গুরুদাসপুর উপজেলার কোনো এক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির অন্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শ্রেণিকক্ষের সর্বশেষ বেঞ্চে (গোল চিহ্নিত) বসে মনোযোগ দিয়ে শিক্ষকের বক্তব্য শুনছেন ইউএনও মো.তমাল হোসেন । শ্রেণিকক্ষে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পাঠদান করছেন শিক্ষক। সব শিক্ষার্থীই স্কুলড্রেস পরা। হঠাৎ বিদ্যালয়ের পেছনের ফটক দিয়ে প্রবেশ করলেন আরো এক শিক্ষার্থী।
পরনে সাদা শার্ট ও কালো প্যান্টশিক্ষকের অনুমতি নিয়ে শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করলেন তিনি। শেষ বেঞ্চে বসা এ শিক্ষার্থীর বয়স একটু বেশি হওয়ায় বেশ কৌতূহলী হয়ে পড়ে শিক্ষার্থীরা। শিক্ষকও রীতিমতো হতাশ।
এ শিক্ষার্থীকে নিয়ে শ্রেণিকক্ষে নিয়মিত পাঠদান করালেন শিক্ষক আবু বক্কর সিদ্দিক। সময় তখন বেলা ১১ টা। এরই মধ্যে বিদ্যালয় জুড়ে হইচই। বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম মিঠু এসে দেখলেন এ শিক্ষার্থী মো.তমাল হোসেন। তিনি গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)।
এ কর্মকর্তা মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) প্রথমে নাটোরের গুরুদাসপুর সরকারি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়,পরে বেগম রোকেয়া গার্লস স্কুল ও চাঁচকৈড় মধ্যমপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছদ্মবেশে ঝটিকা অভিযান চালান। তার উপস্থিতি মুহূর্তেই বদলে দেয় বিদ্যালয়ের পরিবেশ।
ইউএনও মো.তমাল হোসেন বলেন,‘তিনি অভিযোগ পেয়েছেন বিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষক শিক্ষার্থীদের পাঠদানে অমনোযোগী হয়ে পড়েন। অথচ একই শিক্ষার্থীদের ঠিকই কোচিং করান। এতে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া ব্যাহত হচ্ছে। মূলত:এসব বিষয় পর্যবেক্ষণের জন্যই তিনি এ অভিযান চালান।’
তিনি বলেন,‘গুরুদাসপুর সরকারি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে তিনি শিক্ষার্থীদের সাথে ক্লাস করেছেন। এ সময় শ্রেণি শিক্ষকের সাথে পাঠদানের কৌশল নিয়ে আলোচনা করেন। এছাড়া বেগম রোকেয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজে গিয়ে দেখেন,সড়কে চলাচলকারী যানবাহনের বিকট শব্দে পাশের অষ্টম,নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা ক্লাস চলার সময় শিক্ষকের বক্তব্য শুনতে পায় না। এতে শিক্ষার্থীদের মনোযোগে বিঘ্ন ঘটে। বিষয়টি তিনি সমাধানের আশ্বাস দেন। এ সময় বিদ্যালয়গুলোতে বাল্যবিবাহ ও উত্ত্যক্ত রোধে আলোচনা করা হয়।’
আগামিতেও এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।(দৈনিক জাগরণ )
বার্তা কক্ষ
সেপ্টেম্বর ৪, ২০১৯