আন্তর্জাতিক

ভারতে ফিরে প্রথমে যা বললেন পাইলট

পাকিস্তান থেকে ভারতে আসার আগে ভারতীয় বিমান বাহিনীর পাইলট অভিনন্দন বলেছেন, ভারতীয় গণমাধ্যম সবসময় অতিরিক্ত রঙ মেখে খবর প্রচার করে। তারা তুচ্ছ বিয়ষকেও মারাত্মক হিংসাত্মকভাবে বর্ণনা করে। এভাবে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্তির পথে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

পাকিস্তানের কারাগারে ৬০ ঘণ্টা বন্দি থাকার পর ভারতে ফিরলেন ভারতীয় বিমান বাহিনীর পাইলট অভিনন্দন ভার্থাম্যান। দেশে ফিরে তার প্রথম কথা ছিল, নিজ দেশে ফিরতে পেরে ভালো লেগেছে।

তাকে যখন পাকিস্তানি রেঞ্জার্সরা ভারতের হাতে সমর্পণ করছিল, তখন তার পরনে ছিল নেভি ব্লু রঙের ব্লেজার, সাদা শার্ট ও ধূসর ট্রাউজার। আত্তারি ওয়াগা সীমান্ত অতিক্রম করার সময় তার দুই ঠোঁটে ছিল হাসির ছটা।

তাকে হস্তান্তরের মধ্যে দিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার পরমাণু শক্তিধর প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে চলমান উত্তেজনা কমবে বলে আশা করা হচ্ছে।

শুক্রবার রাতে অভিনন্দন ফিরে আসার পরপর তাকে স্বাগত জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

টুইটারে লেখা এক বার্তায় তিনি বলেন, ওয়েলকাম হোম উইং কমান্ডার অভিনন্দন! তোমার দৃষ্টান্তস্থাপনকারী সাহসিকতায় জাতি গর্বিত। আমাদের সশস্ত্র বাহিনী ১৩০ কোটি ভারতবাসীর অনুপ্রেরণা। বন্দে মাতরম!

কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণ রেখায় পাকিস্তানি গুলিতে ভূপাতিত ভারতীয় বিমানের পাইলটকে ছেড়ে দেয়ার আগে একটি ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে এসব কথা বলেন উইং কমান্ডার অভিনন্দন। শুক্রবার তাকে ভারতের হাতে সমর্পণ করে পাকিস্তানি রেঞ্জার্সরা।

সীমান্ত পাড়ি দেয়ার আগে তার একটি বিবৃতি ভিডিও করেন পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ। যে কারণে তাকে হস্তান্তরে বিলম্ব করাও হয়েছে।

ভিডিওতে ভারতীয় এই উইং কমান্ডার বলেন, আমি ভারতীয় বিমান বাহিনীর উইং কমান্ডার অভিনন্দন। আমি ভারতীয় বিমান বাহিনীর একটি যুদ্ধবিমানের পাইলট। আমি একটি লক্ষ্যবস্তু খুঁজতে সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ রেখা অতিক্রম করেছিলাম। কিন্তু পাকিস্তানি বিমান বাহিনীর গুলিতে আমার বিমান ভূপাতিত করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত বিমান থেকে আমি বের হয়ে আসতে পেরেছিলাম। যখন আমি বিমান থেকে বের হই এবং প্যারস্যুট দিয়ে মাটিতে নামি। তখন আমার হাতে একটি পিস্তল ছিল।

‘সেখানে অনেক লোক জড়ো ছিল। নিজেকে বাঁচাতে কেবল একটি উপায় ছিল আমার। আমি পিস্তুল ফেলে রেখে দৌড়ে পালাতে চেষ্টা করি।’

তিনি বলেন, লোকজন আমাকে তাড়া করেন। তারা খুবই আবেগ আপ্লুত ছিলেন। তখন পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর দুই কর্মকর্তা এসে আমাকে রক্ষা করেন। পাকিস্তানি আর্মি ক্যাপ্টেনরা আমাকে রক্ষা করেন এবং আমার আর কোনো ক্ষতি হতে দেয়নি। এরপর তারা আমাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে হাসপাতালে পাঠান।

‘হাসপাতালে আরও কয়েকটি পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে আমাকে। তারা আমাকে আরও সহায়তা করেন।’

৩৫ বছর বয়সী এই ভারতীয় পাইলট বলেন, পাকিস্তানি সেনাবাহিনী খুবই পেশাদার। তাদের মধ্যে আমি শান্তি দেখেছি। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সঙ্গে আমি সময় কাটিয়েছি। তারা আমাকে অভিভূত করেছে।

ভারতীয় এই পাইলট বলেন, উত্তেজিত জনতার হাত থেকে পাকিস্তানি সেনারা আমাকে রক্ষা করেছেন। তারা খুবই পেশাদার ও তাদের আচরণে আমি অভিভূত। (এনডিটিভি অনলাইন,ডন অনলাইন)

বার্তা কক্ষ
২ মার্চ,২০১৯

Share