এবার মাধ্যমিক (এসএসসি) পরীক্ষায় ১০৭ প্রতিষ্ঠানের সব শিক্ষার্থী ফেল করেছে। আর শতভাগ পাস করেছে এমন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ২ হাজার ৫৮৩টি।চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষার ঘোষিত ফলাফল থেকে এমন তথ্য জানা গেছে।
সোমবার সকাল ১১ টায় রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে ফল প্রকাশ করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
এর আগে বোর্ড চেয়ারম্যানরা শিক্ষামন্ত্রীর কাছে ফলের সার-সংক্ষেপ তুলে দেন। এ সময় শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল উপস্থিত ছিলেন।
শিক্ষামন্ত্রী জানান, এ বছর শূন্য শতাংশ পাস করা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ১০৭টি, গতবছর যা ছিলো ১০৯টি। কমেছে ২টি।
এবছর ঢাকায় ১৪৬, রাজশাহীতে ৪৩১, কুমিল্লায় ১৩২, যশোরে ২৭৫, চট্টগ্রামে ৩০, বরিশালে ৫০, সিলেটে ২২, দিনাজপুরে ১৩৮, মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডে ১ হাজার ২৬৩ ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে ৯৬ প্রতিষ্ঠানে শতভাগ শিক্ষার্থী পাস করেছে।
শূন্য শতাংশ পাসের হার রাজশাহীতে ১, যশোরে ১, বরিশালে ২, দিনাজপুরে ১ এবং কারিগরি শিক্ষাবোর্ডে ৪৩টি প্রতিষ্ঠানে।
শূন্য ভাগ পাস প্রতিষ্ঠানগুলোর বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেছেন, ওই সব প্রতিষ্ঠান কেন ফল খারাপ করল সেসব বিষয় খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
শূন্য পাস প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, কারণ খতিয়ে দেখে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
শিক্ষামন্ত্রী আরও জানান, এবার এসএসসি ও সমানের পরীক্ষায় ২১ লাখ ২৭ হাজার ৮১৫ পরীক্ষার্থীর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে ১৭ লাখ ৪৯ হাজার ১৬৫ জন। উত্তীর্ণদের মধ্যে ৮ লাখ ৬৬ হাজার ৯৪১ জন ছাত্র ও ৮ লাখ ৮২ হাজার ২২৪ জন ছাত্রী।
তিনি জানান, এ বছর গড় পাশের হার ৮২ দশমিক ২০ শতাংশ।আটটি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে এসএসসিতে পাসের হার ৮২ দশমিক ৮০ শতাংশ, মাদরাসা বোর্ডে পাসের হার ৮৩ দশমিক ০৩ ও কারিগরি বোর্ডে ৭২ দশমিক ২৪ শতাংশ।
গত বছরের তুলনায় এবার পাসের হার বেড়েছে, তবে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যাও কমেছে। এবার এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় দশ বোর্ডে গড় পাসের হার ৮২ দশমিক ২০ শতাংশ। গত বছর গড় পাসের হার ছিল ৭৭ দশমিক ৭৭ শতাংশ। এবার পাসের হার বেড়েছে ৪ দশমিক ৪৩ শতাংশ বেড়েছে।
মোট জিপিএ-৫ পেয়েছে এক লাখ ৫ হাজার ৫৯৪ জন। গত বছর এ সংখ্যা ছিল এক লাখ ১০ হাজার ৬২৯ জন। এবার জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে ৫ হাজার ৩৫ জন।
এবার এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ২১ লাখ ৩৫ হাজার ৩৩৩ শিক্ষার্থী অংশ নেয়। এর মধ্যে ১০ লাখ ৬৪ হাজার ৮৯২ ছাত্রী এবং ১০ লাখ ৭০ হাজার ৪৪১ ছাত্র।
এসএসসিতে সাধারণ শিক্ষা বোর্ডগুলোর তত্ত্বীয় পরীক্ষা ২ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়ে ২৬ ফেব্রুয়ারি শেষ হয়। ব্যবহারিক পরীক্ষা ২৭ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়ে ৫ মার্চ শেষ হবে।
মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের তত্ত্বীয় পরীক্ষা ২ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়ে ২৭ ফেব্রুয়ারি শেষ হয় এবং ব্যবহারিক পরীক্ষা ২৮ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়ে শেষ হয় ৬ মার্চ।
ফল জানবেন যেভাবে
শিক্ষার্থীরা দুপুর ২টার পর থেকে পরীক্ষার ফল জানতে পারবেন। নিজ নিজ শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইট ও মুঠোফোনে এসএমএসের মাধ্যমে ফল জানা যাবে।
এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল মোবাইলে এসএমএসের মাধ্যমে পাওয়া যাবে। এ জন্য SSC লিখে স্পেস দিয়ে বোর্ডের নামে প্রথম তিন অক্ষর লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে আবার স্পেস দিয়ে পাসের বছর লিখে ১৬২২২ নম্বরে পাঠাতে হবে।
আর মাদ্রাসা বোর্ডের ক্ষেত্রে Dakhil লিখে স্পেস দিয়ে বোর্ডের নামের প্রথম তিন অক্ষর লিখে আবার স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে পাসের সাল লিখে পাঠাতে হবে ১৬২২২ নম্বরে।
এ ছাড়া কারিগরি বোর্ডের এসএসসি ভোকেশনাল পরীক্ষার ফল জানতে ssc লিখে স্পেস দিয়ে বোর্ডের নামের প্রথম তিন অক্ষর লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে পাসের সাল লিখে পাঠাতে হবে ১৬২২২ নম্বরে।
এ ছাড়া www.educationboardresults.gov.bd ওয়েবসাইটে গিয়ে ফল ডাউনলোড করা যাবে।
প্রথা অনুযায়ী, আগে প্রথমে প্রধানমন্ত্রীর হাতে পাবলিক পরীক্ষার ফলের অনুলিপি তুলে দেয়া হতো। এর পর শিক্ষামন্ত্রী মন্ত্রণালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে ফলের বিস্তারিত জানাতেন। কিন্তু এবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লন্ডন সফরে থাকায় তা হলো না।
তবে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি টেলিফোনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সংযুক্ত করেন। পরীক্ষায় যারা কৃতকার্য হয়েছেন, তাদের প্রধানমন্ত্রী অভিনন্দন জানান।
বার্তা কক্ষ
৬ মে ২০১৯