চাঁদপুর-৪ ফরিদগঞ্জ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি মুহম্মদ শফিকুর রহমান নির্বাচনী মাঠে ব্যস্ত সময় পার করছেন। অপরদিকে বিএনপি মনোনীত ধানের শীষের প্রাথী বিশিষ্ট শিল্পপতি ও সমাজসেবক আলহাজ¦ এম এ হান্নান স্থগিত হওয়া মনোনয়নপত্র বৈধ করতে কোর্টে সময় কাটাচ্ছেন।
চুড়ান্ত মনোনয়ন পাওয়ার পর আ’লীগের প্রার্থী মুহম্মদ শফিকুর রহমান দলীয় নেতা-কর্মীদের সাথে নিয়ে সকাল থেকে দুপুর, বিকেল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত প্রচারনা, সাংগঠনিক সভা-সমাবেশ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
আ’লীগের কেন্দ্রিয় ও জেলা নেতৃবৃন্দ নৌকার বিজয়ের লক্ষ্যে নেতাদের বিরোধ নিরসন করে ঐক্যবদ্ধ করতে প্রাণপন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
এরইমধ্যে আ’লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা একই মঞ্চে উঠে নৌকার বিজয় নিশ্চিতে আন্তরিকভাবে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এছাড়া প্রতিদ্বন্ধী প্রার্থীর কাছ থেকে ভোটের মাধ্যমে কিভাবে বিজয় চিনিয়ে আনা যায় এনিয়ে নানা কৌশল ঠিক করছেন তারা। এছাড়া ধানের শীষের প্রার্থী এম এ হান্নানের প্রার্র্থীতা স্থগিত হওয়ার কারণে ফুরফুরে মেজাজে মুহম্মদ সফিকুর রহমান নির্বাচনী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছে তার অনুসারী দলীয় নেতা-কর্মীরা। নৌকার বিজয়ের লক্ষ্যে সমগ্র উপজেলাব্যাপী বিরামহীনভাবে আ’লীগের প্রচার-প্রচারনা চলছে।
অপরদিকে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী আলহাজ¦ এম এ হান্নানের মনোনয়নপত্র চাঁদপুর জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও নির্বাচন কমিশন বৈধ ঘোষণা করে। কিন্তু সোনালী ব্যাংকের ঋণ খেলাপীর অভিযোগ উঠায় হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ ১৭ ডিসেম্বর তার মনোনয়নপত্র স্থগিত করে। যার ফলে এমএ হান্নান এখন নির্বাচনী প্রচার-প্রচারনা থেকে বিরত রয়েছেন। তবে হাইকোর্টের ওই আদেশের বিরুদ্ধে এমএ হান্নান আপিল করেছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে প্রতীক বরাদ্ধের দিন ১০ ডিসেম্বর পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ ১৫৩ জনকে জ্ঞাত ও অজ্ঞাত ৭-৮’শ বিএনপি নেতা-কর্মীকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করে। ১০ ডিসেম্বরের পর থেকে এখন পর্যন্ত পুলিশ ওই মামলা ও বিভিন্ন অভিযোগে প্রায় ১০০ জন বিএনপি নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করেছে। এদিকে ওই সংর্ঘষের ঘটনার জন্য পুলিশ এবং বিএনপি একে অন্যকে দোষারপ করে আসছে।
এবিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ক’জন বিএনপি নেতা চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, পুলিশের গ্রেফতার এড়াতে নেতা-কর্মীরা এখন বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র পালিয়ে বেড়াচ্ছে। একদিকে পুলিশের গ্রেফতার আতঙ্ক অপরদিকে দলীয় প্রাথী এম এ হান্নানের মনোনয়নপত্র স্থগিত হওয়ার কারনে বিএনপি কর্মীদের মাঝে বিরাজ করছে সুনসান নিরবতা।
তবে বিএনপির প্রার্থীর ঘনিষ্ঠ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নেতা চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, পুলিশি গ্রেফতার ও হয়রানি এড়াতে নেতা-কর্মীদের নিরাপদে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পূর্বেই এম এ হান্নান নির্বাচনী কেন্দ্র কমিটি সহ আনুসাঙ্গিক প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন। ভোট সুষ্ঠু হলে ধানের শীষের বিজয়ী সু-নিশ্চিত।
অপরএক প্রশ্নের জবাবে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এই নির্বাচন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে কারামুক্ত করার নির্বাচন, এ নির্বাচন তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার নির্বাচন, লাখ লাখ নেতা-কর্মীদের মামলা-হামলা হয়রানি থেকে মুক্ত করার নির্বাচন। কিন্তু ফরিদগঞ্জে বিএনপি নামধারী একটি কুচক্রী মহল সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে আদালতে এমএ হান্নান ঋণ খেলাপী বলে অভিযোগ তোলে। ২০০৮ সালে ওই মহল একই ধরনের মামলা করিয়ে এম এ হান্নানের প্রার্থীতা ছিনিয়ে নিয়ে ছিলো।
তাঁর দাবি এম এ হান্নান ঋণ খেলাপী নয়, হয়রানির উদ্দেশ্যে এম এ হান্নানের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ আনা হয়েছে। তাদের বিশ^াস আপিল বিভাগে এম এ হান্নান তার প্রার্থীতার বিষয়ে ন্যায় বিচার পাবেন।
প্রতিবেদক- আতাউর রহমান সোহাগ
২২ ডিসেম্বর, ২০১৮