চাঁদপুর

চাঁদপুরের রাজরাজেশ্বরে বুলবুলের আঘাতে শতাধিক পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত

গত শুক্রবার দুপুর থেকে চাঁদপুরে ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’র প্রভাব দেখা দেয়। শুরু হয় থেমে থেমে ঘুড়ি ঘুড়ি বৃষ্টি। পরদিন শনিবার হালকা ও ভারি বৃষ্টি হয়।
১০ নভেম্বর রোববার ভোর থেকে টানা ঝড়ো হাওয়া বইতে থাকে। বিকাল ৩টার পরে প্রচন্ড ঝড়ো হাওয়ায় চরাঞ্চলের মানুষের সবকিছু লন্ডবন্ড করে দেয়।

এতে করে চাঁদপুর সদর উপজেলার রাজরাজেশ^র ইউনিয়নের রায়েরচর,গোয়ালনগর ও বলিয়ারচর গ্রামের ১শ’ ১০ পরিবারের থাকার ঘর, পাকের ঘর, টয়লেট, ছোট দোকানঘর ক্ষতিগ্রস্থ হয়। ঝড়ের কারণে অনেকের মাছ ধরার জালও উড়ে পানিতে তলিয়ে যায়। ঘরের চাল ও বেড়াগুলো বাতাসে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার কারণে খুঁজে পায়নি।

সোমবার (১১ নভেম্বর) দুপুরে এইসব চরঘুরে ওই এলাকার বাসিন্দাদের ঘূর্ণিঝড়ের তান্ডবে লণ্ডভণ্ড অবস্থা দেখা যায়।

বলিয়ার চরের একমাত্র ফোরকানিয়া মাদ্রাসাটাও উড়িয়ে নিয়েগেছে বাতাসে। বাঁশেট খুটি ছাড়া আর কিছুই নেই। একটি মাইক ধুমড়ে মুচড়ে পড়ে থাকতে দেখা যায়।
এইসব চরের বাসিন্দার এমনিতেই বহুবার পদ্মা-মেঘনার ভাঙনের শিকার। কিছুদিন পূর্বে তারা ইউনিয়নের ৮নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ছিলেন। কিন্তু পদ্মার ভাঙনের শিকার হয়ে তারা এসব চরে ঘর তৈরি করে। এদের অনেকে সরকারের পক্ষ থেকে সহযোগিতা পেয়েছেন। আবার কেউ পাননি। চরের বাসিন্দারা মাছ আহরণ এবং কৃষিকাজ করেই তাদের জীবন জীবীকা নির্বাহ করেন।

ক্ষতিগ্রস্ত আবুল খায়ের, নাদির সরকার, আব্দুল বেপারী ও মানিক বেপারী বলেন, তাদের ঘরগুলো ঘূর্ণিঝড় অল্প সময়ের মধ্যে তছনছ করে দেয়। উড়িয়ে নিয়ে যায় ঘরের চাল ও টিন। অনেকেই এখন পর্যন্ত ঘরের চাল ও বেড়া খুঁজে পাচ্ছে না।

একই চরের বাসিন্দা আমির হোসেন বেপারী, আব্বাস আলী, নুরুল ইসলাম দেওয়ান ও আবুল হোসেন দেওয়ান বলেন, তাদের ঘরও ঝড়ের কারণে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। গত রাতে তারা অন্যের ঘরে আশ্রয় নিয়েছেন। শিশু সন্তানদের নিয়ে তাদের খুবই কষ্টে দিন কাটছে।

চরের বাসিন্দা হাসান সৈয়াল বলেন, রোববার সকাল বেলায় চাঁদপুর সদর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হয়েছে। সকলকে সতর্ক করে দেয়া হয়েছে নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার জন্য। কিন্তু ঘরে থাকা জিনিপত্রের মায়া ছেড়ে অনেকেই যাননি। ঘুর্ণিঝড়ের সময় জিনিসপত্র রক্ষা করতে গিয়ে প্রায় ৮-১০জন আহত হয়েছেন।

রাজরাজেশ^র ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হযরত আলী বেপারী বলেন, সোমবার ভোরে আমি ক্ষতিগ্রস্থ চরগুলো পরিদর্শন করেছি। ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলো কিছুদিন আগে পদ্মা নদীর ভাঙনের শিকার হয়ে এইসব চরে অবস্থান নিয়েছে। এখন আবার ঘূর্ণিঝড়ের তান্ডবে তাদের ঘরবাড়িগুলো ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।

বিষয়টি তিনি চাঁদপুর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেরা নির্বাহী কর্মকতাকে জানিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের সংখ্যা শতাধিক।

প্রতিবেদক : মাজহারুল ইসলাম অনিক, ১১ নভেম্বর ২০১৯

Share