ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনত্রেী শবনম ফারিয়া অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া। সম্প্রতি তিনি বিয়ে করেছেন এনিয়ে গণমাধ্যমে বেশ আলোচিত তিনি। বিশেষ করে নৌকায় করে বিয়েতে অংশগ্রহণসহ দৃষ্টিনন্দন ফটোগ্রাফি সোস্যাল মিডিয়া জুড়ে ভাইরাল।
রাজধানী গুলশানে শনিবার (২৬ জানুয়ারি) রাতে একটি পার্টি সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল অভিনেত্রী শবনম ফারিয়ার গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান। আনন্দের এই দিনে উচ্ছ্বসিত ফারিয়া শোনালেন তার বিয়ের পেছনের গল্প। স্বামী হিসেবে কেন অপুকে বেছে নিলেন জানালেন সে কথাও।
অপুর সঙ্গে পরিচয়টা কীভাবে হলো? প্রসঙ্গে শবনম ফারিয়া বলেন,
‘২০১৫ সালে ফেসবুকের মাধ্যমে দুজনের বন্ধুত্ব হয়। ফেসবুকে আমাদের দুজনেরই অনেক কমন বন্ধু ছিল। অপু আমাকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠালে আমি গ্রহণ করি। এরপর ফেসবুকে কথা বলতে বলতে আমাদের দুজনের ভালো বন্ধুত্ব তৈরি হয়। তিন বছর ধরে আমাদের দুজনের বন্ধুত্ব। একটা পর্যায়ে দুজনকে দুই পরিবার পছন্দ করে। গেলো বছরের ফেব্রুয়ারিতে তাদের আংটিবদল হয়।’
ফারিয়া ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি থেকে ইংরেজি বিষযয়ে স্নাতক সম্পন্ন করেন। প্রধানত তিনি বাংলা নাটকের অভিনেত্রী ও বিজ্ঞাপনচিত্রে মডেল হিসেবে মিডিয়া জগতে তাঁর পদচারণা শুরু হয়। সম্প্রতি তিনি আলোচিত চলচ্চিত্র ‘দেবী’ তে অভিনয় করেছেন।
জনপ্রিয় এ অভিনেত্রীর জন্মস্থান চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ১১ নং পশ্চিম ফতেপুর মান্দারতলী গ্রামে। তাঁর বাবা মরহুম ডা. মীর আবদুল্লাহ একজন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। ১৯৭১ সালে তিনি ছাত্রাবস্থায় মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। অবসরপ্রাপ্ত সরকারি চিকিৎসক এ মানুষটি পেশাগত কারণে ঢাকায় বসবাস করতেন।
গেলো বছরের ১৬ জুলাই মীর আবদুল্লাহ হৃদরোগে আক্রান্ত হন এবং ১৭ জুলাই চাঁদপুরের মতলবে তাঁর নিজ গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়। সে সূত্রে শবনম ফারিয়ার জন্মস্থানের বিস্তারিত তথ্য জানা যায়।
তিনি বোনের মধ্যে ফারিয়া সবার ছোট। দু’বোন কিছুটা কম বয়সে বিয়ে হলেও অভিনয়ের জগতের এ মানুষটি বাবার সাথে দীর্ঘদিন বসবাস করেছিলেন। বাবার সাথে তার অনেক স্মৃতি রয়েছে বলে প্রায়ই তিন ফেসবুক ওয়ালে বাবাকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করেন।
অনম বিশ্বাস পরিচালিত এবং জয়া আহসান প্রযোজিত ও অভিনীত সরকারি অনুদানের ছবি ‘দেবী’তে অভিনয় করেছেন শবনম ফারিয়া। বড় পর্দার চলচ্চিত্রে এটি তার প্রথম অভিনয়। হুমায়ূন আহমেদের জনপ্রিয় উপন্যাস অবলম্বনে তৈরি হয়েছে এই ছবির চিত্রনাট্য।
ফারিয়া টেলিভিশন বিজ্ঞাপনে কাজের মাধ্যমে মিডিয়া জগতে প্রবেশ করেন। এরপর ২০১৩ সালে তিনি অল টাইম দৌড়ের উপরে নাটকে অভিনয়ের মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ করেন। তিনি মূলত রোমান্টিক ধাচের নাটকে অভিনয় করে থাকেন।
তাঁর অভিনিত নাটকসমূহ হলো- অল টাইম দৌড়ের ওপর – ২০১৩, মানকি বিজনেস, প্রতীক্ষা, দেবী, সে আসে ফিরে ফিরে, ডিজিটাল প্যারেন্ট, প্রনয়, গোলাপী ঘুড়ি, ফান্দে পড়িয়া বগা কান্দে, প্রেমের রঙ্গে রাঙাবো, ব্যাকবেঞ্চার, হিং টিং ছট, বনলতা, ইডিয়ট, না জাগতিক না পুরান, নিয়তির মুচকি হাসি, বৈরাগীর গান, বৃষ্টিদের বাড়ি, মিস্টার জেক্স, জরুরী বিবাহ, হানিমুন প্যাকেজ, আনার কলি, হোক কলরব, প্রমের রঙে রাঙাবো, ব্লাস্ক ভার্স, মি. অ্যান্ড মিসেস. রাইট, হ্যাপি এন্ডিং, ফানি ভিডিও, হেমন্তের বৃষ্টি, বিজ্ঞাপনসমূহ, প্যারাসুট, প্রাণ জুস, রাধুনী, রবি
ছোটপর্দার জনপ্রিয় এ অভিনেত্রী ১৯৯০ সালের ১৪ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন। এ দিনটিতে নানা আয়োজনে নিজেকে ব্যস্ত রাখেন তিনি। অনেক শুভানুধ্যায়ীর সাথে দেখা করে কথা বলে এবং মজার খাবার খেয়ে তার দিনটি কাটে।
২০১৮ সালে জন্মদিন পালন নিয়েও বেশ আলোচিত হন তিনি। ওই জন্মদিনে পূর্বে জমানো টাকা অগ্নিকা-ে নিঃস্ব হয়ে যাওয়া পরিবারগুলোর মাঝে বিতরণ করেন।
ওই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘জন্মদিন উদযাপনের জন্য আমি যে টাকা রেখেছিলাম, সেটি মিরপুরের বস্তিতে আগুনে ঘর পুড়ে যাওয়া ভুক্তভোগী কয়েকটি পরিবারকে দান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তাদের কষ্ট সহ্য করতে পারছি না। সবাইকে সাহায্য করার সামর্থ্য আমার নেই। অন্তত কয়েকটি পরিবারকে তো পারব, সেটাই চেষ্টা করছি।’
সম্পাদনা- দেলোয়ার হোসাইন
৫ ফেব্রুয়ারি , ২০১৯