ঈদের তারিখ নিয়ে কেনো এত বিতর্ক ? ফি বছর ঈদ এলেই এ একই সমস্যার পুনরাবৃত্তি হয় মুসলিম বিশ্বে। শুধু বিভিন্ন দেশই নয়, বিভিন্ন জাতি-গোষ্ঠী থেকে শুরু করে পরিবারে-পরিবারেও বিভক্তি শুরু হয় ঈদের তারিখ নিয়ে।
কখনও কখনও মসজিদের ভেতরে এ নিয়ে মারামারির ঘটনাও ঘটে। সবশেষে মতপার্থক্যে গুমোট হয়ে যায় মুসলিমদের এতবড় একটা ধর্মীয় উৎসব।
কেন মুসলমানরা একটি নির্দিষ্ট তারিখে একমত হতে পারেন না? এ প্রশ্নের কারন খুঁজে বের করাটাও বেশ জটিল, কিছু ক্ষেত্রে আবার কঠিনও। গত বছর ঠিক এমন সময়েই এ নিয়ে একটা গবেষণাধর্মী প্রবন্ধ প্রকাশ করেছিল প্রভাবশালী ম্যাগাজিন দ্য ইকোনমিস্ট।
সেখানে বলা হয়, সম্ভবত মুসলমানদের কোনো কেন্দ্রীয় ধর্মীয় কর্তৃপক্ষ নেই বলেই ঈদের দিনক্ষণ নিয়ে এমন টানাটানি শুরু হয়। মুসলিম দেশগুলোতে সাধারণত ঈদের তারিখ সরকার, আদালত বা সংশ্লিষ্ট সংস্থা দ্বারা নির্ধারিত হয়।
অমুসলিম দেশগুলোতে এ সিদ্ধান্ত পৃথক পৃথক মসজিদ দ্বারা গৃহীত হয়। মুসলমানরা ‘চন্দ্র ক্যালেন্ডার’ ব্যবহার করেন এবং একটি নতুন চাঁদের সঙ্গে নতুন মাস নির্ধারণের সম্পর্ক রয়েছে।
কিন্তু এভাবে দিন-তারিখ নির্ধারণ করা খুব একটা সহজ কাজ নয়। বিতর্কের আরেকটি ক্ষেত্র হল- ঈদের দিন নির্দিষ্টকরণ নিয়ে ইসলামের পুরনো নাকি আধুনিক ব্যাখ্যা গ্রহণ করা হবে তা নিয়ে।
বেশিরভাগ ধর্মীয় পণ্ডিত বিশ্বাস করেন, নতুন চাঁদ জন্মের সঙ্গে নতুন মাস শুরু হয় না। বরং যখন খোলা চোখে ‘ক্রিসেন্ট’ বা একটি অর্ধচন্দ্র দেখা যায় তখনই একটি নতুন মাসের জন্ম হয়। যে রাতে চাঁদ দৃশ্যমান হওয়ার আশা করা হচ্ছে, আবহাওয়া কমিটি এবং সাধারণ মানুষ আকাশের দিকে সে সময় সতর্ক দৃষ্টি রাখবেন।
কিন্তু এভাবে ‘চন্দ্র দর্শন’ এ নির্ভরতা মানে- মেঘলা রাতের মতো একটা সাধারণ ঘটনাও ঈদের তারিখ একদিন পিছিয়ে দিতে পারে। আরেক গোষ্ঠী যারা কোরআনের আক্ষরিক পড়াশোনা দ্বারা কম অনুপ্রাণিত মনে করেন, মুসলমানদের আধুনিক বিজ্ঞান ব্যবহার করা উচিত।
এ বিষয়ে মুসলিম পণ্ডিতদের দুটি সংগঠন ‘দ্য ফিকাহ কাউন্সিল অফ নর্থ আমেরিকা’ এবং ‘ইউরোপীয়ান কাউন্সিল ফর ফতোয়া অ্যান্ড রিসার্চ’র বক্তব্য- এক্ষেত্রে জ্যোতির্বিদ্যা হল গ্রহণযোগ্য পদ্ধতি, যার দ্বারা তারিখগুলো অগ্রিম অনেক আগে থেকেই জানা যাবে।
বার্তা কক্ষ
৩ জুন ২০১৯