শিক্ষাঙ্গন

পরীক্ষার প্রশ্নে, বাংলাদেশের জাতীয় পিতার নাম কী?

কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলায় ভুল প্রশ্নপত্র ছাপিয়ে প্রাথমিকের প্রথম সাময়িক পরীক্ষা গ্রহণ করায় বুধবারের গৃহীত এবং বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত পরীক্ষা বাতিল করেছে প্রশাসন। এতে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। সেই সঙ্গে ভুলে ভরা প্রশ্নপত্রে বিভ্রান্ত হয়েছে শিশুরা।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বুধবারের গৃহীত দ্বিতীয় শ্রেণির পরিবেশ পরিচিতি প্রশ্নপত্রে দেখা যায় অসংখ্য বানান ভুল। এ পরীক্ষায় সাতটি প্রশ্ন থেকে পাঁচটি প্রশ্নের উত্তর চাওয়া হয়। প্রশ্নপত্রের ৩নং প্রশ্নে বলা হয়, ‘কাবারের আগে ও পরে কি করতে হয়? প্রশ্নটি হওয়ার কথা ছিল, ‘খাবারের আগে ও পরে কী করতে হয়?’

৪নং প্রশ্নে বলা হয়, ‘খাবারে নানা ধরণের ফুল দেখতে পাই। আমাদের পরিচিত পাঁচটি ফুলের নাম বল।’ কিন্তু প্রশ্নটি হওয়ার কথা ছিল, ‘বাগানে নানা ধরনের ফুল দেখতে পাই। আমাদের পরিচিত পাঁচটি ফুলের নাম বল।’

৫নং প্রশ্নে বলা হয়েছে, ‘আমাদের জাতীয মাছের নাম কি?’। অথচ প্রশ্ন হওয়ার কথা ছিল, ‘আমাদের জাতীয় মাছের নাম কী।’ ৭নং প্রশ্নে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশের জাতীয় পিতার নাম কী? অথচ জাতীয় পিতার স্থানে হওয়ার কথা ছিল বাংলাদেশের জাতির পিতার নাম কী? এছাড়া একই প্রশ্নপত্রে কী দিয়ে প্রশ্ন করতে কখনো ই-কার কখনো ঈ-কার ব্যবহার করা হয়েছে।

অপরদিকে, বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় শ্রেণির শারীরিক শিক্ষা পরীক্ষার প্রশ্নপত্রেও ভুল ছিল। ওই প্রশ্নের বিষয়ের নাম ভুল লেখা হয়েছে। বিষয়ের নাম হবে শারীরিক শিক্ষা কিন্তু প্রশ্নে দেয়া আছে শারীকি শিক্ষা।

খ-বিভাগের ১নং প্রশ্নে বলা হয়েছে, ‘আমামে কিভাবে দাঁড়াতে হয় দেখাও?’ প্রশ্নটি হওয়ার হওয়ার কথা ছিল, ‘আরামে কীভাবে দাঁড়াতে হয় দেখাও?’

এছাড়া ২নং প্রশ্নে বলা হয়েছে, ‘সোজা হতে বললে কিভাবে সোজা হত করে দেখাও?’ প্রশ্নটি হওয়ার কথা ছিল, ‘সোজা হতে বললে কীভাবে সোজা হবে করে দেখাও?’

এ অবস্থায় বৃহস্পতিবারের শারীরিক শিক্ষার সব শ্রেণির প্রশ্নপত্রে ভুল রয়েছে মর্মে পরীক্ষা বন্ধ রাখা হয়। পরবর্তীতে এ দুইটি পরীক্ষা গ্রহণ করা হবে বলে শিক্ষা অফিস জানায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রধান শিক্ষক বলেন, উপজেলার সব বিদ্যালয়ের পরীক্ষা অভিন্ন প্রশ্নপত্রে নেয়া হয়। এই মর্মে আমরা শিক্ষকরা প্রশ্নপত্র করে শিক্ষা অফিসে জমা দেই। উপজেলায় একটি প্রশ্নপত্র প্রণয়ন কমিটি রয়েছে। তারা যাচাই-বাছাই করে গৃহীত প্রশ্নপত্র প্রেসে পাঠান। প্রেস মূল কপি প্রুফের জন্য উপজেলা শিক্ষা অফিসে পাঠান। শিক্ষা অফিসে প্রুফের পর তা ছাপানো হয়। এত কিছুর পরেও ভুল হওয়ার কারণ জানা নেই আমার।

উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মকুল চন্দ্র বর্মন বলেন, প্রশ্নপত্র ভুল থাকায় দুটি পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে। পরবর্তীতে নতুন প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেয়া হবে।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম বলেন, প্রশ্নপত্র প্রণয়ন কমিটি দায়িত্ব পালনে অবহেলা করেছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এবার উপজেলায় ১১২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রায় ৩০ হাজার শিক্ষার্থী প্রথম সাময়িক পরীক্ষা দিচ্ছে। (জাগো নিউজ)

বার্তা কক্ষ
২৬ এপ্রিল ২০১৯

Share