Home / চাঁদপুর / ভিতরের বাহিরের গল্প…
ভিতরের বাহিরের গল্প…

ভিতরের বাহিরের গল্প…

ঈদ উল আযহার একদিন পর। দূপুরবেলা ফোন করলাম চাঁদপুরের জেলা প্রশাসককে। এর পূর্বে ওনার সাথে আমার কথা হয়নি। শুধু যেদিন উনি জেলা প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ পান সেদিন একটা মেইল করেছিলাম অভিনন্দন জানিয়ে।

ইউএনবির যশোর প্রতিনিধি জানালেন তিনি কাজ পাগল মানুষ। আপনার জেলা একজন ভালো জেলা প্রশাসক পেয়েছে। কিন্তু আমার আর কথা বলা হয়নি। তিনি আমাকে চেনেন না। আমি তাঁকে পরিচয় দিলাম। তিনি আমাকে সন্ধ্যা ৭টায় বাংলোয় যেতে বললেন।

আমার উদ্দেশ্য ছিল চাঁদমুখের কার্যক্রম নিয়ে ওনার সাথে আলোচনা করা। আমি চাঁদমুখের সাধারণ সম্পাদক এইচ এম জাকিরকে জানালাম। সে মোটামুটি গুরু দায়িত্ব পালন করছে এমন কয়েকজনকে জানালো। কিন্তু ঈদের পর হওয়ায় অনেকেই গ্রাম থেকে ফেরেননি।

এর আগেও চাঁদপুরের অনেক জেলা প্রশাসকের সাথে আমার মধুর স্মৃতি ছিল। এর মধ্যে জনাব আবু তাহের। যাঁর সাথে ফরাজীকান্দি মাদ্রাসার পুকুরে একাধিকবার মাছ ধরতে গিয়েছিলাম। জনাব আবু মুহাম্মদ মনিরুজ্জমান, জনাব মোঃ ইসমাইল হোসেন অন্যতম। জনাব প্রিয়তোষ সাহা মহোদয়ের সাথেও ছিল আন্তরিক সম্পর্ক। সর্বশেষ জনাব আবদুস সবুর মন্ডল স্যারতো রীতিমত আমাকে জেলা প্রশাসনের প্রতিনিধি বানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যলায়েও নাগরিক সাংবাদিকতা বিষয়ে প্রশিক্ষণের জন্য পাঠিয়েছেন।

Shariar-Palash.

ছবিতে : নুবিয়া তাসনিম ও তাঁর বাবা রাশেদ শাহরিয়ার পলাশ। (ফাইল ছবি)

এতসব গল্প করলাম এ জন্য যে, সব কিছু ছাপিয়ে রীতিমত আমাকে অবাক করে দিলেন বর্তমান জেলা প্রশাসক জনাব মাজেদুর রহমান খান। তিনি আমাকে চিনেন না। আগে কখনো দেখা হয়নি। এসব ভেবে কথাটা কিভাবে শুরু করা যায় সে পরিকল্পনায়ই আমি ব্যস্ত ছিলাম।

আমি সময়ের ব্যাপারে সচেতন। ৭টার আগেই পৌঁছে গেলাম। আগে যাওয়াতে বন্ধু রোটারিয়ান শাহেদুল হক মোরশেদ এর হোটেল গ্র্যান্ড হিলশায় গল্প করছিলাম। আর আমার বাকী সদস্যদের জন্য অপেক্ষা করছিলাম।

অবাক হওয়ার পালা তখনই। ঠিক ৭টা এক মিনিটে তিনি আমাকে ফোন দিলেন। বললেন, আপনি কোথায়? আমি অপেক্ষা করছি আসেন। আমিতো আকাশ থেকে পড়লাম। আমি ভালো করেই জানি একজন জেলা প্রশাসকের কাজের ধরণ। গুরুত্ব। সেদিন আবার চাঁদপরের স্থানীয় ডাঃ দিপু মনি আপার চাঁদপুরের বাসায় ওনার ঈদের নিমন্ত্রণ । এত কিছুর মাঝে একজন জেলা প্রশাসক কিভাবে ঘড়ির কাটা ধরে চলেন?

আমি ওনার থেকে ৩০ মিনিট সময় নিলাম্ এবং আমার সদস্যদের তাগাদা দিলাম তাড়াতাড়ি আসার জন্য । আমরা সাড়ে ৭টায় ওনার বাংলোতে পৌঁছে গেলাম।

ওনার প্রথম কথা আপনার নামের সাথে মোবাইলের রেজিস্ট্রেশন মিলে না। আমি বললাম এটা আমার অফিসের দেয়া সিম। তাই হয়তো। অর্র্থাৎ ট্রু কলারে আমার নাম না দেখে ওনার প্রশ্ন। তারপর বললেন আমি ভেবেছিলাম আপনি একা আসবেন। এখনতো দেখি অনেক বড় টিম!

অনেক গল্প হলো। তবে তা সবই কাজের। তিনি সবাইকে আপ্যায়িত করলেন। এবং আসার সময় বলে দিলেন সব ভালো কাজের সাথে, সমাজের কল্যাণ হয় এমন কাজের সাথে জেলা প্রশাসন অবশ্যই থাকবে। এবং সহযোগীতা করবে।

তার পরের অংশ সবই ইতিহাস। চাঁদপুরের স্বরণ কালের সবচেয়ে সেরা আয়োজন করল চাঁদমুখ। আইসিটি অলিম্পিয়াড আয়োজনে সর্বাত্মক সহায়তা করায় জেলা প্রশাসক মহোদয়কে আন্তরিক অভিনন্দন!

লেখকঃ রাশেদ শাহরিয়ার পলাশ,
কান্ট্রি এডিটর এন্ড হেড অব বাংলা সার্ভিস,
ইউএনবি।

২৪ সেপেটম্বর,২০১৮

Leave a Reply