চাঁদপুর-কুমিল্লা মহাসড়কের হাজীগঞ্জ উপজেলা গন্তর্ব্যপুর ইউনিয়নের এনায়েতপুর-ডাটরা সড়কের রাজ নারায়ণ খালের ওপর নব-নির্মিত সেই আলোচিত সেতুটি পরিদর্শন করলেন দুদকের কুমিল্লা আঞ্চলিক বিভাগের কর্মকর্তাবৃন্দ।
মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) দুপুরে পরিদর্শন শেষে দুদকের কুমিল্লা আঞ্চলিক বিভাগের সহকারী পরিচালক মো. মাহতাব উদ্দিন বলেছেন,‘খুব দ্রুত সময়ের মধ্যেই সেতুটি নির্মাণে গাফলতি প্রসঙ্গ একটি তদন্ত প্রতিবেদন ঢাকা দুদকের প্রধান কার্যালয়ে প্রেরণ করবেন।’
এদিকে হাজীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী বিভাগ থেকে সেতুটি নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান চাঁদপুরের হায়দার টেড্রার্সকে দু’টি ‘শোকজ’ করেন। উপজেলা প্রকৌশল বিভাগের সূত্রে জানা গেছে, সেতুটি ১৬ লাখ টাকায় নির্মাণের জন্যে ব্যয় নির্ধারণ করা হয়। ২০১৮ সালে ৮ মে সাড়ে তিন-চার মিটার সেতু ও সংশ্লিষ্ট সড়কের তিন কিলোমিটার কার্পেডিংসহ প্রায় ১ কোটি ১০ লাখ টাকার কার্যাদেশ দেয়া হয়। কার্পেডিংয়ের কাজ শেষ হলেও সেতুর কাজটি ধীরগতিতে চলছে।
এ ব্যাপারে বিষয়টি জানতে চাইলে হাজীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মো.রাহাত আমিন পাটওয়ারী বলেন, ‘সেতু নির্মাণকারী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান হায়দার ট্রেডার্সকে দু’টি শো কজ করা হয়। যথাসময়ে সময়ের মধ্যে সেতুটি নির্মাণ কাজ শেষ না করায় পূর্বেই একটি শো কজ করা হয়। ২৬ এপ্রিল সেতুতে ফাটল দেখা দেয়ায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নিয়ম বহির্ভূত কাজ করায় আরোও একটি শোকজ করা হয়।’
আরো পড়ুন… হাজীগঞ্জে সেই ব্রিজটি দিনে ঢালাই, রাতে ফাটল
সেতুতে ফাটল প্রসঙ্গে সহকারী প্রকৌশলী মো.জাহিদ হোসেন বলেন,‘সাড়ে ১২ ইঞ্চির ওপর আরো ২.৫ ইঞ্জিওয়ারিং কোর্স ঢালাই দেয়া হয়। ওই ওয়ারিং কোর্সের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের গাফলতিতে ফাটল সৃষ্টি হয়। ওইসময় ৪৫ মিনিট পরপর পানি দেয়ার কথা। অথচ ২৪ ঘন্টার মধ্যে কোনো পানি না দেয়ায় এ সমস্যা সৃষ্টি হয়।তবে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে শো কজ করা ও ফাটল মেরামত করে দেয়া হয়েছে। এখানে সিমেন্ট ব্যবহারের ক্ষেত্রে স্টীমেটনুযায়ী দেয়া হয়েছে।’
ইউপি চেয়ারম্যান মো.রফিকুল ইসলাম বলেন,‘ ঠিকাদার প্রথমে পুরাতন সেতুর মালামাল নতুন সেতুতে দিতে চাইলে তা’প্রকৌশল বিভাগ ও এলাকাবাসীর হস্তক্ষেপে নতুন ইট ব্যবহার করা হয়। সেতুটি ভাঙ্গতে লেগেছে দু’মাস। এখন নতুন সেতু করতেও প্রায় দু’মাস সময় লাগবে। এতে জনদুর্ভোগ বেড়েছে।’
আহাম্মদপুর বাজার ব্যবসায়ী জয়নাল আবেদীন ও সুভাষ বলেন,‘সেতুটি করার প্রথম থেকেই ঠিকাদারের গাফলতির বিষয়টি দেখা গেছে। সেতুটি নির্মাণ করতে সরঞ্জাম সংকট ছিল। এছাড়া বাজারের সবাই মিলে বিকল্প একটি বাঁশের সাকোঁ দিয়ে যাতায়তের ব্যবস্থা করেন। ধীরগতিতে সেতুটি নির্মাণ হওয়া অন্তত:দশগ্রামের জনগণ দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।’
পরিদর্শনকালে দুদকের কর্মকর্তাগণ স্থানীয় বাসিন্দা ও সংশ্লিষ্ট ব্যাক্তিবর্গের সাথে কথা বলেন। ওইসময় উপস্থিত ছিলেন দুদকের কুমিল্লা আঞ্চলিক বিভাগের সহকারী পরিদর্শক মো.মোফাজ্জল হায়দার ও আনোয়ারুল মাসুদ,হাজীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মো.রাহাত আমিন পাটওয়ারী,সহকারী প্রকৌশলী মো.জাহিদ হোসেন প্রমুখ। তবে ওই সময় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কেউ উপস্থিত ছিলেন না।
স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৩০ এপ্রিল ২০১৯