদালতে মামলা চলমান।
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, হাজীগঞ্জ
১৯ জুন ২০১৯
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur