চাঁদপুর-৫ (হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তি) আসনে মাঠপর্যায়ে সক্রিয় আছেন বিএনপির দুজন নেতা। কিন্তু একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার জন্য দলটির মনোনয়ন ফরম কিনেছেন ৯ জন। নেতা-কর্মীদের ভাষ্য, অনেক নেতা পরিচিত হওয়ার জন্য ফরম কিনেছেন। এঁরা এবারই ভোট করার জন্য ফরম নেননি।
মাঠে সক্রিয় ওই দুজন হলেন জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মমিনুল হক ও সাবেক সাংসদ এম এ মতিন। বর্তমানে হাজীগঞ্জ ও শাহরাস্তি উপজেলা নিয়ে গঠিত এ আসনটিতে বিএনপির রাজনীতি এই দুই নেতার নেতৃত্বে বিভক্ত।
এ আসনে বিএনপির অন্য মনোনয়নপ্রত্যাশীরা হলেন কেন্দ্রীয় তাঁতী দলের সহসভাপতি মো. জাহাঙ্গীর আলম, হাজীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মো. আলমগীর কবির পাটওয়ারী, শাহরাস্তি উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামাল, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি বিল্লাল হোসেন, কেন্দ্রীয় যুবদলের নির্বাহী কমিটির সদস্য মো. মিজানুর রহমান, সৌদি আরবপ্রবাসী ফারুক হোসেন মোল্লা ও হাইকোর্টের আইনজীবী মো. কামাল হোসেন।
এঁদের মধ্যে মোস্তফা কামাল বলেন, ‘অনেকে মনোনয়ন ফরম কিনেছেন পরিচিত হওয়ার জন্য। আমিও মনোনয়ন কিনেছি, তবে নির্বাচনের জন্য নয়। এ আসনের তিনবারের সাংসদ ছিলেন এম এ মতিন। আমার বিশ্বাস, এ আসনে এম এ মতিনকে মনোনয়ন দেওয়া হবে। সাধারণ জনগণ ও তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের কাছে তিনি অত্যন্ত জনপ্রিয়।’
নেতা-কর্মীরা বলেন, এম এ মতিন ১৯৭৯, ১৯৯১ ও ২০০১ সালে বিএনপি থেকে সাংসদ নির্বাচিত হন। মমিনুল হক ২০০৮ সালের দলের টিকিটে নির্বাচন করে আওয়ামী লীগের প্রার্থী অবসরপ্রাপ্ত মেজর রফিকুল ইসলামের কাছে পরাজিত হন। পরে মমিনুল হক জেলা বিএনপির সভাপতি হন। এরপর মতিনের নেতা-কর্মীরা কোণঠাসা হয়ে পড়েন। ২০১৪ সালে কেন্দ্র থেকে জেলা বিএনপির কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়। শেখ ফরিদ আহমেদ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হন।
তিনি হাজীগঞ্জ ও শাহরাস্তিতে মমিনুলের অনুসারী বিএনপির কমিটি ভেঙে দেন। তিনি মতিনের অনুসারী নেতা-কর্মীদের দিয়ে এ দুই উপজেলায় আহ্বায়ক কমিটি গঠন করেন। এবার সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কেন্দ্র থেকে মমিনুল ও শেখ ফরিদের দ্বন্দ্ব নিরসন করা হয়। সর্বশেষ ১১ নভেম্বর ওই দুই উপজেলার বিএনপির কমিটি ভেঙে দেন ফরিদ। তিনি মমিনুলের অনুসারীদের নিয়ে আহ্বায়ক কমিটি করে দিয়েছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে পাঁচজন নেতা বলেন, ২০০৮ সাল থেকে এ পর্যন্ত হাজীগঞ্জ ও শাহরাস্তি উপজেলায় বিএনপির নেতা-কর্মীদের নামে এক শয়ের বেশি মামলা হয়েছে। এসব মামলার বাদী পুলিশ ও সরকারদলীয় নেতা-কর্মীরা। হামলা-মামলায় নেতা-কর্মীদের পাশে থাকায় মমিনুল হক এ আসনে বিএনপির অপ্রতিদ্বন্দ্বী নেতা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন। আর এম এ মতিন তিনবারের সাংসদ হিসেবে নেতা-কর্মীদের কাছে প্রিয় হলেও বর্তমানে বার্ধক্যজনিত কারণে রাজনীতির মাঠে পিছিয়ে রয়েছেন।
হাজীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান বলেন, এ আসনে মমিনুল হকের মনোনয়ন চূড়ান্ত হয়েছে। এখন আনুষ্ঠানিক ঘোষণার বাকি মাত্র। দল থেকে অন্য যাঁরা মনোনয়ন কিনেছেন, তাঁদের বেশির ভাগই নেতা-কর্মীদের কাছে অপরিচিত মুখ। (প্রথম আলো)