প্রতীকী
চাঁদপুরের সোনালী,অগ্রণী,জনতা ও কৃষি ব্যাংকের ৯০ টি শাখায় জানুয়ারি-আগস্ট পর্যন্ত ৮১৭ কোটি ৫০ লাখ টাকার বৈদেশিক রেমিট্যান্স অর্জন হয়েছে। সোনালী, অগ্রণী, জনতা,কৃষি ব্যাংকের আঞ্চলিক কার্যালয়গুলোর সূত্রে জানা যায়, ৪৭ হাজার ৯ ‘৯২ টি রেমিট্যান্সের মাধ্যমে সোনালী ব্যাংকের ২০ টি শাখা চলতি বছরের জানুয়ারি-আগস্ট পর্যন্ত ২০২.৬৬ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ২৮টি শাখায় ২ হাজার ৪শ ২০টি র্যামিটেন্সের মাধ্যমে জুলাই-আগস্ট পর্যন্ত ১৩ কোটি টাকা অর্জন করে ।
চলতি বছরের জানুয়ারি-আগস্ট পর্যন্ত জনতা ব্যাংকের ১৭ টি শাখা ১৯৪.৬৭ কোটি টাকা ও ৯৬ হাজার ২শ ৯৮টি বৈদেশিক র্যামিটেন্স এর মাধ্যমে অগ্রণী ব্যাংকের ২০ টি শাখা ৪০৬ কোটি টাকা বৈদেশিক রেমিট্যান্স অর্জন করেছে ।
চাঁদপুরের প্রবাসীরা প্রতি মাসে এ সব র্যামিটেন্স বিভিন্ন অর্থলগ্নী আন্তর্জাতিক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদিত এজেন্সির মাধ্যমে এসব রেমিট্যান্স প্রেরণ করে থাকে।
চাঁদপুরের জনশক্তি ও কর্মসংস্থান কার্যালয় সূত্র মতে, মধ্যপ্রাচ্যসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে চাঁদপুরের বৈধ ২ লাখ ৬০ হাজার শ্রমজীবী নিজ নিজ কর্মস্থল থেকে তাদের নিকটতম স্বজনদের কাছে ব্যাংক ও অন্যান্য অর্থলগ্নি এজেন্সির মাধ্যমে ওই রেমিট্যান্স প্রেরণ করে থাকেন। সরকারের হিসাবের বাহিরে রয়েছে আরো অসংখ্য। যার কোনো পরিসংখ্যান জানা সম্ভব হয়নি।
চাঁদপুরের প্রবাসীদের শ্রমের বিনিময়ে পাঠানো রেমিট্যান্স জেলার প্রায় দু’শতাধিক ব্যাংক শাখায়,শতাধিক শপিংমলে ও ৫ শ’র মত হাটবাজারে অর্থের তারল্য সৃষ্টি করছে এ র্যামিটেন্স। গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে অবকাঠামোগত উন্নয়নের দৃশ্য চোখে পড়ার মত।
জেলার ব্যবসা-বাণিজ্যে,শিক্ষা,কৃষি,স্ব-স্ব এলাকায় অবকাঠামোর উন্নয়ন,মসজিদ, মাদ্রাসা ও এতিমখানার অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রভৃতি ক্ষেত্রের চিত্র পাল্টে দিয়েছে প্রবাসীদের বৈদেশিক র্যামিটেন্স । দিন দিন নতুন নতুন ভবন নির্মিত হচ্ছে। এক শ্রেণির কর্মজীবি মানুষের কর্মসংস্থান বাড়ছে।
এক তথ্যে জানা গেছে- পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ১ কোটি ২০ লাখের মত বাংলাদেশি প্রবাসী রয়েছে। প্রবাসীর বেলায় দেশের অন্যান্য জেলার মধ্যে চাঁদপুরের অবস্থান ষষ্ঠ।’ নদীমাতৃক চাঁদপুরের জন্য এটি একটি বিশাল প্রাপ্তি মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা । তবে চাঁদপুরের প্রবাসীদের বেশিরভাগই মধ্যপ্রাচ্য তথা আরব দেশগুলোতে শ্রম ব্যয় করছেন।
এ ছাড়া মালয়েশিয়া,ইতালি,ফ্রান্সসহ,সিংগাপুর,জাপান,দক্ষিণ কোরিয়াসহ অনেক বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চাঁদপুরের প্রবাসী কর্মজীবী রয়েছে। তাঁরাই ওই সব র্যামিটেন্স পাঠাচ্ছেন। কোনো কোনো ব্যাংক কেবলমাত্র গোপন একটি পিন নাম্বারের মাধ্যমেও অর্থ লেন-দেন করছে । অনেক প্রবাসী গ্রাহক তাদের ব্যক্তিগত হিসাবেও অর্থ প্রেরণ করেন ।
বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নতুন নতুন শ্রম বাজার উম্মুক্ত হওয়ায় প্রবাসীর সংখ্যা ও বৈদেশিক র্যামিটেন্স অর্জন বাড়ছে ।
প্রবাসীরা টাকা প্রেরণের কয়েক মিনিটের মধ্যেই ব্যাংক তার গ্রাহককে কাংখিত অংকের টাকা প্রদান করতে সক্ষম। বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদিত বিভিন্ন অর্থলগ্নি এজেন্সির মাধ্যমে বাংলাদেশি প্রবাসীরা তাদের নিজ নিজ কর্মস্থল থেকে ওই অর্থ প্রেরণ করেন বলে অগ্রণী ব্যাংকের একজন কর্মকর্ত বলেন।
চাঁদপুরে দৈনিক ১৫০ থেকে ১৬০ জনের বিদেশে যাচ্ছে এমন গমনকারীরা চাঁদপুরের স্টেডিয়াম সংলগ্ন জনশক্তি ও কর্মসংস্থান ব্যুরো অফিসে ফিঙ্গার প্রিন্ট গ্রহণ করছে। মেরিন একাডেমি এদের প্রত্যেককে ৩ দিনের একটি প্রশিক্ষণ দিচ্ছে ।
এদিকে চাঁদপুরে একটি প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক রয়েছে। প্রবাসীদের নিয়ে কী কাজ করছে বা ক’জনকে ঋণ দিয়েছে ব্যাংকটি এর তথ্য দিচ্ছে না এর সংশ্লিষ্ঠ ব্যবস্থাপক ।
এদিকে চাঁদপুরের উত্তরা,রূপালী,ফার্মাস,মার্কেন্টাইল,প্রাইম,ডাচ বাংলা,সিটি,ন্যাশানাল,ইউনাইটেড কমার্শিয়াল,ট্রাস্ট প্রভৃতি ব্যাংকগুলো প্রবাসীদের প্রেরিত অর্থ লেনদেন করলেও চাঁদপুরে এসব ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণকারী বিভাগীয় অফিস কুমিল্লা থাকায় পৃথক পৃথকভাবে তথ্য সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি ।
অগ্রণী ব্যাংক চাঁদপুর অঞ্চলের সহকারী মহাব্যবস্থাপক গীতা মজুমদার চাঁদপুর টাইমসকে বলেন,‘আত্ম-সামাজিক উন্নয়ন,গ্রামীণ অবকাঠামোর উন্নয়ন,কর্মসংস্থান সৃষ্টি,ছেলে-মেয়েদের শিক্ষা ও দারিদ্র বিমোচনে বৈদেশিক র্যামিটেন্স একটি গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করছে।’
প্রতিবেদক : আবদুল গনি, সেপ্টেম্বর ৬ , ২০১৯
ডিএইচ
