জাতীয়

সাকিব সাক্ষী আইসিসির তদন্ত সম্পর্কে বিসিবি কিছুই জানে না : পাপন

বাংলাদেশ দলের টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের নিষিদ্ধ হওয়াকে দেশের ক্রিকেটের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি হিসেবে উল্লেখ করেছেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। সাকিব দ্রুতই ক্রিকেটে ফিরবেন বলেও আশা প্রকাশ করেছেন তিনি। একই সঙ্গে বিসিবি প্রধান জানান, আইসিসির এত দিন ধরে চলা তদন্ত প্রক্রিয়া সম্পর্কে কোনো রকম অবহিত ছিল না বিসিবি।

জুয়াড়িদের কাছ থেকে ম্যাচ পাতানোর প্রস্তাব পেয়েও তা আইসিসির দুর্নীতি বিরোধী ইউনিট (আকসু) বা সংশ্লিষ্ট বোর্ডকে অবহিত করেননি সাকিব। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় মঙ্গলবার তাকে দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ করে আইসিসি।

এই দুই বছরের মধ্যে এক বছর স্থগিত নিষেধাজ্ঞা। ২০২০ সালের ২৯ অক্টোবর প্রথম এক বছরের নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হবে। এর পর মাঠে ফিরলেও বাকি এক বছর সাকিবকে মেনে চলতে হবে আইসিসির নানা বিধিনিষেধ। একই সঙ্গে মাঠের বাইরে থাকা সময়ে কোনো আইন ভাঙলে পরবর্তী এক বছরের নিষেধাজ্ঞাও কার্যকর হবে।

এদিন সাকিবকে আইসিসির নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পর আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। পাশে ছিলেন সাকিব আল হাসানও। তিনিও সংবাদমাধ্যমে কথা বলেন এ সময়।

বিসিবি প্রধান সাকিবের নিষেধাজ্ঞা বিষয়ে বলেন, ‘আমরা অত্যন্ত মর্মাহত। এর চেয়ে বেশি মর্মান্তিক কিছু হতে পরে বলে আমার জানা নেই। কারণ আমি বহুবার বলেছি, দুজন খেলোয়াড়ের বিকল্প আমাদের নেই। একজন অধিনায়ক হিসেবে মাশরাফী, অন্যজন সাকিব।’

‘অন্য সবকিছুর বিকল্প পেলেও সাকিবের মতো খেলোয়াড় আমরা পাব কিনা জানি না। সে বিশ্বসেরা খেলোয়াড় আপনারা সকলেই জানেন। সাকিবের খেলতে না পারাটাই আমার জন্য সবচেয়ে মর্মান্তিক।’

সাকিবের বিরুদ্ধে মোট তিনটি অভিযোগ এনেছে আইসিসি। ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল, চার মাসের মধ্যে তিনবার ম্যাচ ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব পেয়েছিলেন সাকিব। কিন্তু কোনোবারই তিনি আইসিসি বা বোর্ডকে অবহিত করেননি।

আইসিসি তখন থেকেই এই বিষয়ে তদন্ত করে যাচ্ছিল। তবে বিসিবি এ বিষয়ে অবহিত ছিল না। পাপন সাকিবকে পাশে রেখেই বলেছেন, ‘এখানে একটা কথা আপনাদের স্পষ্টভাবে বলে দিতে চাই। এটা সাকিবই বড় সাক্ষী। বিসিবি বা আমাদের কেউ কিচ্ছু জানি না। এই যে কত তদন্ত হচ্ছে এত দিন থেকে, আমরা কিচ্ছু জানি না। অ্যান্টি করাপশন ইউনিট আইসিসির একটি সেপারেট ইউনিট। আমার জানা মতে ওরা সাকিবের সঙ্গেই শুধু যোগাযোগ করেছে। আমরা শুধু রেজাল্টটা জানতে পেরেছি।’

কদিন আগে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিলেন ক্রিকেটাররা। যার নেতৃত্বে ছিলেন সাকিব। দুই পক্ষের সমঝোতার পর বিসিবি প্রথম জানতে পারে বিষয়টি। সেটি সাকিবের কাছ থেকেই।

পাপন জানান, ‘সাকিব আমাকে প্রথম বলেছে। এটা আমি অস্বীকার করছি না। বলেছে দুই-তিন দিন আগে। ওদের সঙ্গে যখন বসেছিলাম তার পরে। সাকিবই প্রথম বলল আমাকে। এই যে কত দিনের শাস্তি হবে বা না, এসবেরই কিচ্ছু জানি না। সাকিবই জানিয়েছে, ওর কাছ থেকে শুনেছি।’

এই মুহূর্তে সবার সাকিবের পাশে থাকা উচিত উল্লেখ করে পাপন বলেন ‘আমি মনে করি আমাদের সকলকে সাকিবের পাশে এখন থাকা উচিত। ওর এখন খুব খারাপ সময় যাচ্ছে। ভেঙে পড়ার কোনো কারণ নেই। ও অ্যান্টি করাপশন ইউনিটের সঙ্গে সহযোগিতা করার কথা বলেছে। সেটা করে যাক এবং যেভাবে যখন যেভাবে সাপোর্ট করা দরকার বিসিবি ওর পাশে থাকবে।’

পাপন বলেন, ‘আমরা আশা করি খুব দ্রুতই সে ক্রিকেটে ফিরে আসবে এবং বাংলাদেশকে আরো ভালো অবস্থানে নিয়ে যাবে ক্রিকেটে।’

বার্তা কক্ষ, ২৯ অক্টোবর ২০১৯

Share