কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া জীবনে প্রথমবারের মত হাসপাতালে ঈদ করলেন। এর আগে চারবার কারাগারে ঈদ পালন করেছেন তিনি। এ নিয়ে পঞ্চমবারের মতো কারা হেফাজতে ঈদ করলেন সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বর্তমানে কারাগারে অবস্থান করছেন। তবে চিকিৎসার জন্য বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার এবারের ঈদ কাটছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে। কেবিন ব্লকের ষষ্ঠ তলায় রয়েছেন তিনি। সেখানে স্বজনদের নিয়ে দুপুরের খাবার খেয়েছেন খালেদা।
৫ই জুন বুধবার ঈদের দিন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে হাসপাতালেই দেখা করেন পরিবারের সদস্য ও স্বজনেরা। কারা কর্তৃপক্ষের কাছে দেখা করার অনুমতি পেয়ে বিএনপির চেয়ারপারসনের জন্য বাসা থেকে রান্না করা খাবার নিয়ে যান তারা।
স্বজনরা খালেদার জন্য পোলাও, মুরুগির রোস্ট, রেজালাসহ বিভিন্ন মাছে ভাজা, দুধ-সেমাই ও মিষ্টি নিয়ে যান। এ সময় তাদের হাতে গোলাপের তোড়াও ছিল।
হাসপাতালের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানায়, বিএসএমএমইউতে তার কেবিনে একটি চেয়ার, একটি টেবিল, একটি বেড, ড্রেসিং টেবিল রয়েছে। গৃহকর্মী ফাতেমা বেগম থাকেন পাশের আরেকটি কক্ষে। এই ফাতেমাই তার সেবাশুশ্রূষা করেন।
উল্লেখ্য, খালেদা জিয়া গত বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কারাবন্দি। শারীরিক অসুস্থতার কারণে তাকে বিএসএমএমইউতে ভর্তি করা হয়। বিএনপি চেয়ারপারসনের গত দুটি ঈদ পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারের একটি কক্ষে কাটলেও এবার কাটছে হাসপাতালে।
মঙ্গলবার (৪ জুন) ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মাহবুব আলম গণমাধ্যমকে বলেন, একজন বন্দির মতো খালেদা জিয়া কারা জেল কোড অনুযায়ী খাবার পাবেন। ঈদের দিন অনুমতি সাপেক্ষে পরিবারের সদস্যরা তার সঙ্গে দেখা করতে পারবেন। সেদিন তারা বেগম জিয়ার জন্য খাবারও নিয়ে আসতে পারবেন। কারা কর্তৃপক্ষ সেসব খাবার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাকে খেতে দেবে।
কারাগারের দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, ঈদের দিন সকালে খালেদা জিয়াকে ঢাকা কেন্দ্রীয় (কেরানীগঞ্জ) কারাগারের কারারক্ষীদের তৈরি পায়েস, সেমাই ও মুড়ি দেয়া হয়। তার খাবার তৈরি হয় চিকিৎসকের পরামর্শ ও ডায়েট চার্ট অনুযায়ী।
খালেদা জিয়ার দুপুরের খাবারে ভাত অথবা পোলাও রাখা হয়েছে। ভাত অথবা পোলাও এর সঙ্গে তার জন্য বরাদ্দ রয়েছে ডিম, রুই মাছ, মাংস আর আলুর দম।
এসব মেন্যুর বাইরে বেগম খালেদা জিয়া অন্য কোনো খাবার খেতে চাইলে তা কারা কর্তৃপক্ষকে অবহিত করতে পারবেন। কিন্তু সেসব খাবার তাকে কারা কর্তৃপক্ষ দিতে বাধ্য নয় বলে জানিয়েছে কারা কর্তৃপক্ষ।
খালেদা জিয়া ১৯৮২ সালের ৩ জানুয়ারি রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার পর কয়েকবার গ্রেফতার হন। এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সময় ১৯৮৩ সালের ২৮ নভেম্বর, ১৯৮৪ সালের ৩ মে, ১৯৮৭ সালের ১১ নভেম্বর তিনি গ্রেফতার হন। তবে তখন তাকে বেশিদিন বন্দি থাকতে হয়নি।
এবার ঈদের দিন দলের সিনিয়র নেতারা প্রথমে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রয়াত জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারত করেন। এরপর কারাবন্দি খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে বিএসএমএমইউ যান। সেখান থেকে বনানীতে খালেদা জিয়ার কনিষ্ঠ ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর কবর জিয়ারত করেন।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় ১৭ বছর দণ্ডিত খালেদা জিয়া। গত বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে তিনি কারাবন্দি।
নিউজ ডেস্ক : আপডেট, বাংলাদেশ সময় ০২:৫০ পি.এম, ০৬ জুন ২০১৯
ইব্রাহীম জুয়েল