Home / চাঁদপুর / চাঁদপুরের নদী তীরবর্তী চরাঞ্চলে দু’শতাধিক বসতঘর লণ্ডভণ্ড
চাঁদপুরের নদী তীরবর্তী চরাঞ্চলে দু’শতাধিক বসতঘর লণ্ডভণ্ড

চাঁদপুরের নদী তীরবর্তী চরাঞ্চলে দু’শতাধিক বসতঘর লণ্ডভণ্ড

চাঁদপুর সদর, হাইমচর ও মতলব উত্তরে ব্যাপক আঘাত হেনেছে ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’। শনিবার (৪ মে) আনুমানিক ভোর সাড়ে ৩টার পর থেকে চাঁদপুরের আঘাত হাতে ঘূর্ণিঝর ফেণী। এতে জেলার এই তিন উপজেলার নদী তীরবর্তী চরাচঞ্চে ব্যাপক ঝড়ো হাওয়া ও বৃষ্টি প্রায় দুই শতাধিক বসত ঘর ভেঙে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে।

শুধু তাই নয়, ফণী’ ঝড়ের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্থ গাছপালা, ফসলি জমি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানমহ বেড়িবাঁধ সংলগ্ন ছিন্নমূলদের বহু বসত ঘর। তবে এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কোথাও কোনো হাতহতের খবর পাওয়া যায়নি।

তবে চাঁদপুর জেলা প্রশাসন থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায় এখন পর্যন্ত ১শ’ ২২ টি বসতঘর ভেঙ্গে ল-ভন্ড হয়েছে। চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জামান জানান, শুক্রবার দিনগত ভোর সাড়ে ৩টার সময় চাঁদপুরের আঘাত হাতে ঘূর্ণিঝর ফেণী। এতে সদর উপজেলার রাজরাজেশ্ব ইউনিয়নে ৬৫ টি, মতলব উত্তরে ৫০টি, এবং হাইমচরের ১৬টির মতো বসতঘর ভেঙ্গে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

তিনি আরও জানান, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর তালিকা করা হচ্ছে। তালিকা তৈরি হলেই আমরা তাদের সরকারের সহায়তা পৌঁছে দিবো। এসব সহায়তার মধ্যে রয়েছে নগদ অর্থ এবং টিন। এছাড়াও আমরা ইতিমধ্যেই আগাম প্রস্তুতি হিসেবে চাঁদপুর সদর সহ ৪ উপজেলায় নির্বাহী কর্মকতার মাধ্যমে ১০টন করে চাল এবং ২৫ হাজার টাকা করে দিয়ে রেখেছি। যাতে করে ওইসব এলাকায় আশ্রয়ন কেন্দ্রগুলোতে আশ্রয় গ্রহণকারিদের তাৎক্ষনাত সহায়তা করা যায়।

চাঁদপু সদরের রাজরাজেশ^র ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হযরত আলী বেপারী জানান, রাত সাড়ে ৩টার পর থেকে প্রচণ্ড গতির ঝড়ো হাওয়ায় ইউনিয়নের শিলারচর, খাসকান্দি, মান্দের বাজার গ্রামে প্রায় ৭০টি পরিবারের বসতবাড়িগুলো ভেঙে পড়ে ও গাছপালা তছনছ হয়ে যায়। তবে কোথাও কোন ধরনের হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। কারণ ইউনিয়নের অধিকাংশ বাসিন্দাদেরকে শুক্রবার সন্ধ্যার পূর্বে নিরাপদ আশ্রয় নেয়া হয়েছে।

হানারচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুস ছাত্তার রাঢ়ী জানান, রাত সাড়ে ৩টায় ইউনিয়নের গোবিন্দয়া ফেরিঘাট এলাকায় গাছ ভেঙে ৩টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও ৪টি বসতঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এছাড়াও বেড়িবাঁধ সংলগ্ন মৃত ছাত্তার সরদারের স্ত্রী ভুলু বেগম, ছিন্নমূূল পরিবারের শামছুন্নাহার, কুলসুমা বেগম ও মাজুদা বেগমের বসত ঘর ভেঙে তছনছ হয়েগেছে। ক্ষতির বিষয়টি আমরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করেছি বলে জানান তিনি।

মতলব উত্তর উপজেলার এখলাছপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুছাদ্দেক হোসেন মুরাদ জানান, ইউনিয়নের বোরোচর, চরউম্মেদসহ কয়েকটি চরাঞ্চলে প্রায় ৫০টির অধিক বসতঘর ভেঙে লন্ড ভন্ড হয়েগেছে। ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলোকে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সহায়তা দেয়া হচ্ছে।

এদিকে চাঁদপুরে শুক্রবার রাত ৩টার পর থেকে প্রচন্ড গতিতে ঝড়ো হাওয়া ও বৃষ্টি শুরু হয়। বিকেল ৫টা পর্যন্ত থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। তবে বাতাসের গতি কমেনি, ফলে উত্তাল রয়েছে পদ্ম-মেঘনা নদী। শুক্রবার বিকেল থেকে চরাঞ্চলের সাড়ে ৫হাজার মানুষ নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে রাখা হয়েছে।

এছাড়াও অনাকাঙ্খিত ঘটনা এড়াতে, বৃহস্পতিবার থেকে চাঁদপুর-ঢাকা নৌ রুটের লঞ্চসহ সকল নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। শুক্রবার বিকাল ৪টা থেকে বন্ধ রয়েছে চাঁদপুর-শরীয়তপুর ফেরি চলাচলও।

প্রতিবেদক- আশিক বিন রহিম
৪ মে ২০১৯