চাঁদপুর শহরের পৌর শহীদ জাবেদ স্কুলে পর্যাপ্ত শ্রেণিকক্ষের অভাবে শিক্ষার্থীদের পাঠদানে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
ফলে দীর্ঘদিন ধরে ভবনের অভাবে ঝুঁকিপূর্ণ টিনশেড ও অন্য ভবনটির ছাদ ফাটল থাকা সত্ত্বেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম চলছে। এতে যেকোনো সময় বড় ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীর অভিভাবক, পরিচালনা পর্ষদ ও শিক্ষকদের তথ্যমতে, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে চাঁদপুরে প্রথম মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ফরিদগঞ্জের টুবগিতে মৃত্যু বরণ করেন শহীদ জাবেদ। বীর মক্তিযোদ্ধা শহীদ জাবেদের নামেই ১৯৭২ সালে নির্মিত হয় চাঁদপুর পৌর শহীদ জাবেদ উচ্চ বিদ্যালয়।
প্রতিষ্ঠানটি প্রথমে টিন সেট শুরু হয়। পরবর্তীতে ছোট একটি ছাদ ঢালাই ভবন নির্মাণ করে কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর থেকে প্রায় ৩ বছর ধরে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে ক্লাস কার্যক্রম চলছে। বর্তমানে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৭শ’৫০ জন এবং শিক্ষক ২৬ জন শিক্ষক কর্মরত রয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটির দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী রাবেয়া আক্তার জানায়, দীর্ঘদিন যাবৎ ভাঙাচোরা টিনের ঘরে ক্লাস করতে হচ্ছে। এতে আমাদের পাঠদান ব্যাহত হয়। সবসময়ই জরাজীর্ণ ভবন ভেঙে পড়ার আতঙ্ক বিরাজ আমাদের মাঝে। এছাড়া পর্যাপ্ত ক্লাসরুম না থাকায় আমাদের একসাথে গাদাগাদি করে বসতে হয়। যেখানে পাঠ নিতে আমাদের সমস্যা হয়।
সহকারী শিক্ষক দীপক চন্দ্র দাস চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, শিক্ষার্থীদের পাঠদানে মনোযোগ সৃষ্টির জন্য ভালো পরিবেশের একটা ভূমিকা রয়েছে। কিন্তু আমাদের বিদ্যালয়ে সে সুযোগ নেই। টিনের ঘর আর ছাদ ফাঁটা ভবনে পাঠদানের সময় ভয় তৈরি হয়। আমরা চাই একটি সুন্দর ঝুঁকিমুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
পৌর শহীদ জাবেদ উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক মো.ওমর ফারুক চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর আমরা সরকারিভাবে ভবন তৈরির জন্য এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের সহায়তা পায়নি। আমরা ভবনের জন্যে ২০০৭ শিক্ষা প্রকৌশলে আবেদন করেছি। ভবনের অভাবে পুরাতন শিক্ষার্থীদের জায়গা সংকুলান হচ্ছে না।
ঝরাজীর্ণ ভবন ছাড়াও চেয়ার-টেলিব সমস্যার কারণে পাঠদানে শিক্ষার উপযুক্ত পরিবেশ পাচ্ছে না শিক্ষার্থীরা। এ প্রতিষ্ঠানে পড়ালেখার মান ভালো হওয়া সত্ত্বেও এখনো পর্যন্ত নতুন ভবন আমরা পাইনি। তাই আমাদের দ্রুত একটি ভবন প্রয়োজন।
শিক্ষা কমিটির আহ্বায়ক ও মহিলা কাউন্সিলর আয়েশা রহমান চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, পৌর শহীদ জাবেদ উচ্চ বিদ্যালয়টি একজন মুক্তিযোদ্ধার নামে। দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এখানে একটি চারতলা ভবন হলে শিক্ষার্থীরা খুব ভালো লেখা পড়া করতে পারবে। আমরা দ্রুত ভবনটি করার জন্য কাজ করে যাচ্ছি।
এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার কে এম সাইফুল হক বলেন, সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ভবনের বিষয়ে শিক্ষা প্রকৌশলে আবেদন করেছেন। তবে ভবনের কার্যক্রের বিষয়টি আমরা তেমন জানা নেই। আমাদের পক্ষ থেকে সরকারিভাবে ভবন নির্মাণের কাজে যতটুকু সহযোগিতা প্রয়োজন আমরা করবো।
প্রতিবেদক:শরীফুল ইসলাম
৯ এপ্রিল,২০১৯