সাতদিন ধরে স্বামী গুরুতর অসুস্থ। তাকে ভর্তি রাখা হয়েছে হাসপাতালের আইসিইউতে। স্ত্রী স্বভাবত:ই স্বামীর সেবায় সারারাত পার করে দেবে, সর্বক্ষণ তার পাশে থাকার চেষ্টা করবে। এটাই তো নারীর আসল স্বরূপ। কিন্তু এরকম কোনো নারীর কাঁধেই যদি আবার থাকে দেশ,সরকার বা মন্ত্রণালয় সামলানোর অনেকখানি গুরুদায়িত্ব,তাকে তো চাপটা অনেক বেশিই নিতে হয়।
বলছি আমাদের শিক্ষামন্ত্রী ডা.দীপু মনি’র কথা। তার স্বামী বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্টের ব্যারিস্টার তৌফিক নাওয়াজ সাতদিন যাবৎ হাসপাতালে ভর্তি। এ কয়দিন আইসিইউতে থাকার পরে বুধবার তাকে কেবিনে নেয়া হয়েছে।
স্বামী গুরুতর অসুস্থ হওয়ায় তিনি প্রতিদিনই রাত জেগে ইউনাইটেড হাসপাতালে তার সেবা করেছেন,পাশে থেকেছেন। এদিকে আবার মন্ত্রণালয় এবং দলের কোনো রকম কাজই তিনি থামিয়ে রাখেননি। সেই কাজও চলেছে কাজের মতো করেই।
তিনি মন্ত্রণালয় স্বাভাবিকভাবে সামলে নিয়েছেন। দলীয় সব কর্মসূচিতেও থেকেছেন,কাজ করেছেন,নির্দেশনাও দিয়েছেন একেবারে ঠাণ্ডা মাথায়। এটাই বোধহয় নারীর শাশ্বত রূপ। তারা যে সবদিক ঠিক সামলে নিতে পারে,সেটাই দীপু মনি করে দেখিয়েছেন।
এ কয়েকটাদিন নির্ঘুম রাত কাটিয়ে তিনি স্বামীর পাশে থেকেছেন। ভোরবেলা কেউ ইউনাইটেড হাসপাতালে গেলেই চোখে পড়েছে দীপু মনি’র গাড়িটা ঠিক সেখানে রাখা আছে। হাসপাতালে চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে,সব খোঁজখবর নিয়ে আবার ছুটে গেছেন মন্ত্রণালয়ে। সেখান থেকে আবার দলীয় কার্যালয়ে ছুটেছেন।
একটা কথা সবাই জানি, ‘যে রাধে সে চুলও বাধে।’ দীপু মনি’র এ যে দিনরাত একাকার করে পরিশ্রম। এটাই নারীর চিরাচরিত শক্তি। এজন্যই নারীরা উন্নয়নের চালিকাশক্তি, সে ঘরে-বাইরে সবই সামলে নিতে পারে।
অদ্ভুত ব্যাপার হলো, কেউ সেভাবে জানেনি বা বোঝেওনি যে তার স্বামীর এমন গুরুতর অবস্থা চলছে। এর মাঝেও ছুটি নেয়া বা কাজ থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেয়ার কাজটি তিনি করেননি। এটা অবশ্যই আমাদের সবার জন্য শিক্ষণীয়। একটা কঠিন সময়কে পার করেও যে দায়িত্বপালন করা যায় সেটা দীপু মনি করে দেখিয়েছেন। উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন সব শ্রেণির মানুষের জন্য।
মাজহারুল ইসলাম অনিক
৩ আগস্ট ২০১৯