কচুয়া

কচুয়ায় বসত ঘরের আঙিনায় মাজার বানিয়ে দম্পতির প্রতারণার ফাঁদ

চাঁদপুর কচুয়ায় উপজেলার ১২নং আশ্রাফপুর ইউনিয়নের চক্রা গ্রামে বসত ঘরের আঙিনায় কথিত মাজার তৈরি করে এক দম্পতির বিরুদ্ধে প্রতারণা করার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে।

বৃহস্পতিবার (১০ জানুয়ারি) দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে এর সত্যতা পাওয়া গেছে।

ওই গ্রামের আনোয়ার হোসেন, আহসান হাবীব, সোহেল, আবু হানিফ, রফিক, ফরহাদ হোসেনসহ এলাকার স্থানীয় লোকজন জানান, এই স্থানে পূর্বে কোনো মাজার কিংবা কবর ছিল না।

প্রায় ২ মাস আগে ওই গ্রামের মৃত টুকু মিয়ার ছেলে আ:মমিন খন্দকার, তার ২য় স্ত্রী রোকেয়া বেগম চক্রা গ্রামের বেনুচো নতুন বাড়িতে ঘরের সমানে দু’টি নতুন কবর তৈরি করে চারদিকে লালসালু ও কয়েকটি ছবি টানিয়ে দেন। এ সংবাদ এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে সাধারণ লোকজনের মাঝে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়।

আ: মমিনের ২য় স্ত্রী রোকেয়া বেগমের প্ররোচনায় গত ২৯ নভেম্বর রাতে মমিন ও রোকেয়ার সহযোগী সুফিয়া বেগম, আফিয়া বেগম ও রাহেলা বেগমসহ কিছু অতি উৎসাহী লোকের সহায়তা তার ঘরের সামনে মাটি দিয়ে দুটি নতুন কবর তৈরি করে আধ্যাত্মিক ভাবে মাজার হয়েছে বলে প্রচারণা চালায়।

এটি এলাকার সাধারণ মানুষকে ধোঁকা দেয়ার জন্যে কবরের মতো তৈরি করেছে বলে এলাকাবাসী দাবি করেন।

এলাকাবাসী এটিকে ভূয়া মাজার দাবি করে, এটি নিয়ে তারা স্বামী-স্ত্রী যাতে কোনো প্রতারণা কিংবা ফায়দা লুটতে না পারে অচিরেই তা বন্ধ করতে প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেছেন।

আ: মমিনের প্রথম স্ত্রী নাছিমা বেগম জানান, ‘এই বিষয়ে মুখ খুলতে নিষেধ রয়েছে। এটি কোনো আধ্যাত্মিক ব্যক্তির নামে মাজার কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি আমার স্বামী ও তাঁর ২য় স্ত্রী রোকেয়া বেগম ভালো জানেন।

তিনি জানান এখানে পূর্বে কোনো কবর ছিলনা এবং মাঝে মধ্যে এখানে হালকা জিকির ওয়াজের ব্যবস্থা করা হয়।’

এ ব্যাপারে রোকেয়া বেগম মুঠোফোনে জানান, আমার স্বামী আ.মমিন ও আমি ফরিদপুরের আটরশির মুরিদ (ভক্ত)। আমার স্বামী আ: মমিন খন্দকার কচুয়া-ঢাকা সড়কের সুরমা বাসের সুপারভাইজার। আমরা নারায়নগঞ্জে বসবাস করি। আমি বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মাজারে যাই। আমাকে স্বপ্নে দেখানোর ফলে আমি এটি করে তাদের আশ্রয় দিয়েছি। তবে কোন ধরনের প্রতারণার উদ্দেশ্য এটি করি নাই। শুধু মাত্র স্বপ্নে দেখানোর ফলে তাদের আশ্রয় দেয়ার জন্য করেছি।’

এগুলো কি জানতে চাইলে তিনি বলেন, এগুলো আলগা (জিন) জাতীয়। এগুলো দিয়ে কারো কাছ থেকে কোনো টাকা পয়সা নেয়নি বলে তিনি দাবী করেন।

আশরাফপুর ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদ এলাহী সুবাস জানান, ‘চক্রা গ্রামে আধ্যাত্মিক মাজার উঠার বিষয়ে আমার জানা নেই।’

কচুয়া থানার ওসি মো. আতাউর রহমান ভূঁইয়া বলেন, চক্রা গ্রামে আধ্যাত্মিক মাজার উঠার বিষয়ে জানা নেই, তবে এখানে কোন প্রতারনা হয় কিনা তা খোজ খবর নিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, কচুয়া
১০ জানুয়ারি, ২০১৯

Share