নিজ গৃহে অবহেলিত প্রবীণদের জন্য শেষ আশ্রয়স্থল হিসেবে দাঁড়িয়েছে বৃদ্ধাশ্রম। তাদের শেষ সময়ের সম্মান ও নিরাপত্তা দেওয়া হয় এখানে।
পারিবারিক স্নেহবঞ্চিত প্রবীণদের ঠাঁই দিতে চাঁদপুরে এই প্রথম হাজীগঞ্জে বৃদ্ধাশ্রম স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছেন স্থানীয় কয়েকজন যুবক। ইতিমধ্যে তাদের কার্যক্রম শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন, বৃদ্ধাশ্রম স্থাপনের অন্যতম উদ্যোক্তা সাংবাদিক সাইফুল ইসলাম সিফাত।
এ বছরের শেষ সময়ে বৃদ্ধাশ্রমটি চালু হবে জানিয়ে, উদ্যোক্তারা জানান, বৃদ্ধাশ্রম মানে বৃদ্ধদের আশ্রয়স্থল হলেও হাজীগঞ্জে এ বৃদ্ধাশ্রমটি হবে ভিন্নধর্মী। স্বজনদের থেকে আলাদা হওয়া বৃদ্ধদের প্রয়োজনীয় সেবা ও আশ্রয়ের পাশাপাশি তাদের মধ্যে যদি কোনো আচরণগত ত্রুটি থাকে, তা সংশোধনের ব্যবস্থা করা হবে। একইসঙ্গে বাবা-মাকে বৃদ্ধাশ্রমে ফেলে রাখা সন্তানদের কাউন্সিলিংয়ের মাধ্যমে বোঝানো হবে বাবা-মায়ের গুরুত্ব ও মর্যাদা।
সন্তানদের বোঝানো হবে, যে বাবা-মা তিলে তিলে নিজেদের সবকিছু বিসর্জন দিয়েছেন, সন্তানকে মানুষ করার জন্য, সেই বাবা-মায়ের শেষ বয়সের ঠিকানা বৃদ্ধাশ্রম হওয়ার পরিণতি সম্পর্কেও তাদেরকে ধারণা দেওয়া হবে। হয়তো একদিন, সন্তানেরাও এভাবে আঁস্তাকুড়ে আবর্জনা ফেলার মতো, তাদেরকে ফেলে দিতে পারে, তা বোঝানোর চেষ্টা করবা হবে। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল অসহায় মানুষের জন্য উন্মুক্ত থাকবে এ বৃদ্ধাশ্রম।
এ বিষয়ে গণমাধ্যমকর্মী ও বৃদ্ধাশ্রমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফুল ইসলাম সিফাত জানান, ‘মানুষ মানুষের জন্য’ ভেবে চাঁদপুর জেলায় যাদের কোনো মাথা গোজার ঠাঁই নেই বা দেখা-শোনার কেউ নেই, তাদের জন্য আমার এ অস্থায়ী উদ্যোগ।
তিনি বলেন, এলাকার পথে-ঘাটে, রাস্তার পাশে অনেক মানুষকে দেখা যায়, অবহেলিত অবস্থায় পড়ে আছেন। তাদের দেখলে হৃদয়ে ব্যথা অনুভূত হয়। বাকরুদ্ধ হয়ে যাই। তাই, তাদের পাশে দাঁড়ানো এবং তাদের জন্য, কিছু করার চেষ্টা করছি। এ বৃদ্ধাশ্রমে যারা আসবেন, তারা কখনোই পরিবার ও জনবিচ্ছিন্ন হবেন না। তাদেরকে পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকতে সহযোগিতা করবো।
বৃদ্ধাশ্রমে আধুনিক, উন্নত বাসস্থান ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে উল্লেখ করে সিফাত জানান, এখানে থাকবে আনন্দ বিনোদনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা। তিনি বলেন, ইতিমধ্যে ফেসবুক স্ট্যাটাস পড়ে অনেকেই প্রশংসা করছেন মহতি এ উদ্যোগের। ‘অবহেলিত বৃদ্ধেরা জীবনের শেষ দিনগুলো যেন একটু ভালোভাবে কাটাতে পারেন, সে উদ্যোগ নেওয়ায় আমাকে কমেন্ট করে, ম্যাসেজ ও ফোন দিয়ে ধন্যবাদ জানিয়েছেন’।
অনেকে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন, আবার অনেকে তিরস্কারও করেছেন। তবে এগিয়ে যেতে চাই, সকলের সার্বিক ও সমন্বিত সহযোগিতায়।
স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, ৫ অক্টোবর ২০১৯
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur