ফরিদগঞ্জ

যেখানেই শান্তি বিঘ্নিত সেখানেই রুখে দাঁড়াবেন : এমপি শফিকুর

চাঁদপুর-৪ (ফরিদগঞ্জ) আসনের সাংসদ মুহম্মদ শফিকুর রহমান এমপি বলেছেন, ‘ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কঠোর সিদ্ধান্তের কারণে আমরা অনেক কিছু সমাধান করতে পেরেছি। কিন্তু, সবটা পারিনি। আমাদেরকে মাদকাসক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। শান্তির জন্য লড়াই করতে হবে। যেখানে শান্তি বিঘ্নিত হবে, সেখানেই রুখে দাঁড়াতে হবে।’

রোববার (১৭ মার্চ) সকালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৯তম জন্মবাষির্কী ও জাতীয় শিশু দিবস উদযাপনে আলোচনা সভা এবং পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সাংসদ বঙ্গবন্ধুর ভাষণের শেষ দিকে দুটি লাইন উচ্চারণ করে বলেন, ‘ মুক্তি শব্দটির মাধ্যমে অথনৈতিক, রাজনৈতিক মুক্তির কথা বলা হয়েছে। এখানে বলা হয়েছে সামাজিক সাম্যের মুক্তির কথা। সমাজে যদি কেউ বিশৃঙ্খলা করে, সন্ত্রাস করে, মাদকাসক্ত ও দুর্নীতিগ্রস্থ হয়ে পড়ে তবে আমাদের দায়িত্ব হবে তা প্রতিরোধ করা।’

সন্ত্রাস প্রসঙ্গে সাংসদ বলেন, ‘সন্ত্রাস কেন হয় জানেন-‘টাকা পয়সার ভাগাভাগি নিয়ে, জমি-জামা নিয়ে, রাজনৈতিক কারণে’। প্রতিটি ক্ষেত্রে মোকাবেলা করতে হবে। ‘স্বাধীনতা এনেছি, স্বাধীনতা রাখবো’-এসব শুধু শ্লোগান দিয়ে নয়। আমাদের সন্তানদের জন্য বাসযোগ্য শান্তিময় পৃথিবী গড়ে তুলতে হবে। শান্তিময় ফরিদগঞ্জ গড়ে তুলতে চাই। একজন মুক্তিযোদ্ধার লড়াই মৃত্যু পর্যন্ত চলে, মুক্তিযোদ্ধার লড়াই শেষ হয়না। পাকিস্তানিদের তাড়িয়েছি আমরা ১৬ই ডিসেম্বর, লড়াই কিন্তু শেষ হয় নাই। অন্যায় অবিচার সমাজের কোন কোন ক্ষেত্রে আছে, সেগুলোকে তাড়াতে হবে।

আসুন সবাই মিলে ফরিদগঞ্জটাকে সুন্দরভাবে গড়ে তুলি। বিশেষ করে বিগত নির্বাচনের পর থেকে আমরা একটা সুস্থ ধারা সৃষ্টি করেছি। এই সুস্থ ধারা যাতে বিঘিœ না হয়, সে জন্য প্রশাসন সহ সকলকে রুখে দাঁড়াতে হবে। বঙ্গবন্ধুর ভাষণে আছে আপনারা সবই জানেন এবং বোঝেন।

তিনি আরো বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিলো শিশুদের জন্য বাসযোগ্য পৃথিবী গড়ে তোলা। জাতির পিতার জীবনীর সাথে শুধুমাত্র বিশ^বিখ্যাত নেতা নেলসেন ম্যান্ডেলার সাথে তুলনা করা যায়। তিনি বঙ্গবন্ধুরমত জেল খেটেছিলেন দীর্ঘকাল। তিনি উপনিবেশবাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছিলেন। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু দেশটাকে গড়তে চেয়েছিলেন। তিনি সংবিধান দিয়েছেলিন, রাস্তাঘাট চলাচলের উপযোগী করেছেন, দুর্ভিক্ষ মোকাবেলা করেছেন, ভারতের সাথে সীমান্ত চুক্তি ও সমুদ্র সীমা আইন করে দিয়েছেন। ৭৫ পরবর্তী সময়ে এদেশে উন্নয়ন অগ্রযাত্রা থেমে যায়।

উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে নবনির্মিত ফরিদগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স অডিটরিয়ামে আয়োজিত উক্ত অনুষ্ঠানে প্রশাসনিক কর্মকর্তা, বীর মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিক, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান সহ সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। আলোচনা সভার পূর্বে শিশুদের নিয়ে উপজেলা পরিষদ চত্ত্বর থেকে বণার্ঢ্য র‌্যালি বের হয় এবং জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হয়।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আলী আফরোজের সভাপতিত্বে ও সহকারী উপজেল শিক্ষা অফিসার মো. বেলায়েত হোসেনের পরিচালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন ফরিদগঞ্জ পৌর সভার মেয়র মো. মাহফুজুল হক, জেলা আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক আবুল কাসেম কন্ট্রাকটার ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ হারুনু রশিদ চৌধুরী, উপজেলা শিক্ষা অফিসার মনিরুজ্জামান, প্রেসক্লাব ফরিদগঞ্জের সভাপতি মো. মহিউদ্দিন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার শহীদ উল্ল্যাহ তপাদার, পৌর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি কামরুল হাছান সাউদ।

এদিকে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের সহযোগীতায় বঙ্গবন্ধুর জীবনীর উপর দুই বিভাগে কুইজ ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগীতা এবং শিশুদের চিত্রপটে বঙ্গবন্ধু- এ বিষয়ের উপর বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর সহযোগীতায় তিন বিভাগে বিজীয়দের মাঝে অতিথিবৃন্দ পুরস্কার বিতরণ করেন।

প্রতিবেদক- আতাউর রহমান সোহাগ
১৭ মার্চ, ২০১৯

Share