আগামী ৩০ ই ডিসেম্বর জাতীয় নির্বাচন। তরুণ ভোটার অনেক। যে কোনো সমীকরণ পরিবর্তন হবে এদের ভোটে। তাই জাতীয় নির্বাচনে তাদের ভূমিকা অপরিসীম। কিন্তু দুঃখজনক ব্যাপার এইটাই অনেকের মধ্যে আমি একটা জিনিস লক্ষ্য করেছি। তারা বলতেছে- আমি জানি ওই লোক ই জিতবে। তাহলে আর ভোট দেওয়ার দরকার কি?
আমাদের সমস্যা এখানেই, যেখানে নিজেদের অধিকার ছেড়ে দেই নিজেদের মন গড়া ভাবনা থেকে। দেশ আমাদের, তাই দেশের যোগ্য প্রতিনিধি নির্বাচন করার দায়িত্ব না শুধু কর্তব্য ও বটে আমাদের। তাই প্রার্থীকে যাচাই করে ভোট দিতে হবে। কে জিতবে, কিভাবে জিতবে সেটির চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো আমি যোগ্য লোককে ভোট দিতে পারছি কিনা।
বিবেকের কাছে প্রশ্ন করবেন -আপনি দেশকে কি দিয়েছেন? দেশ যিনি পরিচালনা করবে তাকে আপনি কেমন নির্বাচন করেছেন। তার ওপর “বাংলাদেশ” নামক দেশটি পুরো নির্ভর করবে। হতে পারে আপনার আসনে যোগ্য লোকটির জনপ্রিয়তা কম। কিন্তু মনে রাখবেন আপনার সচেতন মন তার পক্ষে ভোট দিয়েছে। আল্লাহর কাছে ও বলতে পারবেন আমি দেশ গঠনে যোগ্য লোককেই ভোট দিয়েছি। আর আমরা নিজেদের জায়গা সবাই সচেতন হলে আমাদের সমাজ পাল্টে যাবে।
অনেক শিক্ষিত মানুষেরা মনে করেন কেন্দ্রে ঝামেলা হবে। কিন্তু আমি বলবো আপনাদের হৃদয় তাহলে অনেক আগে ই মরে গেছে। ছোট বেলা থেকে নিজেরা পড়েছেন, বাচ্চাদের শিখিয়ে এসেছেন, -যে ভয়কে জয় করে সেই সফল হয়েছে। এখন যেহেতু ভয়কে জয় করার সময় এসেছে তখন কেনো পিছিয়ে পড়েন। তখন কেন এত ভয়? তাই আপনি নিজে কেন্দ্রে যান, নিজেদের সন্তানকে ও নিয়ে যান। মনের শক্তি বাড়ান।যদি মাউন্ট এভারেস্ট আমরা জয় করতে পারি, তাহলে কি ভোট দিয়ে মাত্র ৩০০ জন যোগ্য লোক নির্বাচন করতে পারি না?
আপনার এলাকায় যোগ্য লোককে ভোট দিতে হলে যদি ছলনার আশ্রয় নিতে হয়, তাহলে সেটাই করুন। তারপর ও যোগ্য লোক নির্বাচন করুন। জনপ্রিয়তা দেখে নয় প্রার্থীর কাজ দেখে ভোট দিন। প্রতিশ্রুতি একটি শব্দ মাত্র। তাই প্রতিশ্রুতি থেকে কাজ কে গুরুত্ব দিন। হাল ছেড়ে দিবেন না।
মাত্র ৩০০ আসন। এর মধ্যে কি আমরা ৩০০ যোগ্য লোক নির্বাচন করতে পারি না? হয়ত ৩০০ পাবো না ২০০? যদি ২০০ না পাই তবে ১০০ তো আশা করতে ই পারি। ধরে নিলাম যোগ্য লোক ১০০, তাহলে ভাবেন দেশ কতটুকু উন্নত হবে। ১০০ জন ও দেশের জন্য অনেক কিছু করতে পারে।তাই নিজের ভোট এই ভাবে ঘরে বসে কেউ নষ্ট করবেন না, দেশের স্বার্থে, শহীদদের স্বার্থে কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিন।
যারা তরুণ নতুন ভোটার তাদের প্রতি আমার অনুরোধ প্লিজ ভোট দিতে যাবেন। কারণ তরুনরা দেশকে যা দিতে পারে অন্য কেউ তা দিতে পারে না। তাদের আছে সাহস, তাদের আছে শক্তি, তারা ভয়ে ১০ দিন বাঁচার চেয়ে ১ দিন সাহসের সাথে বাঁচাটাকে গৌরবের বিষয় মনে করে। তারা যোগ্য লোক চিনতে ভুল করবে না। তারা মার্কা নয়, কাজ কর্ম দেখে লোক বিচার করে।
আজ যদি আমরা ঘরে বসে থাকি, তাহলে আমরা হারিয়ে ফেলবো আমাদের স্বাধীনতা, হারিয়ে ফেলবো যোগ্য লোক, হারিয়ে ফেলবো বুকে সাজানো সোনার বাংলাদেশ।
তাই একজন তরুণ ভোটার হয়ে বলছি! ৩০ তারিখ যা ই হোক ভোট দিতে যাবো, যোগ্য লোককে ভোট দিয়ে দেশকে সোনার বাংলাদেশে রুপান্তরিত করবো। কেন্দ্রে ঝামেলা হতে পারে, আমি মেয়ে ঘরে বসে থাকবো এইভেবে পিছিয়ে পড়ার সুযোগ নেই। আমি মেয়ে, আমি কারো স্ত্রী, কারো মা হবো। তাহলে আমি কেনো সাহসের সাথে কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারবো না।
প্রতিটি মেয়েই টুকরো টুকরো বাংলাদেশ। টুকরো গুলো মিলে ভোট দিয়ে গড়ে তুলবে সোনার বাংলাদেশ।
লেখক : ইশরাত বিনতে শরীফ
শিক্ষাথী- গণিতবিদ্যা বিভাগ,
চাঁদপুর সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ।