চাঁদপুর

সরকারি হাসপাতালে দালালির অভিযোগে প্যাথলজী কর্মচারীকে মারধর

রোগী নিয়ে দালালি করার অভিযোগে চাঁদপুরে সজিব হোসেন (২০) নামে এক প্যাথলজি কর্মচারীকে মারধর করেছেন চাঁদপুর সদর হাসপাতালে কর্মরত সার্জারি বিশেষজ্ঞ ডাঃ মনিরুল ইসলাম। বুধবার ৪ সেপ্টেম্বর দুপুরে চাঁদপুর সদর হাসপাতাল সংলগ্ন ফেমাস ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এ ঘটনা ঘটে।

ঘটনার পরপরই চাঁদপুর মডেল থানার এ এস আই মোঃ হোসেন ঘটনাস্থল গিয়ে তা তদন্ত করতে যান। মারধরে আহত সজিব ওই প্যাথলজিতে কাজ করেন।

ফেমাস ডায়াগনস্টিকের কর্মচারীরা জানায়, ডাঃ মনিরুল ইসলাম ক্ষিপ্ত হয়ে ওই ডায়াগনস্টিককে হঠাৎ কিছু না জিজ্ঞেস করেই গালমন্দ করে সজিবের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। পরে অন্যান্য ডায়াগনস্টিকের লোকজন এবং স্থানীয়রা তাকে মানিয়ে, বুঝিয়ে সেখান থেকে বিদায় দেন।

ঘটনার সূত্রে জানা যায়, বুধবার সকালে হাইমচর উপজেলা থেকে সুমি আক্তার নামে এক নারী তার শিশু সন্তানকে চর্ম ডাক্তার দেখাতে চাঁদপুর সদর হাসপাতালে যান। সেখানে মিম ডায়াগনস্টিকের রানু নামে এক দালাল ওই রোগীকে হাসপাতালের নাক, কান, গলা বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলে ডাক্তার তাকে সার্জারি ডাক্তার দেখানোর পরামর্শ দেন। তখন দালাল রানু ওই রোগীকে ডাক্তার মনিরুল ইসলামে দেখালে রোগীকে একটি পরীক্ষা করতে দেন। দালাল রানু রোগী তার পছন্দের ডায়াগনস্টিক মীমে নিয়ে গেলে পরীক্ষা বাবদ রোগীর কাছে ১৪, শ টাকা চাওয়া হয়। রোগীর টাকা কম বলে তিনি মীম ডায়াগনস্টিক থেকে বাহিরে বের হলে সজিব তাকে ৮, শ টাকায় পরীক্ষা করিয়ে দেয়ার কথা বললে, সুমি আক্তার ফেমাস ডায়াগনস্টিকে তার পরীক্ষাটি করাতে রাজি হন।

সেজন্য দালাল রানু মনিরুল ইসলামকে গিয়ে সজিবের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেন।

আহত সজিব জানায়, আমি প্যাথলজিতে বসে ছিলাম হঠাৎ মনির স্যার এসে আমাকে কিল লাথি, ঘুশি দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করে। আমি কিছুই বুঝে উঠতে পারিনি।

ফেমাসের পরিচালক মাহাবুবুর রহমান পিয়াস জানায়, আমিও কিছু বুঝতে পারিনি মনির স্যার লোকজন নিয়ে এসে হঠাৎ সজিবের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। উনাকে আমরা কোন ভাবেই মানাতে পারিনি।

রোগী সুমি আক্তার বলেন, যে ছেলেকে ডাক্তার মারধর করেছে। সেই ছেলে ডাক্তারের সম্পর্কে খারাপ কিছুই বলেননি। হয়তো ওই রানু মহিলাটা ডাক্তারকে উল্টা পাল্টা কিছু বলেছে। কারন, যখন আমি এই ল্যাবে পরীক্ষা করতে আসি তখন ওই রানু নামের মহিলাটি আমাকে বলেছে আপনি যেহেতু সেখানে পরীক্ষা করাচ্ছেন, তাহলে ডাক্তারকে বলবো সেভাবেই আপনাকে চিকিৎসা দিতে।

এ বিষয়ে ডাঃ মনিরুল ইসলাম বলেন, আমাদের কাছে গরীব অসহায় রোগীরা, সেবা নিতে আসে। কিন্তু এ প্যাথলজির মালিকগণ কিছু দালাল লালন পালন করে। তাদের কাজ হচ্ছে আমরা ডাক্তাররা রোগীকে পরীক্ষা নিরীক্ষা দিলে ল্যাব গুলো অসহায় রোগীদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নেয়। সে কারণে আমি শাসন করেছি। অন্য সব অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট।

এ বিষয়ে জেলা সির্ভিল সার্জন ডাঃ শাখাওয়াত উল্ল্যাহ বলেন, আমি এ মাত্র ঘটনাটি শুনলাম। যদি এ ধরনের ঘটনা ঘটে তবে তা দুঃখ জনক।

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯

Share