পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) কাজী আ খ ম মহিউল ইসলাম বলেন, পরিবার পরিকল্পনার ক্লিনিকগুলোতে ডেলিভারি মানসম্মত সেবা দেয়া হয়। এই সেবা নেয়ার জন্য জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। আমরা চাই না নবজাতক বাসায় ডেলিভারি হউক। কারণ এই পদ্ধতিতে ভয়াবহতাই বেশি থাকে। বাসায় ডেলিভারি হলে যে ধরণের সমস্যার সৃষ্টি হয়, এসব বিষয়গুলো আমাদেরকে অবহিত করতে হবে। কোন রোগী যেন সেবা নিতে এসে খালি হাতে না ফিরে।
মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) সকাল থেকে শহরের এলিট চাইনিজ রেষ্টুরেন্টে দিনব্যাপী ‘পরিচালকদের জন্য দক্ষতা বৃদ্ধি এবং কর্মক্ষমতা মূল্যায়নে কর্মীদের তথ্য সম্পর্কিত বিষয়ক’ জেলা পর্যায়ের কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, এই ধরণের কর্মশালায় যে ধরণের পরামর্শ আসবে, সেগুলোকে গুরুত্বসহকারে সঠিকভাবে পালন করতে হবে। আমরা এইসব বিষয়ে যতই সভা কিংবা কর্মশালা হয়, পালন না করলে কোন লাভ হবে না।
অতিরিক্ত সচিব বলেন, পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের মা ও শিশু স্বাস্থ্যসেবায় নিয়োজিত সারাদেশে ৫৭৬টি ভবন পুনঃসংস্কার করার জন্য জরুরি ভিত্তিতে উদ্যোগ নেয়া হয়ছে। নতুন অবকাঠামগত উন্নয়ন হলে ক্লিনিকে ডেলিভারি ও অপারেশন থিয়েটারগুলো শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত থাকবে। এছাড়াও কাজের সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রপাতি দেয়া হবে এবং ক্লিনিকের জন্য নিরাপত্তা কর্মীর ব্যবস্থা করা হবে।
কাজী আ খ ম মহিউল ইসলাম আরো বলেন, মা ও শিশু স্বাস্থ্য ক্লিনিকে যেসব গর্ভবতী মা সেবা নিতে আসেন, ওইসব মা, চিকিৎসক, নার্স ও রোগীকে নিয়ে আসা মাধ্যম ব্যক্তিদের সম্মানি দেয়ার পরিকল্পনাও গ্রহণ করা হয়েছে। যাতে করে তারা সরকারি এইসব প্রতিষ্ঠান থেকে সেবা নিতে আগ্রহী হন।
সচিব বলেন, চাঁদপুরের পরিবার পরিকল্পনা বিভাগ যোগ্য নেতৃত্বে ভাল মানের কাজ করে যাচ্ছে। এই জেলায় যেভাবে উৎসাহ উদ্দীপনার মাধ্যমে কাজ করা হচ্ছে। তার ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হবে। ঝিমিয়ে পড়লে চলবে না। যারা ভাল কাজ করবে, সেই যে ধরণের কর্মকর্তাই হউক তাদেরকে অভিজ্ঞাতার জন্য বিদেশ ভ্রমনের ব্যবস্থা করা হবে। বর্তমানে সারাদেশে লক্ষাধিক ডেলিভারি হয় মা ও শিশু স্বাস্থ্য ক্লিনিকে। আগামীতে এই কার্যক্রম উন্নতি করা হবে। ১০ লাখ মাকে আমাদের ক্লিনিকগুলোতে ডেলিভারি করার লক্ষ্য নিয়ে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে।
তিনি বলেন, কাজের ক্ষেত্রে আমরা একে অপরকে সহযোগিতা ও বিশ^াস করতে হবে। পেশাগত কাজে সততা ও দেশপ্রেম অবশ্যই থাকতে হবে।
কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের পরিচালক (এমসিএইচ সার্ভিসেস) এবং লাইন ডিরেক্টর (এমসিআরএএইচ) ডাঃ মোহাম্মদ শরীফ।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মো. মাজেদুর রহমান খান। তিনি বক্তব্যে বলেন, আমাদের দায়িত্ব ঠিকমত পালন করতে হবে। নিজের পদ ছাড়াও অন্যের পদেরও কাজ করা যায়। আন্তরিকভাবে সবাই মিলে সেবার কাজগুলো করতে হবে। এই ধরণের কার্যক্রমের পাশে জেলা প্রশাসন সব সমইয় থাকব। চাঁদপুরের মা ও শিশু স্বাস্থ্য সেবা কার্যক্রমের প্রশংসা করেন জেলা প্রশাসক।
চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডাঃ এম.এ.গফুর মিয়ার সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের উপরিচালক ডাঃ মো. ইলিয়াছ।
প্রশিক্ষণ প্রদান করেন প্রশিক্ষক প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডাঃ এবিএম শামছুদ্দিন আহমেদ এবং ডুকুমেন্টারি প্রদর্শন করেন ন্যাশনাল কনসালটেন্ট ডাঃ রোকসান নানজিন।
কর্মশালায় চাঁদপুর পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের আওতাধীন ক্লিনিক ও স্বাস্থ্যসেবায় নিয়োজিত বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিবেদক : মাজহারুল ইসলাম অনিক, ৬ নভেম্বর ২০১৯