আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের বিরোধিতা করে নির্বাচন কমিশনের বৈঠক ত্যাগ করে আলোচনায় এসেছেন কমিশনার মাহবুব তালুকদার।
২০১৭ সালে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও কমিশনারদের নাম প্রকাশ করার পর মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. শফিউল আলম বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছিলেন, রাষ্ট্রপতির নিয়োগকৃত নির্বাচন কমিশনারদের মধ্যে মাহবুব তালুকদারের নাম বিএনপির তালিকায় ছিল।
অন্যদিকে, কোন কমিশনারের নাম কোন রাজনৈতিক দল দিয়েছিল সেটি বড় বিষয় নয় উল্লেখ করে তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, ‘আমি মনে করি নির্বাচন কমিশনাররা সবাই দক্ষ ও নিরপেক্ষ।’
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধনীর প্রস্তাব চূড়ান্ত করতে বসা নির্বাচন কমিশনের (ইসি) বৈঠক থেকে কমিশনার মাহবুব তালুকদার বেরিয়ে যাওয়ার পর তার সম্পর্কে পাঠকের সৃষ্ট তথ্যক্ষুধা মেটাতে তার পরিচয় তোলা হলো।
নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে তার সম্পর্কে দেয়া তথ্য বলছে, মাহবুব তালকুদার ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন এবং তিনি মুজিবনগর সরকারের তথ্যমন্ত্রী ছিলেন।
স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় তিনি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তৎকালীন রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরীর সময়ে উপসচিবের মর্যাদায় রাষ্ট্রপতির ‘স্পেশাল অফিসার’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর আরেক রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ উল্লাহর সময়ে রাষ্ট্রপতির জনসংযোগ কর্মকর্তা ছিলেন।
দেশের প্রথম চার রাষ্ট্রপতির দফতরে জনসংযোগ কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহকারী প্রেসসচিব হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
এছাড়া মাহবুব তালুকদার বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। চাকরির শেষ সময়ে ১৯৯৮ সালে তিনি জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৯৯ সালে সরকারি চাকরি থেকে অবসর নেন তিনি।
সর্বশেষ ২০১৭ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারিতে মাহবুব তালুকদার, কে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বে গঠিত পাঁচ সদস্যের বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের সদস্য হিসেবে রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ কর্তৃক নিয়োগ পান।
এছাড়া লেখক হিসেবেও সব মহলে বেশ পরিচিত তিনি। কবিতা এবং উপন্যাসসহ এখন পর্যন্ত তার প্রায় ৪৪টি বই প্রকাশিত হয়েছে। ২০১২ সালে তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার পেয়েছেন।
মাহবুব তালুকদার মূলত একজন সৃজনশীল লেখক। ৬০ বছরের অধিকাল যাবৎ তিনি উপন্যাস, গল্প, কবিতা, ছড়া, প্রবন্ধ, নাটক ও শিশু সাহিত্য রচনা করছেন। বর্তমানে তাঁর গ্রন্থ সংখ্যা ৪৪। উল্লেখযোগ্য হলো ‘বঙ্গভবনে পাঁচ বছর’ ইউপিএল থেকে প্রকাশিত সুবর্ণ জয়ন্তী (গল্পগ্রন্থ) ও সুপ্রভাত আমেরিকা (ভ্রমণ কাহিনি)।
১৯৪২ সালে জন্মগ্রহণ করা মাহবুব তালুকদার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে অধ্যয়ন করেছেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে একই বিষয়ে শিক্ষকতা করেছেন ১৯৬৮ থেকে ১৯৭০ পর্যন্ত। তার গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনা জেলার পূর্বধলায়। (তথ্যসূত্র : সময় টিভি, প্রথম আলো)
বার্তা কক্ষ
২৫ ডিসেম্বর, ২০১৮