যাত্রীদের নিরাপত্তার দিক চিন্তা না করে নিজেদের ইচ্ছা মত ওভার লোড করে যাত্রী নিয়ে ঢাকা অভিমুখে যাত্রা করছে। এতে করে যে কোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে যাত্রীদের প্রান হানীর আশংকা রয়েছে।
সোমবার (১০ জুন) সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত প্রতিটি লঞ্চ তাদের ৮/৯শ” যাত্রী ধারণ ক্ষমতা থাকলেও তারা দ্বিগুণ যাত্রী নিয়ে ঢাকায় আসছে। অতিরিক্ত যাত্রী বহনে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন চাঁদপুর কোস্টগার্ডের দায়িত্বরত কর্মকর্তা মো: মাইনুল ইসলামসহ কোস্ট গার্ডের সদস্যরা।
রোববার রাত ১২টা ১৫ মিনিটে চাঁদপুর থেকে ছেড়ে যাওয়া লঞ্চ এমভি ময়ুর-৭ অতিরিক্ত যাত্রীর কারনে রাত ১১টায় ধারন ক্ষমতার ৩ গুণ যাত্রী নিয়ে চাঁদপুর নৌ-টামিনাল ত্যাগ করে।
চাঁদপুর নৌ-টার্মিনালে কর্মরত নামপ্রকাশ না করা সত্বেও একাধিক লঞ্চ সুভার ভাইজার জানান, সকাল থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত প্রতিটি লঞ্চ ধারন ক্ষমতার ৩/৪ গুন যাত্রী নিয়ে চাঁদপুর থেকে ঢাকার দিকে গিয়েছে।
সোমবার (১০ জুন) দুপুরে সরেজমিন লঞ্চঘাট গিয়ে দেখাগেছে, নির্ধারিত সময়ের আগে লঞ্চগুলোর স্বাভাবিক নিয়মানুযায়ী যাত্রী হলেও ছাড়ছে না। নির্দিষ্ট সময়ে প্রায় দুই হাজার যাত্রী নিয়ে ছাড়ছে লঞ্চগুলো। সকাল থেকে এমভি সোনারতরী, এমভি রফ রফ, এমভি ঈগল,এমভি আবে জমজম, এমভি প্রিন্স অব রাসেল, মেঘনা রানী ও বোগদাদিয়া-৭ অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে চাঁদপুর ঘাট ছেড়েছে।
লঞ্চ মালিক প্রতিনিধি রুহুল আমিন জানান, চাঁদপুর-ঢাকা-চাঁদপুর নৌরুটে ভ্রমন আরামদায়ক হওয়ার কারণে যাত্রীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। বর্তমানে এরুটে ২২টি বিলাসবহুল লঞ্চ যাতায়াত করে। চাঁদপুরজেলাসহ পাশ^বর্তী জেলা নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর ও শরীয়তপুর জেলার আংশকি মানুষ এখন এরুটে যাতায়াত করেন। ঈদুল ফিতরের ছুটি শেষে এখন কর্মমূখী মানুষগুলো নিজ গন্তব্যে ফেরার জন্য লঞ্চেই যাওয়া শুরু করেছেন।
চাঁদপুর বন্দর ও পরিবহন কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক জানান, চাঁদপুর লঞ্চঘাট থেকে যাতে কোন লঞ্চ অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে না যেতে পারে, সে ব্যাপারে আমরা সর্তক। তবে অতিরিক্ত যাত্রীর চাপ বেড়েছে রোববার থেকে। এ ঘাটের যাত্রীদের সার্বিক নিরাপত্তার জন্য নৌ-পুলিশ, কোস্টগার্ড, স্কাউট সদস্যসহ আমাদের লোকজন সার্বক্ষনিক কাজ করছেন।
কর্মমূখী মানুষ ঈদের ছুটি শেষে কর্মস্থলে যাবেন এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু অতিরিক্ত যাত্রী হয়ে যেন দুর্ঘটনার ঝুঁকিতে না পড়েন সে বিষয়ে লঞ্চ মালিক ও বিআইডাব্লিউটিএর দায়িত্বরতদের আরো সতর্ক হওয়া প্রয়োজন।
লঞ্চ মালিক প্রতিনিধি বিপ্লব সরকার জানান, যাত্রীদের না উঠার জন্য নিষেধ করলেও তারা জোরপূর্বক লঞ্চে উঠছে। এই কারণে নির্দিষ্ট যাত্রীর চাইতে অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে লঞ্চগুলো চাঁদপুর থেকে ছেড়ে যাচ্ছে। যাত্রীর চাপ থাকায় যাত্রী পারা পারের জন্য ২টি ম্পেশাল লঞ্চ দেওয়া হয়েছে।
ঈগল, ময়ুর, বোগদাদীয়া, ইমাম হাসান সহ কয়েকটি লঞ্চের চাঁদপুর ঘাটের দায়িত্বরত মালিক প্রতিনিধি আলী আজগর সরকার জানান, যাত্রীদের লঞ্চে না উঠার জন্য বারণ করলেও তাদেরকে থামিয়ে রাখা যায় না। তারা জোড় করে লঞ্চে উঠে। যার ফলে লঞ্চগুলো নির্ধারিত সময়ের আগেই ঘাট ত্যাগ করছে।
চাঁদপুর বন্দর ও পরিবহন কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক জানান, স্বাভাবিকের চাইতে বেশী যাত্রী যাচ্ছে। ওভারলোডিংও হচ্ছে। সেটি সহনিয় পর্যায়ে রয়েছে। সিডিউল মোতাবেক লঞ্চ না আসায় সিমিত লঞ্চ হওয়ায় আমরা অতিরিক্ত যাত্রী বহনের সুযোগ দিচ্ছি। বর্তমান সময়ে ঈদুল ফিতরের পর অতিরিক্ত যাত্রী বহন অপরাধ হলেও লঞ্চ সীমিত হওয়ায় জরিমানা করা হচ্ছে না।
প্রতিবেদক- মনিরুজ্জামান বাবলু
১০ জুন ২০১৯