চাঁদপুর মেঘনা-ডাকাতিয়া মোহনায় বিকল হয়ে যাওয়া স্টিমার পিএস টার্ন এখনো সচল হয়নি। শতাধিক যাত্রী ও মালামাল নিয়ে রাজধানীর সদরঘাট থেকে বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জ যাবার পথে গত মধ্যরাতে ইঞ্জিন বিকল হয়।
ব্রিটিশদের তৈরি প্রায় শত বছরের পুরনো এই স্টিমারটি এখন চাঁদপুর ঘাটে আটকা পড়ে আছে। এতে বেশির ভাগ যাত্রী নেমে গেলেও এখনো অনেক যাত্রী এই স্টিমারে রয়েছেন।
গতরাত থেকে আজ রবিবার বিকেল পর্যন্ত চাঁদপুরে আটকেপড়া এসব যাত্রী তাদের দুর্ভোগের কথা জানিয়েছেন। তবে জেলা প্রশাসন, চাঁদপুর পৌরসভা, জেলা ও নৌপুলিশ এগিয়ে গিয়ে অনেক যাত্রীকে বিকল্প পথে যাবার ব্যবস্থা করে দিয়েছে।
এর আগের শনিবার (৩১ আগস্ট) রাত সাড়ে ১১ টার দিকে দু’শতাধিক যাত্রী নিয়ে এটি বিকল হয়। খবর পেলে চাঁদপুরে নৌ-থানা পুলিশের তিন’সদস্য ও দু’জন সংবাদকর্মী ট্রলারের সহায়তায় যাত্রীদের উদ্ধার করে।
এ বিষয়ে উদ্ধারদলে থাকা সাংবাদিক কেএম মাসুদ জানান, ‘প্রথমে ধন্যবাদ চাঁদপুর ডিসি মহোদয়কে, কারণ তিনি গভীর রাতে আমাদের ফোন রিসিভ করেছেন, তাঁর নির্দেশনায় চাঁদপুর নৌ পুলিশের সাব ইন্সপেক্টর ফরহাদ আহমেদ ইশান, এডিশনাল সাব ইন্সপেক্টর পারভেজ, কনেস্টবল মাসুদকে এবং আমার আরেক সহকর্মী সাংবাদিক দেলোয়ার হোসেন ও বাঁধন উদ্ধার কাজে সহায়তা করেছেন। নদীতে প্রচণ্ড স্রোতের মধ্য দিয়ে আমরা ট্রলারযোগে জাহাজটিতে উঠতে মানুষজনের আতংকগ্রস্ত চিৎকার শুনে সংবাদ কভারেজের চেয়ে উদ্ধারে গুরুত্ব দেই। ঘাটে থাক কয়েকজ মাঝিকে গভীর ঘুম থেকে জাগিয়ে রাত দেড়টার দিকে যাত্রীদেরকে স্টিমার থেকে নামানো শুরু করে ‘
পরে তাদের প্রত্যেকের টিকিট অনুযায়ী স্টিমার ঘাট থেকে টাকাগুলো ফেরত নিতে ঘাট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানালে তারা প্রত্যেক যাত্রীর টাকা ফেরত দেন। পরে থানা পুলিশ এসে রাতে যাত্রীদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে।
স্টিমারের কর্মকর্তা মো. আরিফ জানান, রাজধানীর সদরঘাট থেকে গত শনিবার সন্ধ্যায় এটি ছেড়ে আসে। এ সময় স্টিমার পিএস টার্ন-এ ১৮০ জন যাত্রী ও মালামাল ছিল। চাঁদপুর-বরিশাল, পিরোজপুর ও বাগেটহাটের মোড়েলগঞ্জ পর্যন্ত এর যাত্রা পথ ছিল। কিন্তু চাঁদপুর ঘাট ত্যাগের একটু পরই ডান পাশের প্যাডেলের লাম্ব ভেঙে যায়।
অন্যদিকে পিএস টার্ন নামের এই স্টিমারের ইনচার্জ মাস্টার মো. শাহজাহান জানান, ডাক পাশের প্যাডেলের লাম্ব নামে একটি যন্ত্রাংশ ভেঙে যাবার কারণে স্টিমারটি বিকল হয়ে যায়। তিনি আশা করছেন, আগামী ২-১ দিনের মধ্যে ঢাকা থেকে নতুন যন্ত্রাংশ নিয়ে এসে প্রতিস্থাপন করা হলে ফের এটি চালু করা সম্ভব হবে।
স্টিমারে আটকেপড়া বেশ কয়েকজন যাত্রীরা জানান, পরিবারের সদস্য এবং সঙ্গে মালামাল থাকায় তারা অন্য মাধ্যমেও যেতে পারছেন না। ফলে তাদের দুর্ভোগ ছাড়িয়ে যাচ্ছে। তবে কয়েকজন যাত্রী জানান, রবিবার রাতে বিকল্প লঞ্চে তারা চাঁদপুর ত্যাগ করার চেষ্টা করবেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত প্রায় একমাস ধরে অপর স্টিমার পিএস মাসহুদ চাঁদপুরে বিকল হয়ে পড়ে আছে। শত বছরের পুরোনো এই স্টিমারটিও সচল করার কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না।
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, ১ সেপ্টেম্বর ২০১৯,