তিন বছরের শিশু মাইশা। মা-বাবার সাথে ঢাকার জয়দেবপুরে থাকতেন। ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) সকালে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে। তার গ্রামের বাড়ি চাঁদপুর সদরের সাখুয়া ইউনিয়নে। বাবার নাম দেলোয়ার হোসেন।
এ পর্যন্ত চাঁদপুর ও ঢাকায় পাঁচজনের মতো চাঁদপুরের বাসিন্দা ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। প্রতিদিনই ডেঙ্গু রোগীরা ঢাকা থেকে এসে চাঁদপুরে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
মশা নিধনে চাঁদপুর পৌর মেয়র মো.নাছির উদ্দিন ও হাজীগঞ্জ পৌর মেয়র আ.স.ম মাহবুব আলম লিপন প্রতিনিয়িত বিভিন্ন স্থানে মশার স্প্রে দিয়ে আসছেন। এ জেলায় বেড়েই চলছে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। এ পর্যন্ত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ৮৬ জন রোগী চাঁদপুর সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে। বর্তমানে চিকিৎসাধীন ডেঙ্গু রোগী ২৪ জন। এর মধ্যে ১০ জন নারী ও ১৪ জন পুরুষ। গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত ১১ জন রোগী চাঁদপুর সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
জেলার হাজীগঞ্জ উপজেলায় প্রথমবারের মতো দু’জন জ্বরের রোগীকে ডেঙ্গু রোগী হিসেবে সনাক্ত করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফার করা হয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আলমগীর হোসেন (২৮) ও নাজির হোসেন (১৭) নামের দু’জন জ্বরের রোগী চিকিৎসার নিতে এসে পরীক্ষা-নিরিক্ষায় ডেঙ্গু রোগী হিসেবে সনাক্ত হয় করা হয়।
আলমগীর হোসেন উপজেলার সদর ইউনিয়নের কাজীরগাঁও গ্রামের জামাল হোসেনের ছেলে এবং নাজির হোসেন শাহরাস্তি উপজেলার টামটা উত্তর ইউনিয়নের গুলপুরা গ্রামের হারুন রশিদের ছেলে।
চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়,গত জুন মাসে মাত্র ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগী ছিলো ৪ জন। কিন্তু জুলাই থেকে একে একে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ভর্তি হতে শুরু করেন চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে। চলতি মাসে এ পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ডেঙ্গু আক্রান্ত ৮৬ রোগী। যাদের বেশিরভাগই ঢাকা থেকে জ্বর নিয়ে বাড়ি ফিরে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। ৬২ জন চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। বর্তমানে হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ২৪ রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছে।
আক্রান্ত কয়েকজন রোগী জানিয়েছেন, শরীর ও মাথা ব্যাথা, জ্বর এবং বমি-বমি ভাব হচ্ছে তাদের। সাথে সাথে তারা চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে এসে ডাক্তারদের পরামর্শ মতে পরীক্ষা-নিরিক্ষা করে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.আনোয়ারুল আজিম বলেন,‘ হাজীগঞ্জে দু’জন রোগীকে ডেঙ্গু রোগী হিসেবে সনাক্ত করা হয়। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসাসহ বিভিন্ন পরামর্শ দেয়া হয়েছে এবং উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়।’
চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের আরএমও ডা.সুজাউদ্দৌলা রুবেল জানান, এখন বর্ষা মৌসুম হওয়ায় দেখা গেছে যে টানা কয়েকদিন বৃষ্টির কারণে ফুলের টবসহ বিভিন্ন গর্ত, ডোবা ও নালায় পানি জমে থাকে। আর ওইসব জমে থাকা নোংরা পানি থেকে দেখা গেছে এডিস মশার উৎপত্তি ঘটে। এসব মশার কামড়ে অনেকেই ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছেন।
মনিরুজ্জামান বাবলূ
১ আগস্ট ২০১৯