আন্তর্জাতিক

আঘাত হেনেছে ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ : উপড়ে পড়েছে গাছপালা বৈদ্যুতিক পোল

আঘাত হেনেছে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’। এর প্রভাবে ভারতের অন্ধ্র প্রদেশের বিশাখাপত্তনমে ১১০ কিলোমিটার বেগে বাতাস বইছে। সেই সঙ্গে হচ্ছে তুমুল বৃষ্টি।

ভারতীয় গণমাধ্যম নিউজ এইট্টিন এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, তীব্র বাতাসে অঞ্চলটির বাসিন্দাদের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। জীবন বাঁচাতে নিরাপদে আশ্রয় নিচ্ছে সবাই।

ফণীর বাতাসের তোড়ে বিভিন্ন রাস্তার পাশে গাছ এবং ইলেকট্রিক খুঁটি উপড়ে পড়েছে। এরই মধ্যে উপকূলীয় এলাকায় কাঁচা বাড়ির বাসিন্দাদের আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। প্রতিটি ব্লকে খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে প্রস্তুত আছে পুলিশ-প্রশাসন।

এদিকে ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তরের বরাত দিয়ে দ্য হিন্দুর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯৭৬ সাল থেকে এখন পর্যন্ত এপ্রিল মাসে বঙ্গোপসাগরে ও ভারত মহাসাগরে যতগুলো ঘূর্ণিঝড়ের সৃষ্টি হয়েছে তার কোনোটি কখনই ফণীর মতো এতো শক্তিশালী আকার ধারণ করেনি।

প্রসঙ্গত, অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ফণী এখন মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৯১৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে। কেন্দ্রের চারপাশে বাতাসে ঘণ্টায় ১৭০ কিলোমিটার বেগ তুলে এটি এখন এগুচ্ছে বাংলাদেশের উপকূলে। তবে কখনও কখনও এই বেগ ঘণ্টায় ২০০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, আগামীকাল সন্ধ্যায় এই ঘূর্ণিঝড় বাংলাদেশে আঘাত হানতে পারে।

এদিকে ফণীর কারণে আগামী ৩ ও ৪ মে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় এবং এর অধীনস্ত সংশ্লিষ্ট দপ্তর খোলা থাকবে। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত দু’টি অফিস আদেশ জারি করেছে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

ইতোমধ্যে পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর ও চট্টগ্রাম বন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত এবং কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

চাঁদপুরসহ কয়েক জেলাতে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত এবং কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরকে ৪ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

এদিকে ফণীর কারণে চাঁদপুরসহ দেশের সব নদীবন্দরে নৌযান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২ মে) সকালে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) জানিয়েছে, তারা সকাল থেকে দেশের সব নৌপথে নৌ চলাচল বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে। সংস্থার সব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।

বিআইডব্লিউটিএ লঞ্চ মালিক সমিতির সঙ্গে আলোচনা করে, ঘূর্ণিঝড়ের সব ধরনের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে

বিষয়টি এমভি হাসান ও এমভি আব এ জমজম লঞ্চ কর্তৃপক্ষ চাঁদপুর টইমসকে নিশ্চিত করেছেন। তারা জানিয়েছেন পৌনে ১২ টা থেকে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে।

তবে এ বিষয়ে কথা বলতে একাধিকবার চেষ্টা করেও চাঁদপুর বন্দর কর্মকর্তাকে পাওয়া যায়নি।

আবহাওয়া বিভাগ জানায়, ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৬০ কিলোমিটার যা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১৮০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছে সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে।

আবহাওয়া বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, ফণীর আঘাত বেশ মারাত্মক হতে পারে। ফণীর প্রভাবে জলোচ্ছ্বাসও হতে পারে। ডুবে যেতে পারে নিম্নাঞ্চল।

আবহাওয়া ডেস্ক
২ মে ২০১৯

Share