রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকগুলোকে সরকারি কোষাগার থেকে এখন থেকে কোনো মূলধন দেওয়া হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। আগারগাঁওয়ে এনইসি সম্মেলনকক্ষে আজ রোববার রাষ্ট্রমালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের (এমডি) সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকের পর এক ব্রিফিংয়ে অর্থমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ঘাটতি পূরণের জন্য ব্যাংকগুলোকে এত দিন টাকা দেওয়া হলেও এখন তা অতীত। তাদের আয় করতে হবে এবং দেশের মানুষকে দেখাশোনা করেই বেতন নিতে হবে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ১০ বছরে সোনালী, অগ্রণী, জনতা, রূপালী, বেসিক ও বিডিবিএল মূলধন ঘাটতি পূরণে সরকারি কোষাগার থেকে ১৫ হাজার কোটি টাকার মতো নিয়েছে।
সুদের হার এক অঙ্কে নামানোর বিষয়ে কয়েক দিন আগে বাংলাদেশ ব্যাংককে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী। বাজার অর্থনীতিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে দিয়ে এভাবে প্রজ্ঞাপন জারি করানো যায় কি না, জানতে চাইলে মুস্তফা কামাল সাংবাদিকদের বলেন, ‘যায়। কারণ, বাজার অর্থনীতির বড় প্রবক্তা হলো যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু আমরা কী দেখলাম? যুক্তরাষ্ট্রও জরুরি প্রয়োজনে ডলার ছাপিয়েছে। এটা তাহলে কোন বাজার অর্থনীতির মধ্যে পড়ে?’
অর্থমন্ত্রী হিসেবে গত জানুয়ারিতে দায়িত্ব নেওয়ার পর মুস্তফা কামাল ঘোষণা দিয়েছিলেন, খেলাপি ঋণ এক টাকাও আর বাড়বে না। অর্থমন্ত্রীর কাছে সাংবাদিকদের প্রশ্ন ছিল, এর পরও যে খেলাপি ঋণ বেড়েছে, একে তিনি তাঁর বলে ব্যর্থতা স্বীকার করবেন কি না? জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘যদি বলেন বেড়েছে, আমি স্বীকার করব না। আমি চাই আপনারাও স্বীকার করেন যে এটা বাড়েনি।’
তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ছয় মাসে (জানুয়ারি-জুন) ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১৮ হাজার ৫১৪ কোটি টাকা। জুন পর্যন্ত হিসাবে খেলাপি ঋণ ১ লাখ ১২ হাজার ৪২৫ কোটি টাকা। অবলোপন করা ঋণের অঙ্ক যোগ করলে খেলাপি ঋণ দেড় লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।
অথচ অর্থমন্ত্রী যখন ঘোষণা দিয়েছিলেন এক টাকাও বাড়বে না, তখন খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৯৩ হাজার ৯১১ কোটি টাকা।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘যেদিন আমি বলেছিলাম খেলাপি ঋণ আর বাড়বে না, সেদিন একটি পরিকল্পনা করার কথাও বলেছিলাম। অর্থবিলে সে পরিকল্পনার কিছু বিষয় আছে। কিন্তু কার্যকর করতে পারছি না। কার্যকর করতে না পারলে কীভাবে মূল্যায়ন করবেন যে খেলাপি ঋণ বেড়েছে কি বাড়েনি?’