চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলায় প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয়ে সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার (এইউইও) ১১ পদে কর্মরত রয়েছেন দুজন। বাকি নয়পদ দীর্ঘদিন ধরে খালি।
এতে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ ও তদারকি কার্যক্রম, বিদ্যালয় পরিদর্শন, তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ ও প্রেরণ এবং দাপ্তরিকসহ নানা কার্যক্রমে অচলাবস্থা চলছে। বদলিজনিত ও অন্যান্য কারণে এসব পদ শূন্য হয়।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয় ও একাধিক শিক্ষক সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলায় সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তার পদ ১১টি। ওই ১১ পদে কর্মরত রয়েছেন মাত্র দুজন। বাকি নয় পদ বিভিন্ন মেয়াদে খালি। এ উপজেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ১ শ ১৩টি।
এসব বিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষকের সংখ্যা প্রায় সাত শ এবং শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ২২ হাজার। ওই ১ শ ১৩ বিদ্যালয় নিয়ে এ উপজেলায় ছয়টি সাবক্লাস্টার (উপগুচ্ছ) করা হয় । এর মধ্যে সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা তানভীর হাসান উপজেলা সদর ও নায়েরগাঁও এবং সেলিনা আক্তার নারায়ণপুর ও ধলাইতলী উপগুচ্ছ এলাকায় কর্মরত আছেন। বাকি দুটি উপগুচ্ছে সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা নেই।
সূত্রটি আরও জানায়, নিয়ম অনুসারে প্রতিটি উপগুচ্ছে কমপক্ষে একজন করে সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা থাকা আবশ্যক । সে হিসেবে এ উপজেলায় কমপক্ষে ছয়জন সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা থাকার কথা। ২০১২ সাল থেকে গত বছর পর্যন্ত এ উপজেলায় কর্মরত ছিল ছয়জন সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা।
এর মধ্যে ২০১৭ সালে সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মো. হানিফ এবং ২০১৮ সালে মো. মোখলেছুর রহমান অন্যত্র বদলি হন। গত এপ্রিলে বদলি হন সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা সমীরণ বিশ্বাস ও মো. জুলফিকার আলী ওরফে জনি। তখন থেকে অদ্যাবধি এই চার পদ খালি। এ ছাড়া উপজেলা পদ্ধতি চালু হওয়ার (১৯৮৫ সাল) পর থেকে এখানে সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তার সৃষ্ট আরও পাঁচটি পদও অদ্যাবধি খালি।
জানতে চাইলে সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা তানভীর হাসান বলেন, একজন সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তাকে শিক্ষকদের পাঠদান তদারকি, বিদ্যালয় পরিদর্শন, শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও বিদ্যালয়ের বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ ও প্রেরণ এবং দাপ্তরিকসহ নানা কাজ করতে হয়। ১১ জনের কাজ করতে হচ্ছে দুজনকে। দুজনের পক্ষে এতগুলো কাজ করা কষ্টসাধ্য। এতে হিমশিম খাচ্ছেন। শূন্যপদে লোক নিয়োগ করা জরুরি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে পয়ালী ও নওগাঁও উপগুচ্ছ এলাকার চারটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঁচ শিক্ষক বলেন, সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তার পদ খালি থাকায় তাঁদের বিদ্যালয় ঠিকমতো পরিদর্শন করা হয় না। শিক্ষকদের পাঠদান তদারকি এবং তাঁদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রমেও চলছে স্থবিরতা। এসব শূন্যপদ দ্রুত পূরণ হওয়া উচিত। এসব বিদ্যালয়ের ১০ শিক্ষার্থী জানায়, ‘আমাগো বিদ্যালয়ে শিক্ষা কর্মকর্তারা তেমন আইয়েন না। এলিগা এনো কোনো কিছু ভালামতো অয় না।’
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এ কে এম শহিদুল হক মোল্লা বলেন, তাঁর উপজেলায় সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তার নয়টি পদ খালি। এতে শিক্ষা কার্যক্রম চালাতে গলদঘর্ম হতে হচ্ছে। এসব পদে লোক নিয়োগের জন্য জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয় ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদক- মাহফুজ মল্লিক
৩০ মে ২০১৯