জীবিকার তাড়নায় কর্মব্যস্ত মানুষ যখন ক্লান্ত হয়ে গৃহে ফেরে। ঠিক তখন কারো আবার কর্মের প্রস্তুতি শুরু হয়। দিনভর জীবিকান্বেষণ শেষে অধিকাংশ মানুষ যখন ঘুমে বিভোর। মাঝ রাতে ঠিক সেই সময় কেউ আবার মেঘনায় ডুবাতে থাকে জীবিকার টানে।
গত ১৯ আগস্ট মধ্য রাত এমন কিছু ব্যক্তির দেখা মেলে চাঁদপুর বড়স্টেশন মোলহেড মেঘনা মোহনায়। পরিবারের আহার যোগাতে মাঝ রাতে ঝাঁই জাল নিয়ে মেঘনার স্রোতে ডুবিয়ে ডুবিয়ে মাছ শিকার করতে দেখা যায় তাদের।
দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে এ কাজটি করে আসছেন শহরের যমুনা রোডের বাসিন্দা আব্দুল কুদ্দুস। তার সাথে একই পেশায় বিগত ১ যুগ ধরে রয়েছেন কোড়ালিয়া নতুন রাস্তার বাসিন্দা রিপন, ক্লাব রোডের বাসিন্দা কাসেম এবং হাকেম আলি। দীর্ঘ সময় ধরে এ পেশায় কাজ করলেও এদের কারোই নেই জেলে কার্ড।
আবদুল কুদ্দুস জানান, তারা প্রতিদিন রাতে মেঘনা মোহনায় প্রবল ঘূর্ণি স্রোতের আশপাশে ব্লকের উপর ঝাঁকি জাল ফেলে ডুবিয়ে ডুবিয়ে কোরাল, কালি বাউস, বোয়াল এবং আইড় মাছ শিকার করেন। মেঘনা মোহনায় ডুবন্ত যে সব ব্লক রয়েছে, এ সবের মাঝ থেকেই ধরা হয় মাছ। বর্তমানে প্রতিদিন গড়ে ৩ থেকে ৫ হাজার টাকার মাছ শিকার করেন তারা। আবার কখনো দুই তিন দিনেও মাছ পায় না। আগে যেখানে ১০ হাজারেরও বেশি টাকার মাছ শিকার হতো। এ দিয়েই তাদের প্রত্যেকের সংসার চলে।
কথার ফাঁকে অভিযোগের সুরে আব্দুল কুদ্দুস বলেন, ‘এত বছর ধইরা মাছ ধরি, তবুও একটা জেলে কার্ড আমরা কেউই পাই নাই। আমগরে অনেকেই বলছে কার্ড কইরা দিবো। কিন্তু কেউই দেয় নাই। অনেকে জীবনে জালই ধরে নাই, কিন্তু তারা জেলে কার্ড পাইছে। সব সময়তো আমরা নদীতে নামতে পারি না। তাই আমগো পোলাপাইন লইয়া কোনো রকমে এই কামাই দিয়াই চলতে হয়।’
প্রতিবেদন- মুসাদ্দেক আল আকিব, ২৩ আগস্ট ২০১৯