চাঁদপুর সদরের রামপুর ইউনিয়নের ছোটসুন্দর বাজারের অর্ধ-কি.মি.দক্ষিণে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত বগার গুদাড়ায় ডাকাতিয়া নদীর ওপর ৪২ কোটি টাকা ব্যয়ে ভাষাবীর এমএ ওয়াদুদ সেতুর কাজ দ্রুত চলছে।
ইতোমধ্যেই ৬৫ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে বলে স্থানীয় সরকার বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো.মুজিবুর রহমান চাঁদপুর টাইমসকে বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) এ তথ্য জানান ।
এর মধ্যে ব্রিজ নির্মাণ বাবত ৩৬ কোটি টাকা এবং দু’পাড়ের জমি অধিগ্রহণে ৬ কোটি টাকা ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে। এক পাড়ে চাদঁপুর সদরের রামপুর ইউনিয়নের অংশ। এর দৈর্ঘ্য ২৭৫ শ’ মিটার এবং অপর পাড়ে ফরিদগঞ্জ উপজেলার বালিথুবা ইউনিয়নের অংশ যার দৈর্ঘ্য ৪শ’ মিটার ।
প্রসঙ্গত, ২০১৭-১৮ অর্থবছরের ১১ ফেব্রুয়ারি ভাষাবীর এম এ ওয়াদুদের সুযোগ্য কন্যা শিক্ষামন্ত্রী ডা.দীপু মনি এমপি চাঁদপুরের অংশ ও ফরিদগঞ্জ আসনের সাবেক সাংসদ ড.শামছুল হক ভূঁইয়া ফরিদগঞ্জ উপজেলার বালিথুবা ইউনিয়নের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করেন।
২০১৬-১৭ অর্থবছরে এর কাজ শুরু হলেও বিগত বর্ষায় ও অসময়ের বৃষ্টিপাতের কারণে ডাকাতয়িার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রায় ৫-৬ মাস যাবত ব্রিজটির কাজ বন্ধ ছিল।
ব্রিজটির দৈর্ঘ্য ২ শ’৭৪ মিটার ও প্রস্থ ৯ দশমিক ৬০ মিটার । শিক্ষামন্ত্রী ডা.দীপু মনি এমপির পিতা ভাষাসৈনিক মরহুম এম.এ ওয়াদুদের নামানুসারে ব্রিজটির নামকরণের প্রস্তাব রয়েছে। চাঁদপুরের‘স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ’(এলজিইডি) এর কাজ বাস্তবায়ন করছে। দু’জন সহকারী প্রকৌশলী এ কাজে তদারকি করছেন।
৪ টি বড় ও ১০ টি ছোট আরসিসি পিলারের ওপর ব্রিজটি নির্মাণ হচ্ছে। ২ টির কাজ শেষ হয়েছে বাকি ২ টির কাজ চলছে । এর উভয় এ্যাপ্রোস রোডের দৈর্ঘ্য ৬৭৫ মিটার। ইতোমধেই যেসকল বড় বড় ব্রিজ নির্মিত হয়েছে এটি হবে অন্যতম বৃহৎ ব্রিজ।
ব্রিজটি নির্মাণ হলে চাঁদপুর সদরের রামপুর ইউনিয়নের সাথে অবহেলিত বালিথুবা ইউনিয়নের ইসলামপুরের অংশের সাথে চমৎকার সংযোগ সৃষ্টি হবে। অনাদিকাল থেকেই এপারের লোকজন ওপার ও ওপারের লোকজন এপার সামাজিক আচার, অনুষ্ঠানের, হাট-বাজার, ব্যবসা-বাণিজ্য ও কৃষি পণ্য বাজার করতে ওপারে চলাচল করত।
এক সময় শত শত কলেজ শিক্ষার্থী দূর-দুরান্ত থেকে পাঁয়ে হেঁটে এ স্থান দিয়ে পার হয়ে চাঁদপুর কলেজে আসা-যাওয়া করতো এবং বিভিন্ন চাকুরিজীবীরা এসে ট্রেনে দেশের বিভিন্ন জেলায় যাতায়ত করত। ফলে কালক্রমে এর নাম বগারগুদারা হয়ে যায় ।
স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় এ বগার গুদাড়া দিয়ে সন্ধ্যা হলে ওপারে গিয়ে সাধারণ মানুষ নিরাপদ আশ্রয় নিত এবং মুক্তিযোদ্ধাদের অন্যতম একটি চলাচলের নিরাপদ পথ ছিল বগার গুদাড়া।
সুন্দরদিয়ার বাজারের অর্ধ-কি.মি দক্ষিণে ডাকাতিয়া নদীর পূর্ব তীরে এ বগারগুদার অবস্থিত। ব্রিজটির নির্মাণ ব্যয় ও তত্ত্বাবধানে আছে চাঁদপুরের স্থানীয় সরকার প্রকৗশলী বিভাগ। ঢাকার প্রথম শ্রেণীর ঠিকাদার নবারণ টেড্রার্স লি.এর বাস্তবায়ন করছে।
নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মুজিবুর রহমান চাঁদপুর টাইমসকে বলেন,‘এ পর্যন্ত ব্রিজের ৬৫ ভাগ কাজ শেষ হলো। আশা করছি ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের ডিসেম্বরের মধ্যে বাকি কাজ শেষ হবে।’
প্রতিবেদক : আবদুল গনি
৪ এপ্রিল ২০১৯