কচুয়া

প্রধানমন্ত্রীর সাবেক দেহরক্ষী কচুয়া থানার এএসআই

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০১-২০০৭ সাল পর্যন্ত দেশের বিরোধী দলীয় নেত্রী থাকাকালীন তাঁর দেহরক্ষী হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন মো.আমজাদ হোসেন চৌধুরী। বর্তমানে তিনি চাঁদপুরের কচুয়া থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই)।

মো. আমজাদ হোসেন চৌধুরী ১৯৬৭ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর বি-বাড়িয়া জেলাধীন কসবা উপজেলার সৈয়দাবাদ গ্রামে জন্ম গ্রহন করেন। ৫ ভাই ও ২ বোনের মধ্যে তিনি তৃতীয় । তিনি ১৯৮৬ সালের ৫ অক্টোবর বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর একজন সদস্য হিসেবে যোগদান করেন।

পারিবারিক জীবনে তিনি ৩ ছেলে ও ১ মেয়ের জনক। তার বড় ছেলে মো.আমির হোসেন চৌধুরী মার্সেনডাইজে অর্নাস, ২য় ছেলে আফজাল হোসেন ৩য় ছেলে রায়হান চৌধুরী ফ্যাশন ডিজাইনার এবং একমাত্র মেয়ে আরাবিয়া চৌধুরী ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট গালর্স স্কুল থেকে চলতি বছরের এইচএসসি পরীক্ষার্থী।

বনার্ঢ্য কর্মময় জীবনে তিনি পরিশ্রম, সততা, নিষ্ঠা ও সাহসীকতার সাথে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর স্পেশাল ব্যাঞ্চ ঢাকা, ডিএমপিসহ বিভিন্ন ইউনিটে দায়িত্ব পালন শেষে বর্তমানে তিনি চাঁদপুরের কচুয়া থানার এএসআই হিসেবে ১৭ মাস সততা ও সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।

একান্ত আলাপকালে চাঁদপুর টাইমসকে জানান,বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে যোগদানের সময় শপথ নিয়ে ছিলাম সততা ও নিষ্ঠার সাথে অর্পিত দায়িত্ব পালনের। তার এই প্রতিক্ষার পুরষ্কার হিসেবে ২০০১- ২০০৭ সাল পর্যন্ত বর্তমান প্রধানমন্ত্রী তৎকালিন বিরোধী দলের নেত্রীর গানম্যান (দেহরক্ষী) হিসেবে নিয়োজিত ছিলাম।

তৎকালিন ২০০৪ সালের ভয়ানক ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার সময় তিনি দায়িত্বরত অবস্থায় ছিলেন। বিকট শব্দের আওয়াজে শত শত নেতা-কর্মীরা ছুটাছুটি করার ঠিক সেই মুহুর্তে কাছে পান তৎকালিন বিরোধী নেত্রীর এপিএস আলাউদ্দিন নাছিম ও পিএস নজরুল ইসলাম খানকে।

আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠিয়ে বিরোধী দলীয় নেত্রীকে সাথে নিয়ে দ্রুত তার বাসা সুধাসদনে যান তিনি।

বর্তমানে কচুয়া থানার এএসআই মো.আমজাদ হোসেন চৌধুরী হৃদরোগে অনেকটা আক্রান্ত। ইতিমধ্যে দু’বার তিনি ষ্ট্রোক করে মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়েন। অর্থের অভাবে উন্নত চিকিৎসা নিতে পারছেন না।

এ অবস্থায় তার কর্ম পরিচালনা, পরিবারের দায়িত্বভার ও সন্তানদের লেখাপড়ায় উচ্চতর ডিগ্রির জন্য আর্থিক অভাব অনটনের মধ্যেও সরকারের সামান্য বেতনে অসুস্থ অবস্থায় তার উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন ও সন্তানদের লেখাপড়া করিয়ে যাচ্ছেন।

তিনি বলেন, চাকুরি করে বড় বাড়ী-গাড়ীর মালিক হওয়ার কোনো ইচ্ছা নেই।

তবে সৎ ভাবে বেঁচে থাকতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পুলিশ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সার্বিক সহযোগিতায় আমার যে কোন একজন সন্তানকে আসন্ন এসআই নিয়োগে এসআই হিসেবে নিয়োগ দিতে সহযোগিতা চাই।

তিনি আরো বলেন, তৎকালিন সময়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের বিরোধী দলীয় নেত্রী থাকা কালীন তাঁর দেহরক্ষী হিসেবে নিযুক্ত ছিলাম। বর্তমানে আওয়ামীলীগ ৩ বার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় এসে দেশের ও পুলিশ বাহিনীর অনেক সুযোগ সুবিধা করে দিয়েছেন। আমি কখনো তাঁর কাছে যাইনি। ব

র্তমানে আমার একটাই চাওয়া, আমার অভাবি সংসারের হার ধরতে আমার একটি ছেলেকে এসআই পদে চাকুরি দেয়ার। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে দেখা করে এটাই বলতে চাই।

সর্বশেষ কচুয়ায় দীর্ঘ ১৭ মাসের কর্ম জীবনে একজন হাস্যোউজ্জল সৎ ও দায়িত্ববান কর্মকর্তা হিসেবে সকলের কাছে তিনি পরিচিত।

তিনি তার সন্তানদের সু-শিক্ষা গ্রহনের মাধ্যমে ভালো মানুষ হিসেবে উচ্চ শিক্ষা গ্রহন ও তার সন্তানকে উপ-পরির্শদক (এসআই) হিসেবে সুযোগ দেয়ার জন্য মানর্নীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ বাংলাদেশ পুলিশ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সার্বিক সহযোগিতা চেয়েছেন।

প্রতিবেদক:জিসান আহমেদ নান্নু
১০ এপ্রিল,২০১৯

Share