চাঁদপুর-৫ (হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তি) নির্বাচনী এলাকা থেকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এবার ভোটযুদ্ধে অংশ নিচ্ছেন দুই পীর আর পীরের মুরিদগণ। ভোটের লড়াইয়ে এই দুই পীরের মধ্যে কে জিতবেন এটা নিয়ে সাধারণ ভোটারদের মনে দ্বিধা থাকলেও দুই পীর আর পীরের অনুসারীগণ জিতবেন বলে নিজেরা আশাবাদী।
এছাড়াও ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন অর্থাৎ চরমোনাই পীরের হাতপাখা প্রতীকে নির্বাচন করছেন আরেকজন। মূলত এখানে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে নৌকা আর ধানের শীষ প্রতীকে।
হাজীগঞ্জ পৌর এলাকার ধেররা ইমামে রাব্বানী দরবার শরীফের পীর আল্লামা সৈয়দ বাহাদুর শাহ মোজাদ্দেদী আর হাজীগঞ্জ পৌর এলাকার বদরপুর দরবার শরীফের পীর মাওলানা আবু সুফিয়ান আল কাদেরী নির্বাচন করছেন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে।
এর মধ্যে আল্লামা সৈয়দ বাহাদুর শাহ মোজাদ্দেদী ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের চেয়ারম্যান আর মাওলানা আবু সুফিয়ান আল কাদেরী বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের প্রেসিডিয়াম সদস্য। বাহাদুর শাহ চেয়ার প্রতীকে আর আবু সফিয়ান মোমবাতি প্রতীকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন। দুটি দলই নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত দল।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মাওলানা আবু সুফিয়ান আল কাদেরী ও সৈয়দ বাহাদুর শাহ মোজাদ্দেদী এই দুই পীরের বাড়ি হাজীগঞ্জে হলেও দুটি দল কিংবা দুই পীরের অনুসারী ও ভক্তবৃন্দ ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে দেশব্যাপী। এর মধ্যে মাওলানা আবু সুফিয়ান আল কাদেরী সিলেট অঞ্চলে বেশ প্রভাব বিস্তার করে থাকেন আর সৈয়দ বাহাদুর শাহ মোজাদ্দেদীর বড় ধরনের অনুসারী রয়েছে নারায়ণগঞ্জে। কিন্তু দুজন নিজ এলাকায় এসে নির্বাচন করছেন তাদের আস্তানা হাজীগঞ্জে থাকার কারণে।
উভয় দলের সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট জাতীয় পার্টির সাথে আর ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাথে জোটগতভাবে গত নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে। এবার নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের বিধিবিধান আর আওয়ামী লীগের সাথে সরাসরি জোট না থাকার কারণে দলীয়ভাবে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করতে হচ্ছে।
বাংলাদেশ ইসলামিক ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির শ্রম ও কৃষি বিষযক সম্পাদক মোহাম্মদ আলী নকশবন্দী বলেন, আমরা শতভাগ আশাবাদী আমাদের দল এখানে জিতবে। কারণ সৈয়দ বাহাদুর শাহ মোজাদ্দেদী মুরিদান-আশেকানসহ সর্বমহলের কাজ একজন গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি। তিনি পৃথিবীব্যাপী ইসলাম প্রচার করে থাকেন। ইসলামের খেদমতকারী কেউ তাঁকে নিরাশ করবেন না।
বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট হাজীগঞ্জ উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আঃ রাহীম বলেন, আমরা শতভাগ আশাবাদী আমাদের দল এখানে জিতবে। আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত তথা সুন্নী মতাদর্শের লোকজন দেশের অন্য জেলার চেয়ে এখানে অনেক বেশি। আর সুন্নী মতাদর্শের লোকজন মোমবাতি মার্কায় ভোট দিলে আমরা এখানে জিতবো ইনশাআল্লাহ।
এদিকে হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তির বিভিন্ন এলাকার বিভিন্ন জনের সাথে কথা বলে জানা যায়, দুই পীরের লড়াইয়ে মূলত ইসলামী দলগুলোর ভোট ভাগাভাগি হয়ে যাবে। বাহাদুর শাহের অনুসারী মুরিদানগণ তাদের পীরকে আর আবু সুফিয়ানের অনুসারীগণ তাদের পীরকে ভোট দেবেন। মুরিদানের ভোটের পাশাপাশি উভয় দলের লোকজন এলাকা হিসেবে কিছু ভোট দেবেন যা উভয় দলের বাড়তি ভোট হিসেবে যোগ হবে।
এছাড়া উক্ত আসনে ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন থেকে হাতপাখা প্রতীকে নির্বাচন করছেন হাফেজ শাহাদাত প্রধানীয়া। চরমোনাই পীরের অনুসারীগণ তাদের পীর-নির্ধারিত প্রার্থীকে ভোট দিলেও চরমোনাই পীর অনুসারী ভোটের অবস্থান এখানে নিতান্ত কম নয়।
এছাড়া এখানে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে মেজর (অবঃ) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম এমপি, বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকে ইঞ্জিঃ মমিনুল হক, জাকের পার্টির গোলাপ ফুল প্রতীকে মোঃ ওবায়েদ মোল্লা ও জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকে খোরশেদ আলম খুশু নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন।
স্টাফ করেসপন্ডেট
১৩ ডিসেম্বর,২০১৮
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur