ফরিদগঞ্জ

ফরিদগঞ্জে সরকারি-বেসরকারি দু’প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন কাজ বন্ধ

জনস্বার্থে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের জন্য জায়গা দান করেছিল রূপসা এলাকার ঐতিহ্যবাহী জমিদারগণ। দেশ স্বাধীনের পূর্বে জমিদারদের দান করা ঔ জায়গার স্বাস্থ্য বিভাগ ও স্কুল তাদের প্রাপ্য জায়গার ভোগ দখল পাওয়া না পাওয়াকে কেন্দ্র করে বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে।

এমন পরিস্থিতিতে ওই দু’পক্ষের দ্বন্দ্বে উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের উন্নয়ন কাজ বন্ধ রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সুত্র ও স্থানীয়রা জানায়, দেশ স্বাধীনের পূর্বে ফরিদগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী জমিদার এ উপজেলার প্রথম উচ্চ বিদ্যালয় রূপসা আহম্মদীয়া উচ্চ বিদ্যালয় ও পাশাপাশি একটি উপ-স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র স্থাপনে তাদের সম্পত্তি দান করেন।

এ উপজেলা সর্বপ্রথম উচ্চ বিদ্যালয় হিসেবে রূপসা আহম্মদীয়া উচ্চ বিদ্যালয়টি ১৯১৩ সালে স্থাপিত হয়। বিদ্যালয়টি স্থাপিত হওয়ার পর থেকে জমিদারের বংশদরের তদারকিতে শিক্ষার্থীদের শিক্ষার স্বার্থে উক্ত বিদ্যালয়টি বিশেষ অবদান রেখে আসছে।

বিদ্যালয়ের সম্পত্তি পর্যায়ক্রমে বেদখল হচ্ছে এমন অভিযোগ উঠায় বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিদ্যালয়ের সম্পত্তির পাশবর্তী উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ভোগ দখলে রেখেছেন। বেদখল হওয়া এ সম্পত্তি উদ্ধারের জন্যে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ২০১৪ সালে চাঁদপুরের জর্জ কোটে মামলা দেয়। এক পর্যায়ে এ মামলার রায় হয় বিদ্যালয়ের পক্ষে । এরই মধ্যে এলাকারই একটি স্বার্থান্নেষী মহল ক্ষমতার প্রভাব দেখিয়ে বিদ্যালয়টির সম্পত্তি জোর পূর্বক দখল করে তাতে দোকান তুলে ভোগদখল করতে উঠে পড়ে লেগেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রূপসা এলাকায় জমিদারদের দান করা জায়গায় স্থাপিত একটি সরকারি উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র রয়েছে। বিদ্যালয় ও উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের জায়গার সীমান নিয়ে সৃষ্ট বিরোধী মীমাংসা না হওয়ার আগেই উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের দেয়াল নির্মাণ করতে যায় কর্তৃপক্ষ।

এ অবস্থা দেখে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাতে বাধা দেয়। বাধার মুখে পড়ে উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের দেয়াল নির্মাণ কাজ অবশেষে বন্ধ করতে বাধ্য হয় স্বাস্থ্য বিভাগ। শুধু তাই নয়,বিষয়টি নিয়ে স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে পুলিশের কাছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে। এ অভিযোগ পেয়ে পুলিশ তদন্ত করেন ।

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সাবেক এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান,মূলত: জমিদারদের জায়গা ভোগ দখল করতে এলাকারই একটি ক-ুচক্রী মহল নিজের স্বার্থে দূর থেকে কলকাঠি নাড়াচ্ছেন।

বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক বশির আহম্মদ বিএসসি বলেন,‘বিদ্যালয়ের স্বার্থে আমরা বিদ্যালয়ের জায়গা উদ্ধারের জন্যে আদালতে গিয়েছি। এরই মধ্যে আদালতের রায়কে অমান্য করে ক্ষমতার দাপটে এলাকারই একটি মহল বিদ্যালয়ের জায়গা জোরদখল করতে উঠে পড়ে লেগেছে।’

এ ব্যাপারে ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের কর্মকর্তা ডা.জাহাঙ্গীর আলম শিপন বলেন,‘রূপসা এলাকায় স্বাস্থ্য বিভাগের জায়গায় জনস্বার্থে উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রটির উন্নয়ন কার্যক্রমে বাধা দেয়ার বিরুদ্ধে আমরা পুলিশকে অভিযোগ দিয়েছি। ’

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির জমিদারদের বংশদর সভাপতি সৈয়দ আহসান উল্লা চৌধুরীর বক্তব্য নেয়া সম্ভব না হলেও দাতা সদস্য সৈয়দ হাছান আহাম্মেদ চৌধুরী চাঁদপুর টাইমসকে বলেন,‘জনস্বার্থে আমাদের পূর্ব পুরুষ বিদ্যালয় ও একটি হাসপাতাল করার জায়গা দান করেছেন। এখন এলাকার একটি কুচক্রী ও দুষ্ট চক্র আমাদের দান করা সম্পত্তি ভোগদখল করতে চায়। যা জনস্বার্থ বিরোধী, লজ্জা ও বেদনা দায়ক।’

প্রতিবেদক : শিমুল হাছান
১৫ মে ২০১৯

Share