চাঁদপুর

চাঁদপুরে বৃদ্ধা জানু বেগমের ভাগ্যে জুটেনি বিধবা ও বয়স্ক ভাতা

‘সামন্য কিছু কাঁচামাল বেইচ্ছা যা পাই তাতেই কোনো রহম আমার সংসার চলে বা’জান। আমার স্বামী নাই, কাঁচা আম, তেঁতই, আলু, ও পেঁপে বেইচ্ছা যে কয় টিয়া পাই, হেনতনে যা লাভ অয় হে দিয়া কোনো রহম চাইল-ডাইল কিনি।’

প্রতিবেদক; আপনি কেমন আছেন? এমন প্রশ্নেই এভাবেই কথাগুলো বলছেন বৃদ্ধা ও বিধবা জাহানারা বেগম জানু। প্রতিদিনই চাঁদপুর শহরের রেলওয়ে কালী বাড়ি কোট স্টেশন রেললাইনের পাশে, বকুল তলা, এবং কালী বাড়ি মন্দীরের সামনে দেখা মিলে এই বৃদ্ধার।

তার সামনে বিভিন্ন ঝুড়িতে সাজানো থাকে সামান্য কিছু কাঁচা আম, পেঁপে, তেতুল কিংবা আলুসহ বিভিন্ন কাঁচামাল। সারাদিন রোদ কিংবা বৃষ্টিতে এসব কাঁচামাল নিয়ে বসে থাকলেও প্রতিদিন তার বেচা বিক্রি হয় ৩ থেকে ৪শ’ টাকা।

তিনি জানায়, বেপারীদের কাছ থেকে এসব কাঁচামাল পাইকারি ক্রয় করে এনে তিনি চাঁদপুর শহরের বিভিন্নস্থানে রাস্তার পাশে বসে সেগুলো খুচরা বিক্রি করেন। সারাদিনে তার তিন চারশো টাকা করে বিক্রি হয়ে থাকে। এই তিন চারশো টাকা বিক্রি করে যা কিছু আয় হয় তাতেই তার সংসার চলে।

তিনি খুব আক্ষেপ করে বলেন এই ৬০/৬৫ বছর বয়সে এসেও তার ভাগ্যে জোটেনি কোন বিধবা কিংবা কোনো বয়স্ক ভাতা।

চাঁদপুর শহরের বকুলতলা রোডে জাহানারা বেগমের বসবাস। স্বামী আব্দুল খালেক মারা যায় প্রায় ৫ বছর আগে। তার স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকেই এইসব কাঁচামাল বিক্রি করে তিনি তার জীবন সংগ্রাম বেঁচে আছেন।

তিনি জানান, তার ঘরে তিন মেয়ে ও এক ছেলে সন্তান রয়েছে। তিনটি মেয়েকে বিয়ে দেওয়া হয়েছে। আর যে ছেলেটি ছিল সেই ছেলেটি গত দুই বছর আগে মারা যায়। তিন মেয়ের মধ্যে সে বর্তমানে চাঁদপুর শহরের বকুল তলা রোড এলাকায় রেল ওয়ের জায়গাতে ওই মেয়ের সাথে থেকেই কোন রকম দিন পার করছেন।

স্থানীয় লোকজন জানায়, যে মেয়েটির কাছে জাহানারা বেগম থাকছেন, খাচ্ছেন সেই মেয়েটির আর্থিক অবস্থা ও ততটা ভাল নয়। সেও খুব কষ্টে দিন যাপন করছে।

জীবনের শেষ প্রান্তে এসে যেনো বিধবা কিংবা বয়স্ক ভাতা পেয়ে সংসার চালানোর জন্য যাতে একটু স্বতি পান। সেজন্য এই বৃদ্ধা বিধবা জাহানারা বেগমের বিধবা এবং বয়স্ক ভাতা পাওয়ার ব্যবস্থা করে দিবেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং জেলা প্রশাসন, এমনটাই প্রত্যাশা করছেন বৃদ্ধা জাহানারা বেগম।

প্রতিবেদক- কবির হোসেন মিজি
৫ মে ২০১৯

Share