আশিক বিন রহিম, চাঁদপুর প্রতিনিধি ॥ মে থেকে ১১ জুন এই একমাসে চাঁদপুর কুমিল্লা আঞ্চলিক মহা-সড়কে দুর্ঘটনায় ৭জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এর মধ্যে ৪জন পথচারি আর বাকি ৩জন যাত্রী।
১২ জুন বুধবার সকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা আইনশৃঙ্খলা সভায় এ তথ্য জানান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান। তিনি আরও জানান, মে মাস থেকে ১১ জুন পর্যন্ত চাঁদপুরে ৬টি বড় ধরণের সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে।
এর মধ্যে চাঁদপুর সদরে বিভিন্নস্থানে ঘটেছে ৪টি সড়ক দুর্ঘটনা। এইসব দুর্ঘটনায় যে ৭জন নিহত হয়েছে তাদের মধ্যে ৪জন ছিলেন পথচারী। তাই এইসব দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেতে পথচারিদেরও সচেতন হতে হবে।
তিনি আরও জানন, অবৈধভাবে মোটরজান চলাচল বন্ধে এবং ড্রাইবিং লাইসেন্স না থাকায় আমাদের মোবাইল কোর্ট অব্যাহত রয়েছে। এ বিষয়ে আমাদের ট্রাফিক বিভাগ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
জেলা প্রশাসক মো. মাজেদুর রহমান খানের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র নাছির উদ্দিন আহমেদ, সাধারন সম্পাদক আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জামান প্রমুখ।
এদিকে পবিত্র ঈদুল ফিতরের একদিন আগে থেকে ঈদের ৬ষ্ঠ দিন পর্যন্ত চাঁদপুরের বিভিন্ন স্থানে সড়ক দুঘর্টনায় শিশু বৃদ্ধসহ প্রায় অর্ধশত জন নারী – পুরুষ আহত হয়েছে। এসব দুর্ঘটনায় পথচারী, মোটর সাইকেল আরোহী ও মামা ভাগনিসহ নিহত হয়েছেন ৪ জন।
আহতরা চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালসহ বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতাল গুলোতে প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা নিয়েছেন। ঈদকে কেন্দ্র করে চাঁদপুরে একদিকে যেমন বেড়েছে বিভিন্ন যানবাহন , অন্যদিকে বেড়েছিলো মানুষের উপস্থিতি। গত ৫ জুন সারাদেশে একযোগে পালিত হয় পবিত্র ঈদুল ফিতর। আর ঈদের এ আনন্দকে ভাগাভাগি করে নিতে মানুষজন ছুটে চলেছে পরিবার পরিজন ও আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে। সেখানে যাওয়ার পথেই চাঁদপুর শহর এবং শহরের বিভিন্ন স্থানে ঘটছে ছোট বড় অনেক সড়ক দুর্ঘটনা।
খবর নিয়ে জানাযায় চাঁদপুর সদর উপজেলার ঘোষের হাট, সেনগাঁও, শাহমাহমুদপুর, বহরিয়া , চান্দ্রা, বাসস্ট্যান্ট, বাবুরহাট, ওয়ারলেস,বাগাদী, মিশন রোড , ফরিদগঞ্জ, কচুয়া, শাহরাস্তি, মতলব ,গাছতলাসহ বিভিন্ন স্থানে সিএনজি স্কুটার, অটোবাইক, মোটর সাইকেলসহ ছোট বড় সড়ক দুর্ঘটনায় শিশু এবং বৃদ্ধসহ মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রায় শতাধিক নারী পুরুষ আহত হয়েছেন।
এদের মধ্যে অধিকাংশ লোকই চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতলে এসে প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা নিয়েছেন। কেউ , কেউ এখনো হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন আবার অনেক কে উন্নত চিকিৎসার জন্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও প্রেরন করা হয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে।
এসব দুঘর্টনার মধ্যে ১১ জুন মঙ্গলবার সকালে চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কের সদর উপজেলার সেনগাঁও এলাকায় এবং শাহমাহমুদপুর এলাকায় পৃথক দুটি সড়ক দুঘর্টনায়, মামা, ভাগ্নি ও একপথচারী নিহত হয়। এ সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের উদ্ধারে কাজ করেছে চাঁদপুর ফায়ার সার্ভিস।
এতে নিহতরা হলেন, ব্যাংক কর্মকর্তা ইমরান হোসেন (৩৪) ও তার ভাগ্নি ফাতেমা আক্তার আনিকা (১০) এবং ঝর্না বেগম (৩৫)। এছাড়াও ঈদের ২য় দিন ঈদের আনন্দে কুমিল্লা জেলা থেকে ঘুরতে আসা রাব্বি (২০) নামের এক মোটর সাইকেল আরোহী নিহত হয়।
হাসপাতালের জরুরী বিভাগে কর্মরত ব্রাদার আঃ রশিদ ও ছালামত মিয়া রেজিষ্ট্রার খাতা দেখে জানান ঈদের একদিন আগে থেকে মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত হাসপাতালে প্রায় শতাধিকের মতো নারী, পুরুষ ও শিশু যাত্রী সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে চিকিৎসাসেবা নিয়েছেন।
এদের মধ্যে যারা একটু বেশি আঘাতপ্রাপ্ত তারা হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন আর যাদের অবস্থা মোটামুটি ভালো তারা প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা নিয়ে বাড়িতে ফিরে গেছেন। এবং অনেকের অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্যে ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে।
প্রতিবেদক- কবির হোসেন মিজি ও আশিক বিন রহিম
১৪ জুন ২০১৯