জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিণী শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ১৯৩০ সালের ৮ আগস্ট গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। গৃহিণী হয়েও যিনি বাংলাদেশের ইতিহাসের সন্ধিক্ষণে রেখেছিলেন বড় ভূমিকা। শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবকে বঙ্গবন্ধু ডাকতেন রেণু বলে।
শেখ মুজিবের বয়স যখন এগারো,তখন শিশু রেণুর সঙ্গে তার বিয়ে হয়। রেণু গোপালগঞ্জ মিশন স্কুলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়েছিলেন। তিনি তার মা-বাবাকে হারিয়েছিলেন শৈশবে,শাশুড়ির কাছে মানুষ হয়েছিলেন। পড়াশোনার প্রতি ঝোঁক ছিল,বাড়িতে শিক্ষক রেখে বাংলা, ইংরেজি, আরবি পড়েছেন; প্রচুর গল্পের বই পড়তেন আর গান শুনতেন। তার স্বামী কলকাতায় পড়তেন।
রাজনীতি করতেন। মাঝেমধ্যে আসতেন টুঙ্গিপাড়ায়। ১৯৪৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে তাদের বড় মেয়ে শেখ হাসিনার জন্ম হয়। তখন শেখ মুজিবের বয়স ২৭। বেগম মুজিবের বয়স ১৭ কি ১৮। বঙ্গবন্ধু রাজনীতি করতেন, জেলেই থাকতেন বেশিরভাগ সময়,ছেলেমেয়ে-সংসার সামলাতেন বেগম মুজিব।
এককথায় বঙ্গবন্ধুর সমগ্র রাজনৈতিক জীবন ছায়ার মতো অনুসরণ করে তার প্রতিটি রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অফুরান প্রেরণার উৎস হয়েছিলেন বেগম মুজিব। বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ ছয় দফা ঘোষণার পর বঙ্গবন্ধু যখন পাকিস্তানি শাসকদের হাতে বন্দি জীবনযাপন করছিলেন,তখন দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা বঙ্গমাতার কাছে ছুটে আসতেন।
তিনি তাদের বঙ্গবন্ধুর বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা পৌঁছে দিতেন এবং লড়াই-সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার জন্য অনুপ্রেরণা জোগাতেন। বিশেষ করে আগরতলা যড়যন্ত্র মামলায় যখন বঙ্গবন্ধুর প্যারোলে মুক্তি নিয়ে কিছু মহল স্বাধীনতা সংগ্রামকে বিপন্ন করার ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছিল,তখন প্যারোলে মুক্তির বিপক্ষে বেগম মুজিবের দৃঢ়চেতা অবস্থান বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামকে ত্বরান্বিত করেছিল।
স্বাধীন বাংলাদেশে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ফজিলাতুন্নেছা মুজিবকেও হত্যা করে ঘাতকরা।
বার্তা কক্ষ
৮ আগস্ট ২০১৯