ব্যক্তিগত লাইব্রেরি বিক্রির বিজ্ঞাপন দেওয়া গোকুল চন্দ্রকে নিয়ে প্রতিবেদন করতে গিয়ে তার দ্বারাই যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন ইংরেজি দৈনিক দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের একজন নারী প্রতিবেদক..
নিজের গড়ে তোলা লাইব্রেরি বিক্রি করতে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে গত কিছুদিন আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনায় এসেছিলেন গোকুল চন্দ্র দাশ নামের এ ব্যক্তি। তাকে নিয়ে বিবিসি বাংলায় ফলাও করে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে। সেখানে তার জীবন ও কর্ম শীর্ষক নানা সাফল্য আর দীর্ঘকালের সংগৃহীত বই সম্পর্কে অনেক তথ্য তুলে ধরা হয়েছিলো।
কিন্তু সেই গোকুলকে নিয়ে প্রতিবেদন করতে গিয়ে তার দ্বারাই যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন ইংরেজি দৈনিক দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের একজন নারী প্রতিবেদক।
বুধবার বিকেলে গোকুল চন্দ্রের ধানমন্ডি ৪ নম্বর সড়কের বাসায় এ ঘটনা ঘটে।
ধানমন্ডি গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি স্কুলের সাবেক সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে পরিচয় দিয়ে গোকুল চন্দ্র দাশ আর্থিক সংকটের কারণে নিজের ব্যক্তিগত লাইব্রেরি বিক্রি করে দেবেন বলে কিছুদিন আগে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেন। ৬৪ বছর বয়সী ওই ব্যক্তিকে নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে আলোচনার মধ্যে গত ১৪ অক্টোবর বিবিসি বাংলা তাকে নিয়ে একটি প্রতিবেদন করে।
গোকুল চন্দ্রের এই লাইব্রেরি গড়ে তোলা এবং তা বিক্রির পেছরের গল্প তুলে ধরতে তার সাথে একটি সাক্ষাৎকারের আয়োজন করে ইংরেজি দৈনিক দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড।
বুধবার বিকেলে তাঁর বাসায় এই সাক্ষাৎকার নেওয়ার সময় নিজের চরিত্রের কালো দিকটি স্পষ্ট করেন ওই ব্যক্তি। সাক্ষাৎকার যখন শেষদিকে, দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের প্রতিবেদককে গোকুল চন্দ্র প্রশ্ন করেন, “… তোমাকে একটা ব্যক্তিগত প্রশ্ন করি?”
ঘটনা আঁচ না করতে পেরে ওই প্রতিবেদক যখন ‘হ্যাঁ’ উত্তর দেন তখন গোকুল নিজের একাকীত্বের অযুহাত দিয়ে ওই প্রতিবেদককে বিয়ের প্রস্তাব দেন।
গোকুলের নিজের ভাষ্য অনুযায়ী দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের ওই নারী প্রতিবেদক তাঁর ছোট মেয়ের চেয়েও বয়সে ছোট। ওই প্রতিবেদক যখন জানতে চান তাকে কেন এ ধরণের বিব্রতকর প্রস্তাব দেয়া হয়েছে তখন গোকুল ওই প্রতিবেদককে তাঁর বেডরুমে যাওয়ার প্রস্তাব দেন।
এসময় ওই নারী প্রতিবেদক গোকুল চন্দ্রের বাসা থেকে বেরিয়ে যেতে চাইলে তিনি দরজা খুলতে তাকে বাধা দেন। গোকুল ওই প্রতিবেদককে বলেন, “তুমি যেতে পারবা না। তুমি এখানে আমার সাথে থাকবা।”
গোকুল চন্দ্রের সাথে ওই নারী প্রতিবেদকের বিতর্কের এক পর্যায়ে তিনি তার কর্মস্থলে (দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড) ফোন দেন এবং বলেন, “ভাই আমি যেখানে ইন্টারভিউ নিতে এসেছি, সেখানে এই লোকটা (গোকুল চন্দ্র) আমাকে হ্যারাস (হয়রানি) করছে, এবং আমাকে বাসা থেকে বের হতে দিচ্ছে না।”
এটা বলে নারী প্রতিবেদক নিজের ফোনটি গোকুল চন্দ্রের হাতে দেন কথা বলার জন্য। ফোনের অপর প্রান্ত থেকে পুলিশে খবর দেওয়ার কথা জানালে গোকুল চন্দ্র ওই নারী প্রতিবেদককে দরজা খুলে বের হতে দেন।
বার্তা কক্ষ, ২৩ অক্টোবর ২০১৯